প্রতিদিন ঝালমশলা খাওয়ার অভ্যাস বিপদ বাড়াচ্ছে। —ফাইল চিত্র।
কাজের চাপে নাওয়াখাওয়ার সময় নেই?
সকালে কোনওরকমে নাকে মুখে কিছু গুঁজেই দৌড় অফিসের দিকে। অফিসে ফুরসত নেই ভাত–রুটি থালা সাজিয়ে খাওয়ার। তার চেয়ে মুখরোচক খাবারেই পেট ভরছে। সন্ধে হলেই দৃষ্টি খিদে। তখন অফিস থেকে বেরিয়ে হয় ফুচকা-রোল-কাটলেট, না হলে অর্ডার দিয়ে মোগলাই, মোমো, বার্গার। পরক্ষণেই নরম পানীয়ে গলা ভিজিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর।
রাতের খাবারের ইচ্ছেটুকুই মাটি হচ্ছে রোজ। বাড়ি ফিরেই চোঁয়া ঢেঁকুরে হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে। বদহজম, অম্বল, গলা জ্বালা প্রায় রোজের ব্যাপার। এর থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে হয় রোজ সকালে খালি পেটে গ্যাসের ওষুধ, না হলে অম্বল কমাতে মুঠো-মুঠো অ্যান্টাসিডে সুস্থ শরীর আরও ব্যতিব্যস্ত হচ্ছে। স্বাভাবিক হজম করার ক্ষমতাটাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, দিনের পর দিন এমন অভ্যাস কিন্তু বড় বিপদের কারণ হতে পারে। শুরুতে বোঝা যায় না, কিন্তু তলে-তলে তা পাকস্থলীর ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
প্রতিদিন তেলঝাল মশলাদার খাবার খেলে পাকস্থলীতেও মেদ জমতে শুরু করে। তার থেকে আলসারের জন্ম হয়। চুপিসাড়ে আলসার বাসা বাঁধে পাকস্থলীতে। তার পর একদিন ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। যদিও ৪০ পেরোলে এই রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, তবে বাড়াবাড়ি রকমের অনিয়ম করলে এই রোগ বয়সের গণ্ডি মানে না।
পাকস্থলীতে ক্যানসার হচ্ছে কিনা তা বোঝার অনেক উপায় আছে। যেমন ধরুন,
১) আপনার আগে হজমের সমস্যা ছিল না, কিন্তু হঠাৎই নতুন করে হজমের গন্ডগোল শুরু হল, তাহলে কিন্তু বেশ খানিকটা ঝুঁকি থেকেই যায়।
২) যদি দেখেন, আপনাকে কথায়-কথায় হজমের ওষুধ খেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে, তাহলে চিন্তার কারণ রয়েছে।
৩) হঠাৎ করে খিদে কমে গেলেও সতর্ক হতে হবে।
৪) রক্তাল্পতাও হতে পারে পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ
রোজ রোজ রোল-চাউমিন খেলেই মুশকিল। — ফাইল চিত্র।
৫) যদি দেখা যায় এত ভাজাভুজি খেয়েও আপনার ওজন কমছে, তাহলে অবশ্যই সাবধান হতে হবে।
দ্রুত পরীক্ষা করান
এন্ডোস্কোপি ও গ্যাস্ট্রোস্কোপি করে পাকস্থলীর অবস্থা বোঝা যায় সহজেই। তাই বিন্দুমাত্র সংশয় থাকলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষাগুলো করাতে হবে। সঙ্গে রক্তপরীক্ষা ও সিটি স্ক্যানও আবশ্যিক।
চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাথমিক স্তরে এই ক্যানসার ধরা পড়লে অস্ত্রোপচারই আরোগ্যের অব্যর্থ উপায়। তবে ক্যানসার বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেলে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি করার প্রয়োজন হতে পারে। তাই কোনও ভাবেই অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে নিজের জীবনকে এত বড় ঝুঁকির দিকে ঠেলবেন না। বরং পুষ্টিকর ও বাড়ির তৈরি খাবারই খান। খুচরো খিদে মেটাতে সন্ধেবেলা খেতে পারেন মুড়ি-বাদাম, চিঁড়ে ভাজা। সঙ্গে রাখুন ড্রাই ফ্রুটস। সামান্য নুন-মরিচ-কাঁচালঙ্কা-ধনেপাতা-লেবুর রস দিয়ে যদি ভুট্টা বা ছোলা সেদ্ধ মেখে নিতে পারে, তা হলেও দারুণ স্বাদবদল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy