Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি স্কুলে বাংলার পাঠ তামিলনাড়ুতে

ইংরেজি আর হিন্দির সাঁড়াশি চাপে খাস বাংলায় বাংলা ভাষা কোণঠাসা বলে হাহুতাশ করছেন অনেকে। বাংলা মাধ্যমের অনেক সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পাঠ চালু করার উদ্যোগ চলছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১০
Share: Save:

ইংরেজি আর হিন্দির সাঁড়াশি চাপে খাস বাংলায় বাংলা ভাষা কোণঠাসা বলে হাহুতাশ করছেন অনেকে। বাংলা মাধ্যমের অনেক সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পাঠ চালু করার উদ্যোগ চলছে। আর তামিলনাড়ুর সরকারি স্কুলে পড়ানো হচ্ছে বাংলা।

পশ্চিমবঙ্গের অনেকে রুজির টানে তামিলনাড়ু যান। তাঁদের ছেলেমেয়েরা যাতে বাংলা শেখে, সেই জন্য উদ্যোগী হয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। চেন্নাই থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে কারুর জেলায় পাঁচটি সরকারি দু’বছর ধরে স্কুলে পড়ানো হচ্ছে বাংলা। তামিলনাড়ু সরকারের ‘আদি দ্রাবিদার অ্যান্ড ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার’ দফতরের অধীনে রয়েছে এই আদি দ্রাবিদার কল্যাণ স্কুল। কারুর জেলার কলকারখানায় বহু বাঙালি শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁরা বাংলা লিখতে-পড়তে পারলেও দ্বিতীয় প্রজন্ম পারে না। তাঁদের ছেলেমেয়েরা যাতে মাতৃভাষার স্বাদ, সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য থেকে বঞ্চিত না-হয়, সেই জন্যই তামিলনাড়ু সরকারের এই উদ্যোগ।

সেখানে বাংলা পড়াচ্ছেন কাজ খুঁজতে যাওয়া বাঙালিরাই। পাঁচটি স্কুলে পড়ান তিন জন বাঙালি। একটি স্কুলে পড়ান সুন্দরবনের সাতজেলিয়ার বাসিন্দা বৈশাখী সর্দার। এখন থাকেন কারুর জেলার সানপিরাত্তিতে। তাঁর স্বামী সুজিত সর্দার মশারি কারখানায় কাজ করেন। বৈশাখীদেবীও তা-ই করতেন। পড়ানোর কাজ পেয়ে সেটা ছেড়ে দিয়েছেন। বৈশাখীদেবী রবিবার ফোনে জানান, তাঁর স্কুলে ৪৮ জন বাঙালি পড়ুয়া আছে। প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়ান তিনি। অ-আ-ক-খ থেকে শুরু করে বাংলায় পড়ান পরিবেশবিজ্ঞান, ইতিহাস, গণিত। তামিলনাড়ু সরকারের তরফেই পশ্চিমবঙ্গের সর্বশিক্ষা অভিযানের দফতর থেকে বই সংগ্রহ করা হয়েছে। বৈশাখীদেবী দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। জানালেন, তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে কুন্তল একই স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। বাংলা শেখে। যে-সব বাঙালি পড়ুয়া তাঁর কাছে আসে, তাদের অভিভাবকেরা রুজির সন্ধানে এসেছেন তামিলনাড়ুতে। ‘‘বাঙালি হলেও ওদের সকলকেই তামিল পড়তে হয়। মূল পড়াশোনার মাধ্যমও তামিল। তবে তামিলনাড়ু সরকারের সৌজন্যে বাঙালি ছেলেমেয়েরা এখন কিছুটা হলেও বাংলা লিখতে-পড়তে পারছে,’’ বললেন বৈশাখীদেবী।

কারুর জেলার আদি দ্রাবিদার কল্যাণ অফিসার লীলাবতী এস জানান, রাজ্য সরকারের নিয়মবিধি অনুসারেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে একটি স্কুলে চেষ্টা করা হয়েছিল। এখন আদি দ্রাবিদার স্কুলে চালু হচ্ছে। ‘‘এমন উদ্যোগ চলছে, যাতে কেউ মাতৃভাষা ভুলে না-যায়,’’ বললেন কল্যাণ অফিসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Tamil Nadu Bengali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE