Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Movie Review

মুভি রিভিউ: আধুনিক রূপকথার গল্প শোনায় ‘অ্যাভেঞ্জার্স’

মার্ভেল সিরিজ নিয়ে নতুন করে এখন কিছু বলা বাহুল্য। শিশু থেকে যুবক-যুবতী, সবারই এখন ঠোঁটস্থ এ সিরিজের সবকিছু।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৪২
Share: Save:

একদিকে বৈশাখের দাবদাহ। অন্যদিকে, ভোর থেকে রাত, সিনেমার জন্য পাগলপারা জনগণ। ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’ না দেখলে সত্যি বিশ্বাস করা যেত না এই সিন! ভোরবেলা কোনও রকমে যখন হলে এলাম, লম্বা লাইন! তখনও মাল্টিপ্লেক্স খোলেনি। শেষ কবে সিনেমার জন্য এ শহরে এমন ভিড় দেখেছি, সত্যি মনে পড়ল না।

অবশ্য এ শহরেই শুধু নয়। একই ছবি ধরা পড়েছে এ দেশের বিভিন্ন শহরে। হিন্দি, ইংরেজি, তামিল, তেলুগু— বিভিন্ন ভাষায় এ ছবি মুক্তি পাচ্ছে। অ্যান্টনি রুশো, জাক রুশো-র এ ছবি ইতিমধ্যে এক মিলিয়নের বেশি ব্যবসা করেছে। আগে থেকেই প্রচারিত হচ্ছিল এ ছবির সাসপেন্স। বলা হচ্ছিল, এটিই ‘অ্যাভেঞ্জার্স’-এর শেষ সিরিজ। যেখানে জানা যাবে থানোসকে কে মারবে। সাসপেন্সের অবশ্য সেখানেই শেষ ছিল না। এর আগেই, বিশ্ব জয় করে শান্তির বার্তা দিয়েছিল থানোস। দুনিয়ার জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই আলাদা আলাদা ইনফিনিটি স্টোন সংগ্রহ করে অ্যাভেঞ্জারদের শেষ করে থানোস।

মার্বেল সিরিজ নিয়ে নতুন করে এখন কিছু বলা বাহুল্য। শিশু থেকে যুবক-যুবতী, সবারই এখন ঠোঁটস্থ এ সিরিজের সবকিছু। প্রায় চার ঘণ্টার এ ছবি দেখতে দেখতে বহুদূর হারিয়ে যাচ্ছিলাম। সম্বিত ফিরল পাশের সিটে বসা যুগলের কথায়। বলছেন, ‘‘বড় বড় থিওরি চর্চা সিনেমায় দেখিয়ে বোর করে দিচ্ছে। এ ছবি বরং অনেক ভাল। প্রচুর সাসপেন্স, প্রচুর থ্রিল। কিন্তু কোনও থিওরির বোঝা নেই।’’

আরও পড়ুন, থানোস কি ধ্বংস করল গুগলকেও!

হাল্ক, থানোস, গমোরা-সহ অসংখ্য চরিত্র ও ঘটনার মারপ্যাঁচে খেই হারায় এ ছবি। কোনও লিনিয়ার ন্যারেটিভ না থাকাই যেন বা এ ছবির বিশেষত্ব। ঘটনার পর ঘটনা। চরিত্রের পর চরিত্র। হাজার বছর ধরে নানা গ্রহে নানা প্রজাতির জীবের অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা। যেন-বা ছেলেবেলার শীর্ষেন্দুর আখ্যান। যেন-বা বড়বেলার মহাভারত! যা আমাদেরই অন্দরে লুকিয়ে থাকা আমি-কে নানা ভাবে দেখাতে থাকে। দেখায়, এই অসম্ভব ঘাঁটা ডিপ্রেশনের সময়, প্রযুক্তি ও মানুষের সম্পর্কের দ্বান্দ্বিকতা। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়া সমেত নানাবিধ সাম্প্রতিক ঘটনা এছবিতে চলে আসে।আসে রোমান্স ছবির শুরু ও শেষে। কিন্তু কোথাও কোনও প্রোপাগান্ডা নেই। বরং আছে রূপকথার আদল। যা স্বাভাবিক ছন্দে ধরে রাখে ছবিকে। কোথাও এতটুকু বাহুল্য মনে হয় না। বোর লাগে না। মনে হয়, সাম্প্রতিক এক রূপকথাই দেখাচ্ছে এই মার্ভেল সিরিজ!


হাল্ক, থানোস, গমোরা-সহ অসংখ্য চরিত্র ও ঘটনার মারপ্যাঁচে খেই হারায় এ ছবি।

মোট আড়াই হাজার স্ক্রিনে মুক্তি পাচ্ছে এ ছবি। বুধবার পর্যন্ত ২৫০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। বিক্রির হিসেবে এটি নয়া রেকর্ড যে তাতে সন্দেহ নেই। হল থেকে বেরনোর মুখে দেখা হয়ে গেল এক শিশুর সঙ্গে। বাবা-মায়ের সঙ্গে সে-ও এসেছে এই সাত সকালে মার্ভেলের বন্ধুদের দেখতে। তার চোখমুখে তখনও চার ঘণ্টার এই ঘোরের ছাপ। হাতে স্টিকার। ব্যাগে খেলনা। সবই মার্ভেল হিরোরা। মনে পড়ে যাচ্ছিল, আমাদের ছেলেবেলা। তখনও থ্রি-ডি ছিল না ঠিকই, তবু তো আমাদের চাদের পাহাড়ে হারাতে চশমা লাগেনি। তবু তো, লাগেনি মাল্টিপ্লেক্স!

আরও পড়ুন, টাকা দেননি, বলি নায়িকার বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিচারিকার

আমাদের মোগলি, স্কুবি ডু, শঙ্কররা আজ কোথায়? এত জটিল ও মাল্টিলেয়ারড আখ্যান আর ক্যামেরার নাকানিচোবানি তো ছিল না তখন, তবু তো তা আমাদের রূপকথা। আমাদের স্বপ্ন। ওই ছোট্ট শিশুর মুখের বিস্ময়ে পড়ে নিলাম, সেই স্বপ্নের উত্তরাধিকার!

(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE