প্রতীকী ছবি।
এক দিকে দলিত ভোটে ভাগ বসিয়েছে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। অন্য দিকে শরদ পওয়ারের এনসিপি-র ঝুলিতে গিয়েছে কিছু ভোট। তার সঙ্গে রয়েছেন শঙ্কর সিংহ বাঘেলার নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসিরা। সর্বোপরি নোটা। ভোটের ফলের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, বিজেপি-বিরোধী ভোটে নানা দিক থেকে ভাগ না বসলে গুজরাতের গদি দখল করে ফেলতে পারতেন তাঁরা।
১৮২টি আসনের গুজরাত বিধানসভায় ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ হল ৯২। কংগ্রেস পেয়েছে ৭৭টি আসন। ঠিক ১৫টি কম। ভোটের ফলাফল বলছে, ১৬টি আসনে কংগ্রেস ৩ হাজারেরও কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছে। বিরোধী ভোট ভাগ না হলে, এই আসনগুলি কংগ্রেসের ঝুলিতেই আসত। সৌরভ পটেলের মতো বিজেপি সরকারের দাপুটে মন্ত্রীও বোটাড আসনে মাত্র ৯০৬ ভোটে জিতেছেন।
কোথায় ভোট ভাগ হয়েছে? গুজরাতে এ বার হার্দিক পটেল-জিগ্নেশ মেবানী-অল্পেশ ঠাকোরের সাহায্যে পাতিদার, দলিত ও ওবিসি ভোট একসঙ্গে টানার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু মায়াবতী ভাগ বসিয়েছেন দলিত ও ওবিসি ভোটে। কোনও আসন না জিতলেও রাজ্যের প্রায় ০.৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। বিশেষত দলিত অধ্যুষিত এলাকায় ভোট টেনেছে বসপা।
গুজরাতে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে এনসিপি-র জোট হয়নি। অথচ মহারাষ্ট্রের সীমানা সংলগ্ন গুজরাতের অনেক এলাকাতেই এনসিপি-র প্রভাব যথেষ্ট। এনসিপি নিজে মাত্র একটি আসন পেয়েছে। কিন্তু রাজ্যে প্রায় ০.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে অনেক আসনেই বিজেপির সুবিধে করে দিয়েছে। এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেলের মতে, ‘‘কংগ্রেসের উচিত ছিল এনসিপি-র সঙ্গে জোট করা। তা হলে ফল আরও ভাল হত।’’
বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসিদের জন্যও মুশকিলে পড়েছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে না পেরে শঙ্কর সিংহ বাঘেলা কংগ্রেস থেকে ‘অবসর’ নিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ৯৫ জন অনুগামীকে হিন্দুস্তান কংগ্রেস পার্টির টিকিটে প্রার্থী করেছিলেন। বাঘেলা-বাহিনী সাফ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ০.৩ শতাংশ ভোট কেটে কংগ্রেসের ভোটে ভাগ বসিয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে আহমেদ পটেলের নির্বাচনের সময়ে ১৪ জন ‘বিক্ষুব্ধ’ কংগ্রেস নেতা দল ছেড়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে সাত জনকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। জিতেছেন মাত্র দু’জন। কিন্তু এঁদেরই এক জন, সি কে রাউলজি জিতে গিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ গোধরা আসনে। মাত্র ২৫৮ ভোটে কংগ্রেস হেরেছে। ২০০২ সালের পরে এই প্রথম গোধরায় জিতল বিজেপি। একাধিক নির্দল মুসলমান প্রার্থী থাকায় গোধরার মুসলমান ভোটও ভাগ হয়েছে বলে মনে করছে কংগ্রেস।
বিজেপি নেতারা অবশ্য কংগ্রেসের এই তত্ত্ব পুরোপুরি মানতে রাজি নন। তাঁদের যুক্তি, বিজেপি যেমন ৩ হাজারের কম ব্যবধানে ১৬টি আসন জিতেছে, তেমন কংগ্রেসও ৩ হাজারের কম ব্যবধানে ১৩টি আসনে জিতেছে। তার মধ্যে ৯টি আসনে ব্যবধান ২ হাজারেরও কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy