অতিমারিধ্বস্ত জীবনে তৃতীয় তরঙ্গের মাঝে দিশাহারা গোটা বিশ্ব। একের পর এক প্রতিষেধক ও ড্রাগের ট্রায়াল। তার পরেও করোনার দাপট অব্যাহত। এমন এক বিপর্যস্ত সময়ে চিকিৎসা জগতের অন্ধকার গলিঘুঁজিকে ফোকাসে এনেছে ‘হিউম্যান’ সিরিজ়টি। একটি নিষিদ্ধ ড্রাগের ট্রায়ালকে কেন্দ্রে রেখে সিরিজ়ের গল্প সাজিয়েছেন বিপুল অম্রুতলাল শাহ ও মোজ়েজ় সিংহ। এর পাশাপাশি চরিত্রদের আবেগ ও ব্যক্তিগত জীবনও বুনতে-বুনতে এগিয়েছেন পরিচালকদ্বয়।
ভোপালের এক বিখ্যাত ফার্মা ও বেসরকারি হাসপাতাল পার্টনারশিপে একটি ড্রাগের ট্রায়াল শুরু করে, যা বিদেশে নিষিদ্ধ। এই বেসরকারি হাসপাতালের মাথা গৌরী নাথ (শেফালি শাহ)। গৌরীর অঙ্গুলিহেলনে সিদ্ধান্ত পাল্টে যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীরও। ড্রাগের ট্রায়ালে মানুষ মারা যেতে শুরু করলেও বন্ধ হয় না সেই অভিযান। বরং সাক্ষীদেরও পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়ে ড্রাগটি বাজারে আনার রাস্তা মসৃণ করতে থাকে গৌরী। তার হাসপাতালে যোগদান করে ডা. সায়রা সবরওয়াল (কীর্তি কুলহারি)। সে আবার গৌরীর গুণমুগ্ধ। অন্য দিকে ড্রাগ ট্রায়ালের শিকার হয় মঙ্গুর (বিশাল জেঠওয়া) মতো গরিব, অশিক্ষিত কিছু মানুষ। টাকার লোভে সে নিজের মা-বাবাকেও বসিয়ে দেয় সেই প্রাণঘাতী ড্রাগের ট্রায়ালে।
চিকিৎসা জগতের চারপাশে এক অন্ধকার চক্রব্যূহ তৈরি করেছেন বিপুল ও মোজ়েজ়, যেখানে শেষমেশ ফেঁসে যায় সেই চক্রব্যূহের নির্মাতারাই। হিন্দি ওয়েবের জগতে এহেন মেডিক্যাল থ্রিলার কনসেপ্টের দিক থেকে নতুনত্বের দাবি রাখে বটে! তবে ড্রাগ ট্রায়ালের মতো বিষয় নিয়ে তৈরি এই সিরিজ়ে আর একটু রিসার্চওয়ার্ক দরকার ছিল। এখন যেখানে এই ট্রায়াল মনিটর করার জন্য ড্রাগ অ্যান্ড সেফটি মনিটরিং বোর্ড রয়েছে, ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া রয়েছেন, সেখানে মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটার পরেও ড্রাগ ট্রায়াল জারি রাখা কি এতই সহজ? চরিত্রদেরও গড়া হয়েছে আলো-আঁধারিতে। প্রত্যেকটি চরিত্রের একাধিক পরত রয়েছে। তাদের ব্যাকস্টোরি কিছু ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ করেছে মূল সিরিজ়কে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা আবার নিরর্থক দৈর্ঘ্যও বাড়িয়েছে।