Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Akshaya Tritiya 2020

থমকে অক্ষয় তৃতীয়ার বাজার-হাট

পরিচিত ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করাতেন অনেক ব্যবসায়ী। জিনিসপত্রের দরদামে ছাড়ও থাকত। এ বার সেই ছবি উধাও।

দোকান বন্ধ। পুজোপাঠও কম। শুকনো মুখে পুরোহিত। বাঁকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

দোকান বন্ধ। পুজোপাঠও কম। শুকনো মুখে পুরোহিত। বাঁকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩২
Share: Save:

‘লকডাউন’-এ দোকান খোলার নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল হয়েছে। তারপরেও অবশ্য অক্ষয় তৃতীয়ায় দুই জেলার ব্যবসায়ীদের দোকান খোলার তেমন ছবি দেখা গেল না। কয়েকজন অল্পক্ষণের জন্য দোকান খুলে পুজোপাঠ সেরে ফের ঝাঁপ বন্ধ করে দিলেন। কেউ কেউ মন্দিরে গিয়ে পুজো দিলেন।

পয়লা বৈশাখের মতোই অক্ষয় তৃতীয়াতেও বহু ব্যবসায়ী দোকানে পুজোপাঠ করান। বিকেল গড়ালেই পথে পথে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ত। পরিচিত ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করাতেন অনেক ব্যবসায়ী। জিনিসপত্রের দরদামে ছাড়ও থাকত। এ বার সেই ছবি উধাও।

এ দিন সকালে বাঁকুড়ার চকবাজারে হাতে গোনা কিছু দোকানের দরজা খুলে নিয়ম রক্ষার পুজো করতে দেখা যায়। কেউ কেউ দোকান না খুলে মহামায়ার মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। বাঁকুড়া শহরের জলটাঙ্কিগড়ার কাগজ ব্যবসায়ী সুপ্রিয় খাঁ বলেন, ‘‘অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি ব্যবসায়ীদের কাছে খুবই পবিত্র দিন। কিন্তু ‘লকডাউন’-এর জন্য ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে নিয়মরক্ষার পুজো করলাম।”

বিষ্ণুপুরের চকবাজারের পোশাক ব্যবসায়ী পরেশ দত্ত বলেন, ‘‘গোটা চৈত্র মাস দোকান খুলতে পারলাম না। ভাবতে পারিনি বছরের গোড়াতেও এমন দিন যাবে। এ দিন অল্পক্ষণের জন্য দোকান খুলে পুজো করে বন্ধ করে দিয়েছি।’’

এ দিন খাতড়া শহরেও দোকানে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো হতে দেখা যায়নি। তার উপরে সকাল থেকেই খাতড়ায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। খাতড়ার কাপড় ব্যবসায়ী সন্টু দাস বলেন, “অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে প্রতিবারই বড় করে পুজো করি দোকানে। তবে এ বার কিছুই করানো গেল না।’’

বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, “করোনা-পরিস্থিতিতে ব্যবসার মন্দা হওয়ায় কারও মন ভাল নেই। তা ছাড়া ‘লকডাউন’-এর নিয়ম কিছুটা শিথিল হলেও রাজ্য সরকার এখনও দোকান খোলার বিষয়ে ছাড়পত্র দেয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা এ দিনও দোকান খুলতে পারেননি।”

রাস্তায় অহেতুক ভিড় কমাতে পুলিশ ও প্রশাসনের কড়াকড়িতে এমনিতেই পুরুলিয়া জেলার ব্যস্ত এলাকাগুলি ইদানীং কার্যত সুনসান হয়ে গিয়েছে। অক্ষয় তৃতীয়াতেও তারই ছাপ পড়েছে। ‘লকডাউন’ চলায় দোকানের বদলে বাড়িতেই পুজো সারেন অনেকে।

জেলার ব্যবসায়ী মহলের মতে, পুরুলিয়ায় অবশ্য অক্ষয় তৃতীয়ায় কেনাকেটার প্রচলন খুব একটা বেশি নয়। মূলত পয়লা বৈশাখ ও ধনতেরাসের দিনেই কেনাকেটা করেন লোকজন। তবে গত কয়েক বছরে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে অনেকেই গয়না কিনছিলেন। কেউ কেউ বাসনপত্র। এ বার অবশ্য পুরুলিয়া শহর থেকে রঘুনাথপুর, আদ্রা, মানবাজারের মতো শহরাঞ্চলের বাজার বন্ধই ছিল।

রঘুনাথপুরের অলঙ্কার ব্যবসায়ী গৌতম দত্ত, শঙ্কর দত্তেরা জানাচ্ছেন, ‘লকডাউন’-এ তাঁরা দোকান খোলেননি। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এক মাসের উপরে দোকান বন্ধ। সোনা-রূপা এখন কী দাম, সেটাই জানি না।’’ পুরুলিয়া শহরে তিনটি বড় গয়নার বিপণী রয়েছে। তাদের একটির ম্যানেজার বিজয় কুমার জানাচ্ছেন, বাড়িতেই পুজো করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় অনলাইনে কেনাকাটা করার সুযোগ নেই। তাই এখানে বিক্রিবাটাও নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Akshaya Tritiya 2020 Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE