Advertisement
০৬ মে ২০২৪
World Cup Final

ফাইনাল সামলাবেন যে রেফারি, তাঁর মাঠে নামা বন্ধ করেছিল ‘ট্যাকিকার্ডিয়া’, কী সেই রোগ?

বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যাচ পরিচালনা করবেন সিজিমন মার্সিনিয়াক। গত বছর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। সিজিমন জানিয়েছেন, ট্যাকিকার্ডিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

‘ট্যাকিকার্ডিয়া’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সিজিমন মার্সিনিয়াকক।

‘ট্যাকিকার্ডিয়া’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সিজিমন মার্সিনিয়াকক। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৪১
Share: Save:

হার্টের অসুখে মাঠে নামাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এক সময়ে। ভেবেছিলেন আর কোনও দিন বাঁশি নিয়ে ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন না। কিন্তু ফুটবলের প্রতি ভালবাসাই যেন মাঠে ফিরিয়ে আনে ফিফা রেফারি সিজিমন মার্সিনিয়াকককে। পোল্যান্ডের এই রেফারির হাতেই থাকবে রবিবারের ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ সামলানোর দায়িত্ব। রবার্ট লেওয়ানডস্কি মাঠে না থাকলেও তাঁর দেশ পোল্যান্ডের প্রথম রেফারি হিসাবে বিশ্বকাপ ফাইনালের দায়িত্ব সামলাবেন ৪১ বছর বয়সি সিজিমন মার্সিনিয়াক।

২০১১ সালে ফিফা রেফারি হয়েছিলেন সিজিমন। গত বছর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের একাধিক ম্যাচ পরিচালনা করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হৃদ্‌যন্ত্রে গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে সিজিমন জানিয়েছেন, ‘ট্যাকিকার্ডিয়া’ রোগে আক্রান্ত হন তিনি। এতই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, মাঠে নামা বন্ধ হয়ে যায়। ভেবেছিলেন আর কোনও দিন ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন না। পরে চিকিৎসা ও নিয়মানুবর্তিতার জোরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

হৃদ্‌স্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়া বড় বিপদের সঙ্কেত।

হৃদ্‌স্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়া বড় বিপদের সঙ্কেত। প্রতীকী ছবি

কিন্তু এই ট্যাকিকার্ডিয়া রোগটি ঠিক কী?

এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদ্‌স্প‌ন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে কম-বেশি ৭২। ব্যক্তি বিশেষে হৃদ্‌স্প‌ন্দনের হার প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ৬০ বার থেকে সর্বোচ্চ ১০০ বারও হতে পারে। তবে যাঁরা পেশাগত ভাবে খেলাধুলো কিংবা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের হৃদ্‌স্পন্দনের হার অপেক্ষাকৃত কম হয়। স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হওয়া মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। হৃদ্‌স্প‌ন্দনের হারের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা হ্রাস একাধিক অসুস্থতার লক্ষণ। হৃদ্‌স্পন্দনের হার মিনিটে ১০০ বারের থেকে বেড়ে গেলে তাকে বলে ট্যাকিকার্ডিয়া।

হৃদ্‌স্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়া বড় বিপদের সঙ্কেত।

১। সাধারণত যে কোনও ধরনের জ্বরে হৃদ্‌স্পন্দনের হার বৃদ্ধি পায়।

২। সংবহনতন্ত্রের সমস্যা থাকলে বেড়ে যেতে পারে হৃদ্‌স্প‌ন্দনের হার।

৩। রক্তাল্পতা ও হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে দেহে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর তার ফলে বেশি কাজ করতে হয় হৃদ্‌যন্ত্রকে যা হৃদ্‌স্পন্দনের হার বাড়িয়ে দিতে পারে।

৪। কোভিডের পরেও বেশ কিছু রোগীর মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

৫। মানসিক উদ্বেগ ও অস্থিরতাও এই সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

আর এ সব কিছুর বাইরে যে কারণে ট্যাকিকার্ডিয়া দেখা দিতে পারে, তা হল হার্ট ফেল। হৃদ্‌স্পন্দনের অস্বাভাবিক হার হৃদ্‌রোগের প্রাথমিক লক্ষণ।

বর্তমানে হৃদ্‌স্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না।

বর্তমানে হৃদ্‌স্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। প্রতীকী ছবি

এই রোগে ক্লান্তি, ঝিমুনি, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই একে উপেক্ষা করা একেবারেই অনুচিত। বর্তমানে হৃদ্‌স্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে দিয়েই এর পরিমাপ সম্ভব। কাজেই যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

World Cup Final FIFA World Cup 2022 referee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE