বন্যার জলে তোড়ে ভাসছে গাড়ি। মণিপুরের চান্ডেলের জৌপি এলাকায়।
এক শতকের মধ্যে এমন বন্যা দেখেনি মণিপুর। রাজ্যের সব নদী বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। ভেঙে পড়ছে একের পর এক সেতু। তার মধ্যেই আজ চান্ডেল জেলায় জৌপিতে ধসে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্ধকার আর বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।
চান্ডেলের জেলাশাসক রবার্ট সিংহ ক্ষেত্রিমায়ুম জানান, আজ মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁসা খেংজোই এলাকার জৌমাল গ্রামে ধস নামে। ধসে একটি গ্রামের বড় অংশ পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে যায়। সেখানে যাওয়ার কোনও রাস্তাও ছিল না। বিকেলের পরে অসম রাইফেলসের জওয়ানরা কোনও মতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। রাত অবধি ধসে চাপা পড়া ঘরগুলি থেকে ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইম্ফল থেকে টেলিফোনে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। তাদের নামও জেলা প্রশাসন প্রকাশ করেছে। এক জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন জন মহিলা, দু’জন শিশু। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা।
ভয়াবহ বন্যায় ভেঙে পড়েছে সেতু। মণিপুরের চান্ডেল জেলার জৌপিতে।
এই পরিস্থিতিতে কার্যত দিশাহারা রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ। ডাকা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও কথা বলেছেন। চাওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর সাহায্য। থৌবাল, চান্ডেলে স্থানীয় বিধায়ক ও জেলাশাসকরা যুদ্ধকালীন তত্পরতায় উদ্ধার কাজ তদারক করছেন। তৈরি হয়েছে ত্রাণ শিবিরও।
ভারত-মায়ানমার সংযোগকারী সড়কে সেনাম, টেংনৌপাল ও বংজাং এলাকায় ধস নেমে জাতীয় সড়ক পুরো বিচ্ছিন্ন। উখরুলের ফুংগিয়ারেও ধসের ফলে গোটা মহকুমা বাকি রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টির ফলে ইম্ফল, থৌবাল, চান্ডেলে নদীগুলির অবস্থা সবচেয়ে বিপজ্জনক। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে মণিপুরের থৌবাল ও চান্ডেল জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেংমাই নদীর জলে থৌবাল জেলার পাল্লেলে বিস্তীর্ণ অংশ জলের তলায়। চান্ডেলে চাকপি নদীর জলও ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। চাকপি নদীর উপরে থাকা দু’টি
সেতু ভেসে গিয়েছে। সেরৌ নদীর উপরে থাকা রাজ্যের সবচেয়ে বড় সেতুটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ওয়াংজিং নদীর বন্যায় বহু রাস্তাই জলের তলায়।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy