Advertisement
E-Paper

ভারত জোড়োয় রাহুলের সঙ্গী বঙ্গতনয়া, পাঁচ মাসের অভিজ্ঞতা লিখলেন আনন্দবাজার অনলাইনে

রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার জন্য দেশের ১১৭ জনকে বাছাই করেছিল কংগ্রেস। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলার পূজা রায়চৌধুরী। বাড়িতে দেড় বছরের শিশুকন্যাকে রেখে হেঁটেছেন প্রায় ৪,০০০ কিমি।

Rahul Gandhi at Bharat Jodo Yatra.

ভারত জোড়ো যাত্রার শেষে শ্রীনগরে রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

পূজা রায়চৌধুরী

পূজা রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:২০
Share
Save

কাশ্মীর থেকে কলকাতার বাড়িতে ফেরার পথে আপাতত আমি তুষারঝড়ে অবরুদ্ধ বানিহাল টানেলের মুখে। জানি না, কখন এই জট ছাড়বে। সেখানে বসেই আনন্দবাজার অনলাইনের জন্য এই লেখা লিখছি।

গাড়িতে কংগ্রেসের পতাকা দেখে স্থানীয় কয়েক জন ব্যবসায়ী বন্ধু এসে যখন কেশর আর আখরোট উপহার দিয়ে যাচ্ছিলেন বা এক মহিলা এসে বলছিলেন, ‘‘চলো, আমার বাড়িতে দুপুরের খাওয়াটা খেয়ে নেবে’’, আমার মনে পড়ছিল সেই দিনটার কথা।

৯ অগস্ট, ২০২২। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৮০তম বর্ষপূর্তির কর্মসূচি সেরে সবে সল্টলেকের বাড়িতে ফিরেছি। দিল্লি থেকে মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী নেত্তা ডি সুজার ফোন! বললেন, ‘‘কাল সকাল ১০টার মধ্যে ২৪, আকবর রোডে চলে এসো।’’

কারণ জানতে চাওয়ার আগেই ফোনটা কেটে গেল। তবে আঁচ করলাম, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য আমায় মনোনীত করা হয়েছে। তড়িঘড়ি ইন্টারনেট খুলে ফ্লাইটের খোঁজ আর ভোরের টিকিট কেটে সকাল ৯টায় দিল্লি। এআইসিসি সদর দফতরে গিয়ে দেখি সাজ-সাজ রব। তুমুল ব্যস্ততা। বেলা ১১টা নাগাদ ডাক পড়ল। ঘরে ঢুকে দেখলাম দিগ্বিজয় সিংহ, জয়রাম রমেশ এবং নেত্তা বসে আছেন। ছোটখাটো ইন্টারভিউ পর্ব। জানানো হল, পাঁচ মাস থাকতে হবে। ১৪৮ দিন পায়ে হেঁটে যেতে হবে ৩,৫৭০ কিলোমিটার পথ— কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর ।

ভারত জোড়া যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে পূজা।

ভারত জোড়া যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে পূজা। ছবি: সংগৃহীত।

এক লহমা ভাবলাম। বাড়িতে দেড় বছরের মেয়ে কোকো। মাত্র ছ’মাস আগে আমার গলব্লাডার অপারেশন হয়েছে! তা ছাড়াও, বাড়িতে সকলের সঙ্গে আলোচনা না করে কী করে সিদ্ধান্ত নেব! ভেসে উঠল আমার ‘বেস্ট হাফ’-এর মুখটা। মনে মনেই দেখলাম, হাসিমুখে সম্মতি দিচ্ছে। এর পর আর দেরি না করে ‘হ্যাঁ’ বলে ফেললাম। তবে একটা নতুন শঙ্কাও উঁকি দিল— যাত্রা সেরে ফিরে আসার পরে ‘ইনস্টিটিউট অফ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ আবার মলিকিউলার বায়োলজির ক্লাস নিতে গিয়ে হোঁচট খেতে হবে না তো?

কিচ্ছু জানি না। কোথায় থাকব। কী ভাবে থাকব। কী খাব। শুধু একটা চাপা উত্তেজনা। ঐতিহাসিক পদযাত্রার শরিক হওয়ার সুযোগ। বাবা নারায়ণ বসু আজীবনের গান্ধীবাদী, গান্ধী স্মারক সংগ্রহালয়ের কর্ণধার। বাবা উৎসাহ দিলেন। প্রেরণা দিলেন। কলেজজীবন থেকে ছাত্র পরিষদ করার অভিজ্ঞতা তো ছিলই। মনকে শক্ত করে ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা থেকে রওনা দিলাম কন্যাকুমারীর পথে।

পূর্বনির্ধারিত হোটেলে পৌঁছে দেখি, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১১৯ জন মানুষ রাহুল’জির সঙ্গে হেঁটে শ্রীনগর যাওয়ার জন্য এসেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন আমার চেনা। বাকিদের সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়পর্ব সেরে নিলাম। ৭ সেপ্টেম্বর কন্যাকুমারীর সমুদ্রতটে বিশাল জনসভায় রাহুল’জির হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। সূচনা হল ভারত জোড়ো যাত্রার। সেই সন্ধ্যায় হোটেল ছেড়ে চলে এলাম ৪২ নম্বর কন্টেনারে। আমার পরবর্তী পাঁচ মাসের রাত্রিবাসের ঠিকানা। রাতে ব্রিফ করা হল পর দিনের রুটিন। ভোর ৩টেয় উঠে স্নান সেরে ৪টেয় প্রাতরাশ! ৫টায় প্রার্থনা। সাড়ে ৫ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন। জাতীয় সঙ্গীতের পর সকাল ৬টায় যাত্রা শুরু।

ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুল এবং সোনিয়া।

ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুল এবং সোনিয়া। ফাইল চিত্র।

প্রথম দিন থেকে ১৩৭তম দিন পর্যন্ত একদিনের জন্যও এই রুটিনের অন্যথা হয়নি! ঝড়-বৃষ্টি এমনকি, কাশ্মীরে প্রবল তুষারপাতেও! পরের দিকে ঘড়িতে অ্যালার্ম দেওয়ার প্রয়োজন হত না। তবে প্রথম থেকেই আমার নজর কেড়েছিল রাহুল’জির সময়ানুবর্তিতা। সত্যি বলতে কি, তাঁকে দেখে ঘড়ি মেলানো যায়!

প্রথম দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী আমাদের সঙ্গে হেঁটেছিলেন। সে দিন বেলা একটু গড়ানোর পর আমার মতো অনেকে কাহিল হয়ে পড়েছিলেন। সেপ্টেম্বরের তামিলনাড়ু উপকূলের চড়া রোদে টানা ১২ কিলোমিটার হাঁটা। তার পরে স্থানীয় একটি স্কুলে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি। ইডলি-সম্বর খেতে খেতে ভাবছিলাম, শেষ পর্যন্ত পারব তো! হঠাৎ দেখি সামনে দাঁড়িয়ে রাহুল’জি। প্রথমেই প্রশ্ন, ‘‘পায়ের অবস্থা কেমন? শরীর ঠিক আছে?’’ তার পরে উৎসাহ দিয়ে বললেন, ‘‘আজ কিন্তু আরও ১৪ কিলোমিটার হাঁটতে হবে।’’

প্রচণ্ড রোদে হাঁটা শুরু হল আবার। উত্তপ্ত পিচের রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে পায়ে ফোস্কা পড়া শুরু হলো। প্রচণ্ড যন্ত্রণা। জুতো পরতেই কষ্ট হচ্ছে। দু’পায়ে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে কোনওমতে এগিয়ে চলা। রাতের খাওয়ার সময় রাহুল’জি এসে একে একে সকলের খোঁজ নিলেন। পা দেখাতে বললেন। আমার দু’পায়ে ১১টা জলভরা ফোস্কা! আরও কয়েক জনেরও প্রায় একই অবস্থা। রাহুল’জি স্থানীয় থানার আইসি-কে বলে পুলিশের জিপে সকলকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। হাসপাতাল থেকে ফিরলাম রাত দেড়টা নাগাদ। দেখলাম রাহুল’জি তখনও ওই চেয়ারটায় বসে অপেক্ষা করছেন আমাদের ফেরার জন্য!

ভারত জোড়ো যাত্রায় অধীর চৌধুরীর সঙ্গে পূজা।

ভারত জোড়ো যাত্রায় অধীর চৌধুরীর সঙ্গে পূজা। ছবি: সংগৃহীত।

কন্টেনার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় হাঁটতে হাঁটতে রাহুল’জি বললেন পর দিন সকালে এক জনের সঙ্গে গিয়ে আমাকে দীর্ঘপথ হাঁটার উপযোগী স্নিকার্স কিনে নিতে। বললেন, আমার পছন্দমতো জুতো নিয়ে নিতে। টাকার চিন্তা না করতে। গেলাম। কিন্তু লজ্জায় বেশি দামি জুতো নিতে পারিনি। লাঞ্চের সময় এসে আমার জুতো দেখে আর তার দাম শুনে মৃদু তিরস্কার করলেন রাহুল’জি। তার পর থেকে যতদিন পর্যন্ত না আমার পা পুরোপুরি ঠিক হয়েছে, তত দিন লজ্জার মাথা খেয়ে দু’বেলা রুটিন করে রাহুল’জিকে চেয়ারে বসে পা দেখাতে হয়েছে!

প্রায় প্রতি রাতেই ডিনার টেবিলে সকলের সঙ্গে বসতেন রাহুল’জি। প্রত্যেকের পরিবার, বাবা, মা, সন্তান সম্পর্কে আলাদা আলাদা করে শুনতে চাইতেন। পরে দেখলাম, প্রত্যেকের সম্পর্কে তথ্য উনি আলাদা আলাদা করে মনে গেঁথে রেখেছেন। কিছু দিন পর পরই খোঁজ নিতেন। জানতে চাইতেন পরিবারের সেই নির্দিষ্ট মানুষটি সম্পর্কে। একেবারে নাম ধরে ধরে। অবাক হতাম।

শ্রীনগরে তুষার-খেলায় রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা।

শ্রীনগরে তুষার-খেলায় রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। ছবি: পিটিআই।

আরও অবাক লাগত এটা দেখে যে, শুধু রাজনীতি নয়। বিজ্ঞান, ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, খেলাধুলো, মহাকাশবিদ্যা— সমস্ত সম্পর্কে উনি জানেন। মনে হত, কখন সময় পান এত পড়াশোনার? প্রত্যেক ধর্মের ‘ভারতযাত্রী’-কে আলাদা আলাদা করে প্রশ্ন করতেন তাঁর ধর্ম আর লোকাচার সম্পর্কে। অনেকেই ভুল উত্তর দিতেন। মৃদু হেসে রাহুল’জি ভুল ধরিয়ে দিতেন। আরও পড়াশোনা করার পরামর্শ দিতেন।

মনে আছে, কোনও একদিন যাত্রার সময় রাহুল’জিকে দেখে মনে হল, কষ্ট হচ্ছে পথ চলতে। হঠাৎ একটা বাচ্চা মেয়ে ওঁর হাতে একটা ছোট্ট কাগজ গুঁজে দিয়ে এক মুহূর্তের জন্য জড়িয়ে ধরে তার পরেই আবার ভিড়ে হারিয়ে গেল। যাওয়ার আগে বলল, ‘‘এখন পড়বে না। পরে পড়ে দেখো।’’ কিন্তু রাহুল’জি কৌতুহল সামলাতে না পেরে তৎক্ষণাৎ কাগজটা খুলে পড়লেন। তাতে লেখা— ‘আমি জানি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে হাঁটতে। আমি তোমার সঙ্গে হাঁটতে চাই। কিন্তু আমার বাবা-মা অনুমতি দেবে না।’ আর এক দিন ছেঁড়া পোশাক পরা তিনটি শিশুকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের জড়িয়ে ধরলেন রাহুল’জি। ততদিনে বেশ ঠান্ডা পড়ে গিয়েছে। ওদের গায়ে কোনও শীতবস্ত্র ছিল না। এখন মনে হয়, গরিব আর সাধারণ মানুষের কষ্ট অনুভব করতেই কি তাই মারাত্মক ঠান্ডাতেও উনি শুধু টি-শার্ট গায়ে দিয়েই পদযাত্রা করে গিয়েছিলেন?

ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে পূজা।

ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে পূজা। ছবি: সংগৃহীত।

দক্ষিণ ভারতের পথে ভাষার সমস্যা ছিল। কিন্তু প্রাণের টানে সমস্ত ভাষাই সাবলীল মনে হত। ঢুকে যেতাম পথ চলতে চলতে কোনও পরিবারের বাড়িতে। অনেকে চা খাওয়াতেন। নিজেদের প্রাতরাশ আমাদের হাতে তুলে দিতেন। এমনকি, বিয়েবাড়িতে বর-কনেকে আশীর্বাদ পর্যন্ত করতে হয়েছে! মহারাষ্ট্রে সকাল ৬টার সময়েও ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকত। পথ চলতে চলতে দেখতাম মানুষের ভিড়। অনেকের কোলে ছোট্ট শিশু। অপেক্ষা করছেন রাহুল’জিকে এক বার দেখার জন্য।

ধীরে ধীরে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাব, হিমাচলপ্রদেশ হয়ে অন্তিম গন্তব্য জম্মু-কাশ্মীর। প্রতিটি রাজ্যে স্থানীয় ভাষা, আচার-ব্যবহার, সংস্কৃতি এমনকি, স্লোগান দেওয়ার পদ্ধতিরও নানা অভিনবত্ব নজর কেড়েছে। যাত্রাপথ ছিল প্রধানত গ্রামের মধ্য দিয়ে। তাই বার বার অনুভব করেছি অতিমারি পরবর্তী পর্যায়ে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমস্যা। কৃষকের যন্ত্রণা। কখনও মনে হয়নি, এই ভারতে ধর্মের নামে কোনও ভাগাভাগি বা বিভেদ রয়েছে। মাত্র তিনটি শৌচাগারে ২৬ জন মহিলার ভোর থেকে লাইন দিয়েও সময়মতো বেরিয়ে পড়া, অনভ্যস্ত মেনুতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া, ছাতা-সানস্ক্রিন ছাড়া মারাত্মক রোদে চলা— এগুলো যে হতে পারে, তা তো নিজেই দেখলাম। এগুলো তাই এখন আর আমার কাছে কোনও সমস্যাই নয়।

অনেক সময় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। পথ চলতে চলতে চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে বা নারকেল গাছের গোড়ায় হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি। বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ার কারণে মনে হয়েছে, জিনবিদ্যার জনক গ্রেগর জোহান মেন্ডেলের তত্ত্ব ‘যোগ্যতমের উদ্বর্তন’! যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া বা টিকে থাকার জেদ মনে মনে তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমার মতো অনেকের। ভারত জোড়ো যাত্রা নিজেকে চিনতে শিখিয়েছে। শিখেছি, আমরা কী করতে পারি। জেনেছি, প্রতিটি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলাদা আলাদা ধরন। দলের প্রবীণ এবং নবীন প্রজন্মের নেতাদের সঙ্গে পরিচয়, এক সঙ্গে বসে ভাবনা বিনিময়ের সুযোগ হয়েছে টানা পাঁচ মাস।

ভারত জোড়ো যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে রাহুল।

ভারত জোড়ো যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে রাহুল। ছবি: সংগৃহীত।

প্রত্যেক দিন মধ্যাহ্নভোজের পর বিশ্রামের সময় নিয়ম করে ১০-১৫ জনের দল গড়ে ‘ইন্টারঅ্যাকশন সেশন’ হত। রাহুল’জি দেশের নানা সমস্যার কথা জানতে চাইতেন। কখনও কখনও গল্পও শুনতে চাইতেন। একদিন সম্রাট আকবর আর বীরবলের গল্পটা শুনিয়েছিলাম। এক সন্ন্যাসী সম্রাটের কাছে একটি ছাগল নিয়ে এসে বললেন, ‘‘আপনি এক মাস ধরে এই ছাগলটাকে রেখে ভাল ভাবে খেতে দেবেন। কিন্তু এর ওজন যেন না বাড়ে।’’ আকবর সমস্যায় পড়ে বীরবলের শরণাপন্ন হলেন। বীরবল বললেন, ‘‘এ তো খুব সহজ। ছাগলটাকে সারা দিন ভাল করে খাওয়ান আর রাতে বাঘের খাঁচার সামনে বেঁধে রাখুন। ওর ওজন বাড়বে না।’’

গল্পটা শেষ করেই রাহুল’জিকে প্রশ্ন করলাম, ‘‘আপনি তো বেশ ভালই খাওয়াদাওয়া করেন। কিন্তু চেহারা একই রকম থাকে কী করে? আপনার ‘বাঘ’টা কে?’’ কিছুক্ষণ দাড়ি চুলকে উনি বললেন, ‘‘তুম তো বঙ্গাল কি শেরনি হো!’’

পঞ্জাবে যাত্রা করার সময় রাহুল’জিকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কাশ্মীরেও বলা হয়েছিল জঙ্গি হানার আশঙ্কার কথা। কিন্তু দু’টি রাজ্যেই চলতে চলতে কৃষক, দোকানদার, শ্রমিক, অটোচালকদের কাছে শুনেছি ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়তে আমাদের কর্মসূচিতে সমর্থনের কথা। শেষের দিকে যখন পাহাড়ি পথে প্রচণ্ড ঠান্ডা আর ক্লান্তি গ্রাস করেছে, মনে হয়েছে, আমার দু’বছরের কন্যা কোকো হাতছানি দিয়ে ডেকে বলছে, ‘‘মাম্মা চলে এসো। সামান্য পথ বাকি। আর তুমি তো একা হাঁটছ না।’’

কন্যাকুমারীতে যাত্রা শুরুর আগে রাহুল’জি বলেছিলেন, এটা কোনও রাজনৈতিক যাত্রা নয়। ভোটের জন্যও নয়। এটা আমাদের জাতীয় পতাকার সম্মান বাঁচানোর যাত্রা। দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার যাত্রা। আশা করি, তাঁর সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে দেশ।

(লেখিকা সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস কর্মসমিতির সদস্যা। পেশায় মলিকিউলার বায়োলজির শিক্ষিকা। মতামত নিজস্ব)

Bharat Jodo Yatra Congress Rahul Gandhi West Bengal Pradesh Congress Adhir Ranjan Chowdhury

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।