প্রতীকী ছবি।
একটিই আধার সংখ্যা। তাতে জুড়ে রয়েছে একশোরও বেশি নাম! মহারাষ্ট্রে কৃষিঋণ মকুব প্রকল্পে চাষিদের নাম নথিভুক্ত করা চলছিল অনলাইনে। হঠাৎ সেখানে প্রকাশ্যে এসেছে এই ঘটনা।
এর আগে প্রত্যেক কৃষকের নিজস্ব আধার কার্ডের উপরে জোর দিয়েছিল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। জোর দেওয়া হয়েছিল অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে। এর ফলে কৃষিঋণ মকুবের ক্ষেত্রে যে কোনও নকল অ্যাকাউন্ট বা ওই ধরনের সমস্যা এড়ানো যাবে বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু এই ‘এক আধারে একশো’-র ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে কর্তাদের।
মহারাষ্ট্র কর্পোরেশন দফতরের এক আধিকারিক জানান, এত দিন আধার কার্ডই ছিল নকল সুবিধাভোগীদের হাত থেকে বাঁচার প্রধান অস্ত্র। কিন্তু এখন কী হবে, তা নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায়। কারণ, একশো জন কৃষক একই আধার নম্বর দেখালে পরিস্থিতি শুধু জটিলই হবে না, তা পরীক্ষা করাও যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়াবে।
এমনিতেই ঋণ মকুব প্রকল্প রূপায়ণে দেরি নিয়ে সরকারের উপরে যথেষ্ট চটে রয়েছে কৃষক সম্প্রদায়। তাই সেটি চালু নিয়ে আর দেরি করতে চায় না সরকার। গত সপ্তাহেই ৩৪ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। বুধবার এ নিয়ে ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠকেও বসেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। ব্যাঙ্ককর্তারা কার্যত মেনে নিয়েছেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পোর্টালে যে সব তথ্য জমা পড়েছে, তাতে অনেক গরমিল রয়ে গিয়েছে। কোথাও ব্যাঙ্কের রেকর্ডের সঙ্গে কৃষকের জমির পরিমাণ মিলছে না, তো কোথাও ঋণের পরিমাণ। কোথাও দেখা যাচ্ছে আসলের সঙ্গে গরমিল থেকে গিয়েছে সুদের। কোথাও আবার কৃষকদের নামই নেই। ফলে বিষয়টি নিয়ে যে অনেকটাই ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে তা মেনে নিয়েছেন ব্যাঙ্ককর্তারাই।
বহু দিন ধরে এই প্রকল্পে অনলাইন ফর্মভর্তির প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা। তার উপর সোমবার ঝাড়খণ্ডে অনাহারে মৃত্যু ফের উস্কে দিয়েছে বিরোধীদের বক্তব্যকে। বহু দিন ধরেই রেশন কার্ড ও আধার কার্ড লিঙ্ক করা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি ছিল, যে এই ধরনের প্রযুক্তির চাপে অনেকেই গণবণ্টন ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হবেন। ঝাড়খণ্ডে অভিযোগ উঠেছে, আঙুলের ছাপ না মেলায় রেশন না পেয়ে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধের। সুপ্রিম কোর্টেও ঝুলে আধার কার্ড নিয়ে মামলা। তার উপর ঋণমকুবের এই নয়া প্রকল্পেও অনলাইন ব্যবস্থার সুফল কতখানি কৃষকদের কাছে পৌঁছবে, তা নিয়েও উঠল প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy