নিহত আতিফ মির।
স্কুলে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেত আতিফ মির। বাধ্য ছেলে বলে ঘরে-বাইরে পরিচিত ছিল সে। গত বৃহস্পতিবার মধ্য কাশ্মীরের বান্দিপোরার হাজিনে সংঘর্ষে সেই আতিফ বেঘোরে মারা যাওয়ার ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তার পরিজন ও পরিচিতেরা।
বৃহস্পতিবার হাজিনে আতিফদের বাড়িতে ঘাঁটি গাড়ে লস্কর কমান্ডার আলি ও তার সঙ্গী হুবাইব। আতিফের পরিবারের দাবি, তার এক সম্পর্কিত বোনকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করছিল আলি। বৃহস্পতিবার সোজা বাড়িতে এসে হানা দেয় তারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে বাহিনী। পরিবারের ছ’জন সদস্য বাইরে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু আতিফ ও তার কাকা আব্দুল হামিদকে পণবন্দি করে জঙ্গিরা। আব্দুল বলেন, ‘‘সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরে গুলির শব্দে কাঁপছিল আতিফ। ওকে কয়েকটা কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দিই আমি। জঙ্গিদের বলি ওকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু ওরা শোনেনি। উল্টে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ভাগ্য ভাল আমার গুলি লাগেনি।’’ আতিফের সুরক্ষার কথা ভেবে প্রথমে বাড়িতে অভিযান চালাতে চায়নি বাহিনী। আতিফের মা শরিফা বানু বারবার তাকে ছাড়তে অনুরোধ করেন। স্থানীয় মসজিদের লাউডস্পিকার থেকে আতিফকে ছাড়ার অনুরোধ করা হয়। পরে জঙ্গিরা আহত হলে পালান আব্দুল হামিদ। আতিফ পারেনি। সংঘর্ষের সময়ে নিহত হয় সে।
আতিফের বাবা মহম্মদ শফি মির তখন দোকানে। ঘটনার জন্য বাহিনী বা আতিফের কাকাকে দোষ দিতে রাজি নন তিনি। মহম্মদ বলেন, ‘‘আতিফকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। জঙ্গিরা রাজি হয়নি।’’ সংঘর্ষে আলি ও
হুবাইব নিহত হয়। আতিফের পাড়ার বন্ধু খালিদ এখনও বিশ্বাসই করতে পারছে না যে তার বন্ধু নেই। বলল, ‘‘আমাদের স্কুল গত কাল বন্ধ ছিল। আতিফের সঙ্গেই পড়তাম, খেলতাম। ও কোথায় গেল?’’ আতিফের স্কুলের ভাইস-প্রিন্সিপাল ইরফান আহমেদ বলেন, ‘‘আতিফ ভাল ছাত্র ছিল। ওকে শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার অবধি স্কুল বন্ধ রাখা হবে।’’
আতিফকে বাঁচাতে তার মা শরিফা বানুর আর্জির ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই টুইটারেও ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকে। বান্দিপোরার পুলিশ সুপার রাহুল মালিকের কথায়, ‘‘স্থানীয় একটি কমিটি ও ম্যাজিস্ট্রেটের সাহায্য নিয়ে ছেলেটাকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করি। জঙ্গিরা কোনও কথাই শুনল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy