Advertisement
০৩ জুন ২০২৪

কাঞ্চন আবার মঞ্চে

দারোগা এ বার চোর হলেন! এ বছরেরই মে মাসে তাঁর নাটক-জীবন ২৭ বছরে পড়ছে। তার ঠিক আগে, এই উলটপুরাণ!

মহ়়ড়ায় নীল-কাঞ্চন

মহ়়ড়ায় নীল-কাঞ্চন

দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০০:২৩
Share: Save:

দারোগা এ বার চোর হলেন! এ বছরেরই মে মাসে তাঁর নাটক-জীবন ২৭ বছরে পড়ছে। তার ঠিক আগে, এই উলটপুরাণ!

বছর কয়েক আগে ‘থানা থেকে আসছি’ নাটকে হয়েছিলেন পুলিশ ইন্সপেক্টর তিনকড়ি হালদার।

মাঝে অল্প ক’টি শো করেছেন ‘চক্র’ নাটকে। সেটি ছেড়ে দিলে বহু দিন পর কাঞ্চন মল্লিক আবার মঞ্চে। সৌজন্য নাট্যদল ‘চেতনা’র নতুন নাটক ‘মাগন রাজার পালা’ (নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী)। যার প্রথম শো ২০ মার্চ। অ্যাকাডেমি, সন্ধে ৭টায়।

’৯০ সালে প্রথম মঞ্চে উঠেছিলেন ‘অচলায়তন’ নাটকে। বড় চরিত্র পেতে লেগেছিল ৬ বছর। ‘মার্জনীয়’-তে। পাশাপাশি তাঁকে দর্শক বছর বছর দেখে চলেছেন সিরিয়াল, সিনেমা, যাত্রায়। ‘‘কিন্তু থিয়েটার ছাড়া যে আমি বাঁচব না, হাঁফিয়ে উঠছিলাম। নীল (নির্দেশক সুজন নীল মুখোপাধ্যায়) আমাকে এ নাটকে ডাকতে ধড়ে প্রাণ পেলাম।’’

পুরোদস্তুর সিরিয়ো-কমিক এই নাটকটি আদতে দুই চোরের গল্প। সাজে পোশা কে কথায় স্বভাবে এক চোর ঝকঝকে, নাম রাজা (অভিনয়ে নির্দেশক)। যে ‘কনিয়াক’ চেনে। গুরুগম্ভীর ভাবের কথা বলে। বড় পালার সংলাপ আওড়ায়। চুরি তার কাছে পাপ নয়, ‘বিজনেস’।

অন্য চোর মাগন (অভিনয়ে কাঞ্চন), ঠিক তার উল্টো মেরুর। তার গায়ে, হাবেভাবে অন্ত্যজ ছাপ্পা স্পষ্ট। নাটক গড়ায় দুই চোরের ‘পালা’ লেখার অভিযানকে সঙ্গী করে। সেই পালার শরীরে কখনও উঠে আসে তাদেরই জীবন, তো কখনও মুখোশ-আঁটা আপাত ভদ্রজন। গত বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে সুজন যখন বিজয় তেন্ডুলকরের ‘ঘাসিরাম কোতোয়াল’-কে মঞ্চে আনেন, তখন তার কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘নানা ফড়নবিশ’-এর মধ্যে অনেকেই পেয়েছিলেন ‘হীরকরাজার দেশে’র সূক্ষ্ম, জরুরি ছোঁয়া।

এবারের নাটকের মহলা দেখতে দেখতে মনে হল, অভিনয়ে একটুআধটু যেন লেগে আছে ‘মেরা নাম জোকার’-এর রাজ কপূরীয় নড়াচড়া!

প্লাস্টিকের ফুল, চড়া রংদার সেট, মুখোশ, কফিন-সদৃশ টেবিল, রংবেরঙা ঝোলানো বেলুন, দাবাবোর্ডের মতো খোপ খোপ ডিজাইনের দরজা — সবটা মিলে সেটের (হিরণ মিত্র) গায়ে যেন বাড়তি চাকচিক্য দিয়ে আঁস্তাকুড় ঢেকে রাখার প্রতীকী চেষ্টা। চৌর্যবৃত্তিকে যেমন নানা মোড়কে লুকিয়ে রাখে পাকা চোর।

কাহিনির ধাঁচা অনেকটা নবারুণ ভট্টাচার্যর মতো। ‘অ্যাবসার্ডিটি’ দিয়ে আশপাশকে, কখনও নিজেকেও ব্যঙ্গ করার ঢং যেখানে স্পষ্ট। সে কাহিনি এগোয় ঠাট্টায়, কান্নায়। সত্যিতে, মিথ্যেতে।
নাচে, গানে। নানা স্তরের চোরের রকমারি ধাপ্পাবাজি খেলাতে, আবার চোরের ভেতরে আরেক চোরের লুকিয়ে থাকার গল্পে। নাটকের গানে সুর দিয়েছেন প্রবীণ নাট্যকর্মী চেতনা-র প্রাণপুরুষ অরুণ মুখোপাধ্যায়। তার মধ্যে দুটিকে গলায় ধরবেন কাঞ্চন নিজে! মঞ্চে একক গানে কাঞ্চন এই প্রথমবার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanchan Mullick
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE