আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে নবরাত্রি ব্রত আরম্ভ হয়। সকালে উঠে স্নান করে প্রধান দরজার সামনে পরিষ্কার করে গঙ্গাজল ছিটিয়ে একুশটি আমপাতায় সিঁদুর গুলে সেটা ফোঁটা দিয়ে দরজার ওপর লাগাতে হবে। দরজার দুই দিকে গঙ্গাজল দিয়ে ঘট বসাবেন। তাতে আমপাতা-সহ সশীষ ডাব বসিয়ে সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে লাল চেলি দিয়ে দিতে হবে। আমপাতার ওপর তিনটি গোটা সুপুরি, তিনটি লবঙ্গ, তিনটি ছোট এলাচ, একটা এক টাকার কয়েন, চন্দন ও জবাফুল দেবেন। এরপর দু’পাশে আপত চাল, একটু কুচো ফুল ও তিনটি ধূপকাঠি জ্বালাতে হবে।
পুজোর জায়গায় মা দুর্গার ছবি বসিয়ে সামনে একটি লাল শালুতে একটি মাটির সরায় ধান, গম, যব দিয়ে ওই সরায় ন’টি সিঁদুরের ফোঁটা দিতে হবে। মায়ের সামনে তামার ঘটে গঙ্গাজল দিয়ে ন’পাতা বিশিষ্ট আমপাতা দিতে হবে। এবং তাতেও সিঁদুর ফোঁটা দিতে হবে। একটা গোটা সুপারি, পাঁচটি লবঙ্গ, পাঁচটি ছোট এলাচ, এক টাকার কয়েন ও একটি জবাফুল রাখতে হবে। ঘটের ওপর সশীষ ডাব বসিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে লাল কাপড়ে পেচিঁয়ে লাল ধাগা দিয়ে বেঁধে দেবেন। মাটির সরাতেও লাল ধাগা বাঁধা হবে। সিঁদুরের ফোঁটা ব্রতীর দিকে থাকবে। প্রতিদিন ঘট পর্যন্ত লম্বা একটি জবার মালা মায়ের ছবিতে দেবেন। সরায় গঙ্গাজল দেবেন। এই ন’দিন দাম্পত্য জীবন থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। মায়ের সামনে ধূপ, ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে হাতে লাল ডোর বেঁধে আতপচাল, কুচোফুল ও গঙ্গাজল নিয়ে হাত জোড় করে প্রার্থনা জানাবেন। হাতের জিনিসগুলো ঘটের পাশে রাখবেন। এ ভাবে পরপর তিন দিন করবেন। মাকে যা যা দিতে মন চাইবে তাই দেবেন এবং সঙ্গে একটা টাকা দেবেন প্রণামী হিসাবে। নবমী পুজোর শেষে কোনও ব্রাহ্মণীকে এইগুলো দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেবেন। এই ন’দিন নিরামিষ খাবেন। অষ্টমীতে যদি সম্ভব হয় মাকে লুচি, ক্ষীর, মালপোয়া দিয়ে ভোগ দেবেন। এই দিন কোনও বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে ওই সরায় যে চারা বেরোবে তা কিছুটা তুলিয়ে মাটি ঝেড়ে লাল সুতো দিয়ে বেঁধে মায়ের ছবির সামনে রেখে দেবেন। দশমীর ঘট বিসর্জনের সময় ওটি আলমারিতে টাকা-পয়সা রাখার জায়গায় রেখে দেবেন। একটি নারকেল অষ্টমীর দিন ফাটাবেন। অর্ধেক খাবেন আর অর্ধেক মায়ের কাছে রাখবেন। দশমীর দিন ওটি বিসর্জন দেবেন। যদি সম্ভব হয়, ন’টি বাচ্চাকে কিছু উপহার দেবেন ও পেট ভরে ভাল কিছু খাওয়াবেন।
‘ওঁ সর্বমঙ্গলা মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে, শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরী নারায়নী নমস্তুতে’ এই বলে ফুল দিয়ে প্রণাম জানাবেন। দুর্গা চালিশা পাঠ করবেন ‘ওঁ হ্রীং দুং দুর্গায় নমঃ’ একশো আটবার তুলসী মালায় জপ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy