Advertisement
০২ মে ২০২৪

এ শুধু ক্যুইজের রাত

ক্যুইজটা তো বাহানা। আসল উপলক্ষ সদা ব্যস্ত এক যৌথ পরিবারের সদস্যদের জমায়েত। পোশাকি নাম ‘ক্যামেলিয়া প্রেজেন্টস্ আনন্দplus বায়োস্কোপে বাজিমাত’। বৃহস্পতিবার, ‘রয়াল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব’য়ে।সে কী এই মরসুমের তখনও পর্যন্ত সব থেকে কনকনে শীতের রাত। যে-রাতে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৩.২ ডিগ্রিতে। তাতে কী! ঋতুপর্ণ ঘোষ ক্যুইজ শুরুর আগেই বলে দিয়েছিলেন, “এই শোন, বাবুদার টেবিলে যদি সত্যজিৎ রায় নিয়ে কোনও প্রশ্ন যায় তা হলে কিন্তু আমি খেলা ছেড়ে উঠে যাব। আর বুম্বাকে স্বপন সাহা নিয়ে প্রশ্ন করলেও স্ট্রেট ওয়াক আউট।” সেই শুনে ঋতুপর্ণের মনোবল আরও খানিকটা নড়বড়ে করে দিতে প্রসেনজিৎ সঞ্চালককে বললেন, “সে কী রে! আমার তো খান ২৫ স্বপনদার সঙ্গে, খান ১২ হরদার সঙ্গে, ঋতুর সঙ্গে খান দশেক, প্রভাতদার সঙ্গেও তাই। তা হলে কী নিয়ে প্রশ্ন করবি আমায়?”

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৪:২২
Share: Save:

সে কী

এই মরসুমের তখনও পর্যন্ত সব থেকে কনকনে শীতের রাত। যে-রাতে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৩.২ ডিগ্রিতে। তাতে কী! ঋতুপর্ণ ঘোষ ক্যুইজ শুরুর আগেই বলে দিয়েছিলেন, “এই শোন, বাবুদার টেবিলে যদি সত্যজিৎ রায় নিয়ে কোনও প্রশ্ন যায় তা হলে কিন্তু আমি খেলা ছেড়ে উঠে যাব। আর বুম্বাকে স্বপন সাহা নিয়ে প্রশ্ন করলেও স্ট্রেট ওয়াক আউট।” সেই শুনে ঋতুপর্ণের মনোবল আরও খানিকটা নড়বড়ে করে দিতে প্রসেনজিৎ সঞ্চালককে বললেন, “সে কী রে! আমার তো খান ২৫ স্বপনদার সঙ্গে, খান ১২ হরদার সঙ্গে, ঋতুর সঙ্গে খান দশেক, প্রভাতদার সঙ্গেও তাই। তা হলে কী নিয়ে প্রশ্ন করবি আমায়?”

‘দাদা’র প্রবেশ

বাড়ির অনুষ্ঠানে হ্যান্ডসাম কোনও পুরুষ এলে মেয়েদের মধ্যে যেমন গুঞ্জন ওঠে, এখানেও তার ব্যাতিক্রম হল না। মঞ্চ থেকে দাদাকে যখন ক্যুইজ মাস্টার-এর ভূমিকা পালনের অনুরোধ করলেন সঞ্চালক মীর আর প্রশ্নের কার্ড হাতে নিয়ে মাইকের দিকে অন্য হাত বাড়ালেন সৌরভ, চার দিকে শুধুই চাপা দীর্ঘশ্বাস!

প্রস্তুতি আর টেনশন

অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী অমায়িক হেসে জানিয়ে দিলেন রাত জেগে উইকিপিডিয়া প্রায় মুখস্থ করে ফেলেছেন। কিন্তু “এখানে এসে কী রকম নার্ভাস লাগছে। হারলে হারব। কী আর করা যাবে! ভাল খাবার আছে তো শেষে?” ভয় কাটাতে রসিকতা তাঁর। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় গল্ফ ক্লাবের ছাদে ঘুরে ঘুরে নোটস মুখস্থ করে গেলেন বাধ্য ছাত্রীর মতো। আর অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বললেন, “কিছু না পারলে কী হবে? বোর্ড এগজামের মতো টেনশন হচ্ছে তো!”

না-বলা অনেক কিছু

ক্যুইজ মাস্টার মীর তো বললেন, অনুষ্ঠান সন্ধ্যা বেলায় হলেও, যুদ্ধং দেহি ভাবটা নাকি সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। মীরকে নাকি এক বিখ্যাত পরিচালক, এক বিখ্যাত নায়ক এবং এক বিখ্যাত নায়িকা যাঁরা তিন জনেই প্রতিযোগী ফোন করেছিলেন প্রশ্নপত্র ফাঁসের অনুরোধ নিয়ে। সঙ্গে অবশ্যই ছিল ছবিতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার, হিরো করে দেওয়ার এবং আরও না-বলা অনেক কিছুর প্রস্তাব! তবে সবই নির্ভেজাল ইয়ার্কি। সত্যি ঘটেনি।


চ্যাম্পিয়ন

সৃজিত-স্বস্তিকা। অঞ্জন-পাওলি এবং পরম-কোয়েলের দুটি টিম রানার্স আপ। ‘মহাগুরু’ অবশ্য এই রেজাল্টকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি। “পার্শিয়ালিটি। ‘কহানি’, ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে প্রশ্ন করছিস। এ বার নিশ্চয় জিজ্ঞেস করবি, কোয়েলের বিয়ের তারিখ কবে। এ রকম করলে আমি খেলব না,” বলতে বলতে মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মিঠুন চক্রবর্তী। অন্য টেবিলে পরম, প্রসেনজিৎরা তখন উদ্বিগ্ন, “মিঠুনদা, ক্যামেরা চলছে।” দু’ মিনিট বাদে বোঝা গেল, গোটাটাই অভিনয়। সিগারেট-ব্রেক নেওয়ার জন্য কপট রাগ দেখাচ্ছিলেন ‘ডিস্কো ড্যান্সার।’

শুধু ক্যুইজ নয়

ক্যুইজমাস্টারের ভূমিকায় সে দিন ‘কহানি’খ্যাত সুজয় ঘোষ। মঞ্চে গন্ডগোল সামাল দিতে ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় জিৎ। সুজয় শুরুতেই আবেদন রাখলেন, “ঝামেলা হলে বাঁচিও, জিৎ।” উত্তরে জিৎ: “কেউ কিচ্ছু করবে না। সবাই চায় তোমার সঙ্গে র্যাপো রাখতে, বলিউডে ছবি করতে।” সঙ্গে সঙ্গে দর্শকমহলে হাসির হররা।

মস্তি

মাঠে বসে দর্শকাসন থেকে পাস দিচ্ছেন অর্জুন চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়রা। মঞ্চ থেকে ক্যুইজাররা কেউ কেউ চেঁচাচ্ছেন, ‘এই কৌশিক, এখানে এসে বোস তো।’ দর্শকাসনে বসা তারকারাও যেন এখানে প্রতিযোগীর মেজাজে। আর প্রতিযোগীরা? সৃজিত পাঞ্জাবির ওপর সাদা শাল জড়িয়ে এসেছেন দেখে ক্যুইজমাস্টার সুজয়: ‘সৃজিত, তুই কি একটা কবিতা বলবি?’ সৃজিত পাল্টা দিলেন আর একটু পরে। মুম্বইয়ের বাঙালি সুজয় দুই বার ‘ওতপ্রোত’ শব্দটা ‘ওত্প্রোত্’ বলে উচ্চারণ করেছিলেন। সৃজিত এ বার খোঁচালেন, ‘‘যদিও কবিতা বাঙালির জীবনে ওত্প্রোত্ জড়িত, তবু আমি এখন কবিতা বলব না।”

ফচকেমি, হুমকি আর...

আবির চট্টোপাধ্যায় দর্শকাসনে বসে ক্রমাগত পেছনে লেগে গেলেন মঞ্চে বসা সমবয়সি প্রতিযোগীদের। তাঁকে সঙ্গ দিতে অসাধারণ তৎপরতায় এগিয়ে এলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রতরা। আর মঞ্চের ওপর থেকে তাঁদের উদ্দেশে দাঁত কিড়মিড় করলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। প্রশ্রয়ের হাসি ছড়ালেন প্রসেনজিৎ। এক একটা টেবিলে গোল করে বসেছেন আবির, পরমব্রত, শাশ্বত, তনুশ্রী, পার্নো, সোহিনীরা। স্টেজের ওপরে যাঁকে তাঁকে লক্ষ করে মন্তব্যের বৃষ্টি ঝড়ছে। চোট্টামির আপ্রাণ চেষ্টাও চলছে প্রিয় প্রতিযোগীকে জিতিয়ে দিতে। সঙ্গে প্রচ্ছন্ন হুমকিও “তোকে এটা বলে দিলাম তার মানে তোর গিফটটা আমার কিন্তু।” আবহ এতটাই পারিবারিক যে প্রাজ্ঞতার হিসেব মুছে ঠিক উত্তর নিয়ে তরজায় নামছেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী আর আবির চট্টোপাধ্যায়। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ভুরু কুঁচকে বলছেন, “আরে এই উত্তরটাও পারছে না?” স্টেজের ওপরের প্রতিযোগীরা না-পারলে নীচে চলছে ঠিক উত্তর বলে কো-স্পনসর আরিশ-এর বিশেষ গিফট হ্যাম্পার পাওয়ার কাড়াকাড়ি।

বৌ কোথায়?

অন্য হাই প্রোফাইল অতিথি বনি কপূর তো সোজা এলেন দুবাই থেকে শুধুমাত্র এই অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে। বাংলা না বুঝলেও দেখলেন গোটা অনুষ্ঠান। তাঁকে দেখে বাড়ির ছেলে ছোকরাদের তখন অবশ্য একটাই জিজ্ঞাস্য “বৌকে নিয়ে এল না কেন রে?” পেট পুজো এ বার গা এলানোর পালা। চিংড়ি থেকে মটন কী ছিল না সেখানে। ইলিশ থেকে ভাপা সন্দেশও। এখানেও বড়দের জোর করে খেতে পাঠালেন ছোটরা। ছোটদের বেশি খেতে বারণ করলেন বড়রা। মেয়েরা একে অপরের পোশাক নিয়ে গল্প করলেন। অর্পিতা এগিয়ে এসে ঋতুপর্ণাকে অভিনন্দন জানালেন। পরমব্রত অনুযোগ করলেন, “আগের বারের প্রশ্ন কিন্তু বেশি কঠিন ছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE