হাসপাতালের শয্যায় কালীপদ পরামানিক।—নিজস্ব চিত্র
সেই পাঁচ বছর আগে চাষের কাজ করার সময় পায়ে বিঁধেছিল কাঁটা। অবশেষে বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করে সেই কাঁটা বের করা হল পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। আর কাঁটা-মুক্ত হয়ে সেই হাসপাতালেরই শয্যায় শুয়ে বৃদ্ধ কালীপদ পরামানিক বললেন, “রাঁচিতে মেডিক্যাল কলেজে দেখিয়েছিলাম অনেক দিন। সেখানে বলেছিল, পা কেটে বাদ দিতে হবে! আজ বড় টেনশনমুক্ত মনে হচ্ছে নিজেকে।” বলেই কপালে হাত ঠেকিয়েছেন বৃদ্ধ।
বছর পাঁচেক আগে চাষের জমিতে ইঞ্চি দেড়েক লম্বা কাঁটা পায়ের গোড়ালির কাছে ফুটে গিয়েছিল আড়শার গোরাদাগ গ্রামের বাসিন্দা কালীপদবাবুর। তাঁর দাবি, সেই সময় সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা নাকি কোনও কাঁটাই খুঁজে পাননি! ব্যথার ওষুধ দিয়েছিলেন। দিন পনেরো খেয়ে ব্যথাও কমে যাওয়ায় ভেবেছিলেন ভাল হয়ে গিয়েছে। কালীপদবাবুর কথায়, “কিছুদিন পরেই ফের ব্যথা শুরু। এক্স-রে করালাম। ছবিতেও কাঁটা দেখা গেল না।” পা ফুলে যাওয়ায় বৃদ্ধ ছোটেন রাঁচিতে। সেখানে অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকেরা জানান, কোনও কাঁটা বিঁধে নেই। সংক্রমণ হয়েছিল বলে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
বৃদ্ধের জামাই গোলক পরামানিক বলেন, “ফের সংক্রমণ হল শ্বশুরের পায়ে। ছুটলাম রাঁচিতেই। ডাক্তার বললেন, সংক্রমণ অনেকটাই ছড়িয়েছে। পা-ই বাদ দিতে হবে। আমাদের আর্থিক অবস্থা সেরকম নয়। তাই বাড়িই ফিরিয়ে আনা হল।” এ বার শুরু হল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। মাস সাতেক ধরে হোমিওপ্যাথিই চলছিল। পায়ে যে ঘা ছিল, তা শুকিয়ে পাশে অন্য একটি জায়গায় ঘায়ের মতো দেখা গেল। সেখানে কাঁটা জাতীয় কিছু রয়েছে বলে মালুম হতেই বৃদ্ধকে সোজা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হল। গোলকবাবু বলেন, “চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে এই কাঁটাটা বের করলেন।” বলেই অনেক যত্ন করে পার্সে মুড়ে রাখা কাঁটাটি দেখালেন তিনি।
অস্ত্রোপচার করেছেন যিনি, সেই শল্য চিকিৎসক পবন মণ্ডল বলেন, “অনেক দিন ধরে পায়ে খেজুর কাঁটা বিঁধেছিল। এই কাঁটা মসৃণ হওয়ায় নড়াচড়া করলে মাংসপেশিতে কাঁটা সরে যায়। বৃদ্ধের পায়ে বেশ খানিকটা সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।” বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের পর কাঁটা বের হতেই স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন কালীপদবাবু ও তাঁর বাড়ির লোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy