উত্তরকন্যায় বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিকর্তা নিজস্ব চিত্র।
গত বছর জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রম (এইএস)-এ উত্তরবঙ্গে ১৬০ জনেরও বেশি রোগী মারা গিয়েছিলেন। রাজ্য জুড়েই তা নিয়ে হইচই পড়ে। এ বছর থেকে রোগ প্রতিরোধে উত্তরবঙ্গের একাংশে বয়স্কদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করল রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতর। ১৬-৫৬ বছর বয়স্কদের ওই টিকা দেওয়া হচ্ছে। গত ১৮ মে থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। চলবে ৩ জুন পর্যন্ত।
দেশের মধ্যে এটাই প্রথম জাপানি এনসেফ্যালাইটিস রোগ প্রতিরোধে বয়স্কদের টিকা দেওয়ার কমর্সূচি। গত বছর পরীক্ষামূলক ভাবে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের তরফে অসমের ডিব্রুগড়ে এই টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। এ রাজ্যে গত বছর এনসেফ্যালাইটিসের ভয়াবহ প্রকোপ ছড়ায়। এবং দেখা যায় চিকিৎসকদের প্রচলিত ধারণা ভেঙে ১-১৫ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের চেয়ে বযস্কদের ক্ষেত্রে ওই রোগ সংক্রমণ এবং মৃতু্ হার বেড়েছে। সে কথা মাথায় রেখে বয়স্কদের টিকা করণের জন্য উদ্যোগী হয় স্বাস্থ্য দফতর। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। সেই মতো আইসিএমআর-এর কাছ থেকে এ বছর দেশের মধ্যে এই রাজ্যের তিনটি জেলায় এলাকা বেছে বয়স্কদের জেই প্রতিরোধে টিকাকরণের কাজ করার অনুমোদন দেয় আইসিএনআর। তার মধ্যে রয়েছে ডুয়াসের্র আলিপুরদুয়ার জেলার চারটি ব্লক আলিপুরদুয়ার-১, আলিপুরদুয়ার-২, ফালাকাটা এবং কালচিনি, জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা এবং মালবাজার, দার্জিলিঙ জেলায় শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া এবং নকশালবাড়ি এই আটটি ব্লক।
টিকাকরণ কমর্সূচির কাজ দেখতে মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে এসেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। তিনি বলেন, ‘‘দেশের প্রথম এখানেই বয়স্কদের জেই প্রতিরোধের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হল। সফল হলে পরে দেশের অন্যত্র আমাদের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারে চারটি ব্লকে ১৬-৬৫ বছরের ৫ লক্ষ ৯৩ হাজার বাসিন্দা রয়েছে। তাদের টিকা দেওয়ার লক্ষ রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৩ লক্ষের বেশি বাসিন্দাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় ২টি ব্লকে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার এবং দার্জিলিং জেলার ২টি ব্লকে ২ লক্ষ ২০ হাজার বাসিন্দাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ রয়েছে। মাটিগাড়া এবং নকশালবাড়ি ব্লকে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৩০ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার দুটি ব্লকেও ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে।
তবে এ বছর টিকা দেওয়ার যে কাজ শুরু হয়েছে তা কতটা কার্যকর হল তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কেন না টিকাকরণ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরেও সময় দিতে হবে। কেন না শরীরে ওই টিকা প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে কিছুটা সময় লাগবে। তা ছাড়া তিনটি জেলাতে টিকাকরণ হলেও দক্ষিণদিনাজপুর, মালদহের মতো জেলাগুলিতে এ বছর সেইকাজ হচ্ছে না। জুন মাস থেকে , মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া জেলায় ১-১৫ বছরের কচিকাঁচাদের জেই প্রতিরেধে প্রতিষেধক দিতে উদ্যোগী স্বাস্থ্য দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy