(১) জন্মছকের প্রথম ঘরে সকলেই চায় সূর্য থাকুক। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস, আমরা না চাইলেও শনি প্রথম ভাবে বা লগ্ন ভাবে এসে উপস্থিত হয়। এর কারণ শনি কর্মিক গ্রহ, অতীত জীবনের অসম্পূর্ণ ফেলে আসা কর্মের কারণে শনি প্রথম ভাবে অবস্থান করে থাকে।
(২) শনি সঙ্কোচন, লিমিটেশান, ধীর, শৃঙ্খলার গ্রহ। শনি ফল প্রকাশে বাধা দিয়ে থাকে, পরীক্ষা করে ফল দেয়, যোগ্যতার বিচার করে ফল দেয়। তাই লগ্নে বা প্রথম ভাবে অবস্থান করলে এই ভাব থেকে যে ফলগুলি সহজ ভাবে আর সকলে পেয়ে থাকে, শনি যার লগ্নে আছে সে সে ভাবে মোটেই তা পাবে না। গত জন্মের কর্মের কারণে কোথাও বঞ্চিত হতে হবে, কোথাও অল্পমাত্রায় ফল পাবে, কোথাও কঠোর পরিশ্রম করে আস্তে আস্তে পাবে।
(৩) শনি লগ্নে শুভ ভাবে থাকলে জন্ম থেকে প্রথম ৩০ বছর সংযম ও শৃঙ্খলার মধ্যে অনুশীলনের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করতে পারলে ধীরে ধীরে তার সামনে জীবনের উন্নতির বাধাগুলি অপসারিত হতে থাকে এবং জাতক/জাতিকা সঠিক ভাবেই জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: রোজগারের এই তিন ত্রিভুজ কি আপনার হাতে রয়েছে?
(৪) আর লগ্নস্থ শনি অন্য অশুভ গ্রহ দ্বারা কুপিত হয়ে থাকলে কষ্ট বেশি হয় আর ফলও অনেকটা কম আসে যদি জাতক/জাতিকা প্রকৃতির ইঙ্গিতটা বুঝতে ভুল করে। শনি যে ফলই দিয়ে থাকুক না কেন, তা অতীতের কর্মের আলোকেই দিয়ে থাকে। ফাঁকি দিয়ে শনির হাত নিস্তার পাওয়া যায় না, এই সত্যটা যে যত তাড়াতাড়ি বুঝবে সে তত তাড়াতাড়ি উপকৃত হবে।
(৫) শনির লগ্ন ভাবে অবস্থানে, দৈহিক, প্রাণীক বা মানসিক, কোনও না কোনও অসম্পূর্ণতা বা পঙ্গুতা থাকবেই। অন্য গ্রহের কুপিত প্রভাব লগ্নে শনির উপর থাকলে দেহে কোনও না কোনও খুঁত থাকবেই। অনেক সময় চেহারায় খুব হালকা কালো ছায়ার মতো আভা দেখা যায়।
(৬) লগ্নে শনি যে শিশুর আছে সে এমন পরিবারে জন্ম নিয়ে থাকে যেখানে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। তবুও তাকে কঠোর কৃচ্ছতার মধ্যে কমবেশি মানুষ হতে হয়।
(৭) শিশুকে নানা রকম কিছু মেনে বড় হতে হয়। ফলে শিশু বয়সেই সে শিশুসুলভ স্বভাব ত্যাগ করে ‘বড়’ করে তোলা হয়। বিশেষ করে যেখানে লগ্নস্থ শনি অন্য অশুভ গ্রহ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে।
(৮) লগ্নস্থ শনির জাতক/জাতিকার ব্যবহার বা আদান প্রদানের মধ্যে নানা ধরনের ইতস্তত ভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। মনে হয় তারা দুনিয়ার যাবতীয় বোঝা মাথায় নিয়ে রয়েছে।
(৯) জীবনের প্রথম অংশে এরা অন্তর্মুখী প্রকৃতির হয়ে থাকে।
(১০) লগ্নস্থ শনির জাতক/জাতিকা জীবনে বিশেষ রকম প্রতিষ্ঠা পায়। আবার অনেকে অতি সাধারণ জীবন যাপন করে। এটা নির্ভর করে অতীত কর্মফলের উপর। এরা মনিবও হতে পারে, আবার চাকরও হতে পারে।
(১১) লগ্নস্থ শনির জাতক/জাতিকার ৩০ বছর পর হতে সে মুক্ত হতে থাকে নানা রকম বাধা বিঘ্ন, অর্থ কষ্ট, পারিবারিক বাধা, ভাবাবেগের বাধা থেকে।
(১২) পেশা বা ব্যক্তিগত জীবনে এরা পরিবেশ নিজের অনুকূলে পায় না। এর মধ্যে তুলা, মকর ও কুম্ভ লগ্নে শনি অবস্থান করলে আর্থিক-সহ সব দিকেই অতটা কষ্টের মধ্যে যেতে হয় না।
(১৩) এরা বিবাহিত জীবনে বিশ্বস্থ জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী পেয়ে থাকে। একটু বেশি বয়সে এদের বিয়ে হয়ে থাকে। অনেক সময় জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর বয়স বেশি হয়ে থাকে।
(১৪) যাই হোক এদের প্রথম জীবন কষ্ট ও পরিশ্রমের হলেও বেশির ভাগই শেষ জীবনে ভালরকম চাকরি বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা পেয়ে থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy