Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Side-effects of E- cigarettes

সিগারেট ছেড়ে ই-সিগারেট খাওয়া শুরু করলে কি ক্ষতির আশঙ্কা কম? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

সিগারেটের বিপদ এড়িয়ে ধূম সেবনের সুখের আশায় ই-সিগারেট ধরেছেন অনেকেই। তাঁদের বিশ্বাস, ই-সিগারেট আখেরে ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে। এই অভ্যাস কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?

Picture of S E- cigarettes and cigarettes

চিকিৎসকদের বেশি চিন্তার কারণ ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিনের পরিমাণ। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩২
Share: Save:

সিগারেট, ক্ষতিকারক তামাকের নেশা কমিয়ে দেবে এই আশা করে ই-সিগারেট বাজারে এনেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ফল হয়েছে হিতে বিপরীত। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতে নিষিদ্ধ হলেও ই-সিগারেট ভারতের তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যেই ই-সিগারেট ব্যবহার করার প্রবণতা বেশি।

দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেল্‌থের গবেষকরা এই সমীক্ষা পরিচালনা করেন। শিক্ষিত তরুণ প্রাপ্তবয়স্করা ই-সিগারেটের বিষয় কী মনোভাব পোষণ করেন এবং ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের যে সব নীতি চাউর হচ্ছে সেগুলি তাঁরা সমর্থন করেন কি না, সেই সব বিষয় ধারণা পেতেই এই গবেষণা করা হয়েছে।

সিগারেটের বিপদ এড়িয়ে ধূম সেবনের সুখের আশায় ই-সিগারেট ধরেছেন অনেকেই। তাঁদের বিশ্বাস, ই-সিগারেট আখেরে ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, ই-সিগারেট ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে, এর কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে এর প্রভাব সাধারণ সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন তাঁরা। ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণে থাকে প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, কৃত্রিম গন্ধ এবং নিকোটিন। গরম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সব রাসায়নিক থেকে সাধারণ সিগারেটের ধোঁয়ার সমপরিমাণ ফরমালডিহাইড উৎপন্ন হয়। সেই ফরমালডিহাইড ক্ষতিকর তো বটেই। তা ছাড়াও ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা থাকে, যা ভীষণই ক্ষতিকারক। এর ফলস্বরূপ গলা-মুখ জ্বালা, বমি-বমি ভাব, খুসখুসে কাশি দেখা দিতে পারে।

symbolic picture of smoking

জাপানে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

চিকিৎসকদের আরও বেশি চিন্তার কারণ ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিনের পরিমাণ। ই-সিগারেটের প্রধান উপকরণ নিকোটিন। তা থেকে দ্রুত আসক্তি তৈরি হয়। সিগারেট ছাড়তে চেয়ে যাঁরা এটি ব্যবহার করেন, এর উপরে তাঁদের নির্ভরশীল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। অর্থাৎ সিগারেটের নিকোটিন এড়াতে গিয়ে ফের নিকোটিনেরই পাল্লায় পড়ে যাওয়া। এ থেকে দেখা দিতে পারে ফুসফুসের নানা অসুখ।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০১৯ সালে ই-সিগারেট বিক্রি, সংগ্রহ এবং উৎপাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা চালু করেছিলেন। সরকার তখন জানিয়েছিল, ই-সিগারেট তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভারতীয় বাজারে ই-সিগারেটের ভালই জোগান রয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৮৪০ জনের মধ্যে ২৩ শতাংশ জানিয়েছেন যে তাঁরা ই-সিগারেট ব্যবহার করেন। ৭০ শতাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা তামাক সেবন করেন। আর ৮ শতাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা তামাক সেবনের পাশাপাশি ই-সিগারেটও ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা ই-সিগারেটের ক্ষতির দিকটা জেনেবুঝেও সেই নেশায় আসক্ত। কেন ই-সিগারেট ব্যবহার করেন, তা জানতে চাওয়ায় অধিকাংশের উত্তর, ‘‘বন্ধুকে ব্যবহার করতে দেখেই ই-সিগারেট ব্যবহার শুরু করেছি।’’

জাপানে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর। তাই সিগারেটের সঙ্গে সঙ্গে এর বিরুদ্ধেও সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়োজন আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

smoking Quit Smoking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE