উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বিনয়বাবু। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর শরীরের ওজন ২৬০ কিলোগ্রাম! দশাসই চেহারা। হাসপাতালে শয্যা দেওয়া হলেও শরীরের ভারে লোহার শয্যার পায়া দুমড়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে মেঝেতে তাঁকে শয্যা দেওয়া হয়েছে।
ডুয়ার্সের ধূপগুড়ির পলাশবাড়ির বাসিন্দা ৪৩ বছরের ওই যুবক বিনয় দত্ত চৌধুরী। কুসিং সিনড্রমে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য তাঁকে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মেডিসিন বিভাগে ভর্তি ওই যুবকের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু শরীরের ওই ওজনের জন্য তাঁর এমআরআই, সিটিস্ক্যান করাও শক্ত হয়ে উঠছে। সে কারণে তাঁর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরাও। ওই যুবকের চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড-ও তৈরি হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, ‘‘কুসিং সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়ার জন্যই ওই যুবকের চেহারা এমন হয়েছে। তবে কুসিং-রোগেও শরীরের ওজন এতটা বৃদ্ধি খুব কমই দেখা যায়। তার চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।’’
চিকিৎসকরাই জানান, শরীরের অত্যধিক ওজনের জন্য বিনয়ের নানা সমস্যা রয়েছে। শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। সে কারণে ঠিক মতো ঘুমতে পারেন না। কিছু ক্ষণ ঘুমানোর পর শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যায়। নিজে পাশ ফিরে শুতে পারেন না। কয়েকজন মিলে পাশ ফিরিয়ে দিলে তবেই কাত হয়ে শুতে পারেন। তাকে নড়াতে গেলে বেশ কয়েকজন লোক লাগে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, ৮০ কেজি ওজন পর্যন্ত কোনও রোগীকে ট্রলিতে উঠিয়ে নেওয়া যায় বা অপারেশন টেবলে শোয়ানো যায়। তার বেশি ওজন হলে দু’টি অপারেশন টেবল লাগে। কিন্তু ২৬০ কিলোগ্রাম ওজন মাত্রাতিরিক্ত। যে কারণে হাসপাতালের শয্যাতে তাঁকে রাখা সম্ভব হয়নি।
বিনয়বাবুর বাবা-মা বেঁচে নেই। দিদিই তাঁর দেখাশোনা করেন। তাঁর খাওয়াদাওয়ার খরচ থেকে সমস্ত কিছু দিদিই দেখেন। তাঁর আর্থিক পরিস্থিতি ভাল নয়। তা ছাড়া, আর পাঁচ জনের চেয়ে বিনয়বাবুর খাওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি। খরচও অনেক। কষ্ট করেই যে ভাবেই হোক দিদিই সেই ব্যবস্থা করে আসছেন। এখন বিনয়বাবু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও তাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অতিরিক্ত ওজনের জন্য এখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গও আক্রান্ত হচ্ছে। সমস্যা সে কারণেই। তবে বিনয়বাবুর জন্য হাসপাতাল থেকে খাবারের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা সবটাই করা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy