রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে ‘দুই বিঘা জমি’র লাইনটা বদলে দিতে পারতেন: বাবু যত বলে, ট্রোলবাহিনীতে বলে তার শতগুণ!
সংসদে অবশ্য গণতন্ত্রের নিয়ম মেনেই কোনও বাবু-টাবু নেই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মতো নেতারাও এ নিয়ে অহেতুক শব্দ ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কিন্তু বিজেপির ট্রোলদের ঠেকায় কে! তৃণমূল কংগ্রেস থেকে নবনির্বাচিত দুই সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান সোমবার শার্ট-ট্রাউজ়ার্স, জিন্স পরে সংসদভবনে গিয়েছিলেন, তার পরেই তাঁদের ঘিরে উত্তাল হল ট্রোলবাহিনী। শাড়ি পরিহিতা লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দুই নায়িকার ছবি দিয়ে সাইবার দুনিয়ায় ছড়াল, ‘এক জন বিজেপির। অন্য দু’জনের সঙ্গে তফাত সহজেই দেখা যায়।’ দুই নায়িকাই চমৎকার ভাবে মানানসই পাশ্চাত্য পোশাকে, তবু টুইটার থামে না! মিমি-নুসরত নন, ট্রোলবাহিনীর মানসিক স্বাস্থ্য আঁচ করা গেল। জিন্স-টপের পাশ্চাত্য পোশাক মানেই ‘হট’ নায়িকা। মানে, মিমি-নুসরতকে গালি দিতে গিয়ে এঁরা ভারতীয় ছবির ঐতিহ্যকেই খাটো করলেন। ষাটের দশকে ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’ ছবিতে বিকিনি পরিহিতা শর্মিলা ঠাকুর বা সত্তর দশকে পশ্চিমি পোশাকে ‘হাতি মেরে সাথী’র তনুজা থেকে ‘জুগনু’ ছবির হেমা মালিনীকেও ‘এক্স রেটেড’ ছবির নায়িকা বানিয়ে দিলেন!
আর এক নেটিজ়েন সংসদভবনের সিঁড়িতে নবনির্বাচিত তরুণ সাংসদ তেজস্বী সূর্যের মাথা ঠেকানোর ছবি পোস্ট করে জানিয়েছেন, ‘এই ভাবে সংসদে যাওয়া উচিত। মিমি চক্রবর্তী, আপনি এক জন কুলাঙ্গার।’ এমনিতে সংসদে কোনও পোশাকবিধি নেই। গণতন্ত্রের অন্যতম শর্তই সেটি। সকলে ইচ্ছামাফিক খাবে, পোশাক পরবে। অসমের কোনও তরুণী সাংসদ মেখলা পরে আসতেই পারেন। আর নরেন্দ্র মোদী গত বছর সংসদের সিঁড়িতে মাথা ঠেকিয়েছেন বলে সবাইকে যে ওই ভাবে ‘আমার মাথা নত করে দাও হে’-র কোরাস গাইতে হবে, তার মানে নেই।