Advertisement
০৭ মে ২০২৪

শহিদ সেনাকে নিয়ে ছবি বাঙালির

এ বছর মরণোত্তর অশোক চক্রে সম্মানিত অসম রেজিমেন্টের জওয়ান হাংপান দাদাকে নিয়ে তরুণ বাঙালি পরিচালক ২৭ বছরের সোমেশ সাহার তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘ওয়ারিয়র্স অফ ইন্ডিয়া’ ইউটিউবে সুপার হিট!

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

এ বছর মরণোত্তর অশোক চক্রে সম্মানিত অসম রেজিমেন্টের জওয়ান হাংপান দাদাকে নিয়ে তরুণ বাঙালি পরিচালক ২৭ বছরের সোমেশ সাহার তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘ওয়ারিয়র্স অফ ইন্ডিয়া’ ইউটিউবে সুপার হিট!

ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে আট লক্ষ মানুষ ওই ছবিটি দেখে ফেলেছেন। ক্ষুদ্র প্রয়াস যে এমন সাড়া ফেলবে তা ভাবতে পারেনি খোদ সোমেশই।

২০১৬ সালের ২৫ মে কাশ্মীরের নওগাম সেক্টরে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সামসাবাড়ি রেঞ্জ দিয়ে ভারতে ঢোকে চার জঙ্গি। অসম রেজিমেন্টের হাভিলদার হাংপান দাদার নেতৃত্বে জওয়ানদের একটি দল জঙ্গিদের ধাওয়া করে। ওই দিনই এক জঙ্গিকে মারেন দাদা। পর দিন গুলিতে জখম হয়েও তিনি মারেন আরও দুই জঙ্গিকে। তাঁর সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধিতে প্রাণ বাঁচে সঙ্গীদের। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ জঙ্গির গুলিতে দাদা মারা যান। প্রজাতন্ত্র দিবসে শান্তিকালীন সময়ের সামরিক সর্বোচ্চ সম্মান অশোকচক্র তাঁর স্ত্রী চাসেন লোয়াংয়ের হাতে তুলে দেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

দাদার স্ত্রী, মেয়ে রৌকিন ও ছেলে সেনওয়াং, পরিবার, শিক্ষক, সহকর্মী ও ঊর্ধতন কর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই দু’দিনের অভিযান পুনর্নির্মাণ করেন সোমেশ সাহা। পেশাগত ভাবে তিনি বিজ্ঞাপনে জিঙ্গল তৈরি করেন। সোমেশের বাবাও অসম রেজিমেন্টের কর্নেল ছিলেন। হাংপানের লড়াইয়ের খবরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি। সোমেশ জানান, বাবার জন্য ছোটবেলা থেকেই সামরিক জীবন কাছ থেকে দেখেছিলেন। তাই হাংপানকে নিয়ে ছবি করার সিদ্ধান্ত নেন। সাহায্য নেন দুই বন্ধু সৌমিল শেট্টি ও রোহন শর্মার।

তাঁদের ইচ্ছার কথা জেনে উৎসাহ দেখায় সেনাবাহিনীও। দাদার সহকর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া থেকে শুরু করে ২৪ থেকে ২৬ মে-র ঘটনা ফের ছবির মতো তৈরি করায় সেনাবাহিনী সাহায্য করে। ছবি তৈরির পরে তা দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন দাদার সহযোদ্ধারা। দাদার গ্রাম বরদুরিয়ার মানুষও অভিভূত।

সোমেশ, সৌমিল ও রোহনরা কাশ্মীর থেকে অরুণাচল পর্যন্ত ঘোরেন ওই শুটিংয়ের জন্য। পর্দায় দাদার কৈশোর জীবন, পারিবারিক জীবনকেও তুলে ধরা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, দাদার ছোট্ট ছেলেও বড় হয়ে সেনা অফিসার হতে চাইছে। গ্রামের অনেক যুবক এখন চাইছেন দাদার মতোই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে।

রোহনের বাবাও প্রাক্তন সেনাকর্মী। তিনি অ্যানিমেশন ও ভাষ্যপাঠ করেছেন। তিন জনের কাছেই এই ছোট্ট ছবি গোটা জীবনের অভিজ্ঞতার সামিল।

তিন বন্ধুর মতে, সেনাবাহিনী থেকে আম জনতা যে ভাবে দাদার জীবন নিয়ে তৈরি ছবি দেখে আপ্লুত তাতেই সব পুরস্কার পাওয়া হয়ে গিয়েছে। সোমেশ ও রোহন এখন আক্ষেপ করছেন, কেন তাঁরা নিজেরাও বাবাদের মতোই সেনাবাহিনীতে যোগ দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Martyr
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE