নাটকের একটি মুহূর্ত।
আমরা সবাই আসলে বাস্তুচ্যুত। সবাই অভিবাসী। কখনও নিজের শহরের থেকে তো কখনও নিজের বাড়ি থেকে। কখনও কখনও নিজের থেকেই বিচ্যুত। পরিবার থেকে রাষ্ট্র—সব ক্ষেত্রেই এই এলিয়েনেশন কাজ করে চলেছে। আর সেই বাস্তুচ্যুতির কথাই বলছে ‘হারলেসডেন হাই স্ট্রিট’ নাটক।
গত ২৭ এপ্রিলের সন্ধ্যায় ম্যক্সমুলার ভবন ভরে ছিল। বাইরে সারাদিনের গরমের পর সবে বর্ষা নেমেছে।মন বলছে, নতুন ধাঁচের কোনও নাটকই শুরু হতে চলেছে হলের ভেতরও। নতুন ধাঁচ না হলেও নতুন কিছু কথাই বলতে চান পরিচালক অভ্রজিত সেন। তাঁর আগের নাটকেও বারবার স্পেস নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেছেন তিনি। তাই কখনও কফি-হাউস তো কখনো ট্রাম—স্পেস হিসেবে কিছুই ছাড়েননি। নাটককার চার্লস ওয়ালেস ফেলো অভিষেক মজুমদারের নাটকেও ইতিমধ্যেই স্বকীয়তার ছাপ দেখা গিয়েছে।
নাটকের শুরুতে ইউরোপীয় স্ট্রিট মিউজিক বেজে ওঠে। তথাকথিত কোনও সেট না থাকায় খোলা ভাবেই কথা বলতে শুরু করেন তিন এশিও অভিবাসী। দিনযাপনের গ্লানি, সামাজিক অবদমন, ভিনদেশের পরিচয়হীনতা সবই একে একে প্রকাশ পেতে থাকে এরপর। ২০০৮ সালে ‘দ্য হিন্দু মেট্রোপ্লাস প্লে-রাইট’ পুরস্কার পায় এই নাটক।লন্ডন ইন্টারন্যশনাল স্কুল অব পারফরমিং আর্টের প্রাক্তনী অভিষেক প্রবাস জীবনে দেখা চরিত্রদের থেকেই তুলে আনেন এই বাস্তুচ্যুতদের। তবে তাঁরা কেবল পাকিস্তান বা ভারত নয়, তাঁরা হয়ে ওঠেন সমগ্র দুনিয়ার আজকের মানুষের স্বর।
পরিচালক অভ্রজিত বলেন, ‘‘সিরিয়া থেকে কানাডা-গোটা দুনিয়া জুড়েই তো আজ ঘুরে বেড়াচ্ছে ভূমিহীন মানুষ। সকলেই বাস্তুচ্যুত। আলাদা করে তাই আর নাম করিনি। বরং কথাগুলো মুক্ত ভাবে বলতে চেষ্টা করেছি। সেট বা পোশাকেও তাই আর আলাদা করে কোনও আড়ম্বর রাখিনি।’’ বাদল সরকারের ধারায় অনুপ্রাণিত অভ্রজিত চান এভাবেই কলকাতায় সময়ের কথা বলুক নাটক। সেই বিশ্বাসে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে তাঁর লড়াই জারি থাকবে বলেও জানালেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy