প্রতীকী ছবি।
খাপখোলা তরবারি হাতে সবাই প্রস্তুত। ঝাঁপিয়ে পড়লেই হয়। দিল্লিতে সিপিএমের সদর দফতর, এ কে গোপালন ভবনের তিনতলার ছবিটা কার্যত এ রকমই। কোথায় নেতারা একজোট হয়ে ভবিষ্যতের পথ খুঁজবেন, উল্টে শীর্ষ নেতৃত্বের বিবাদ তুঙ্গে।
২০১৬-য় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের পরে এ বার ত্রিপুরা। আবার সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে বড় হার সিপিএমের। এমন নয় যে, জিতলে তা ইয়েচুরির কৃতিত্বেই হত। কিন্তু হারের জন্য প্রকাশ কারাট বাহিনী তাঁকেই কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে। ঠিক যেমন ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে হারের জন্য কারাটকে দায়ী করেছিলেন ইয়েচুরিরা। হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের সময়ে পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-ত্রিপুরার বাইরেও কয়েকটি রাজ্যে সিপিএমের দু-একজন করে বিধায়ক ছিলেন। সে সবও হাতছাড়া করার জন্য কারাটকে দায়ী করা হয়েছিল।
এ বার কারাট-শিবিরের প্রশ্ন, ইয়েচুরি কেন ত্রিপুরার দায় নেবেন না! পাল্টা ইয়েচুরি-শিবিরের কটাক্ষ, সাধারণ সম্পাদক দু’দিনের জন্য ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। ত্রিপুরায় পড়ে ছিলেন বৃন্দা কারাট। শনিবার সকালেও জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি কেন বিজেপির হাওয়া টের পেলেন না!
আরও পড়ুন: মাছ-ভাত খাওয়ানো বাংলা শেখা মরাঠি
এপ্রিলে পার্টি কংগ্রেসের আগে ইয়েচুরির যুক্তি ছিল, বিজেপি এখন বড় বিপদ। তার মোকাবিলা একা সিপিএমের পক্ষে অসম্ভব। কংগ্রেস ও অন্যদের হাত ধরতে হবে। কারাটদের মতো ত্রিপুরা পার্টিও এর বিরোধিতা করেছিল। আজ ইয়েচুরি শিবিরের দাবি, ত্রিপুরার হারে তাঁদের ‘লাইন’ই প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। সব স্তরে আলোচনা হবে। পার্টি কংগ্রেসেই ফয়সালা হবে।’’
কারাট-শিবিরের প্রশ্ন, কী ভাবে জোট হবে? ত্রিপুরার কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাই এখন বিজেপিতে। বিহারে প্রদেশ সভাপতিই বিজেপিতে গিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের গত ভোটে ‘ইয়েচুরি-লাইন’ মেনে কংগ্রেস-সিপিএম জোটের পর থেকেই ত্রিপুরার কংগ্রেসে ভাঙন শুরু। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো সুদীপ রায়বর্মণের অভিযোগ, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বরাবর ত্রিপুরাকে দু’টি লোকসভা আসনের নিরিখেই দেখে এসেছে। কারাট-শিবিরের যুক্তি, ত্রিপুরায় বিজেপির জয় প্রমাণ করছে, পার্টির নিজস্ব শক্তি বাড়ানো আগে দরকার। ভোটে জয়ের কথা ভুলে নিজেদের মতাদর্শ আঁকড়ে পড়ে থেকে কাজ করতে হবে।
পলিটব্যুরো আজ অভিযোগ তুলেছে, বিজেপি অর্থের ক্ষমতায় ত্রিপুরায় জিতেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বিবাদরত নেতারা কি দলের অস্তিত্ব-সঙ্কট নিয়ে চিন্তিত? ইয়েচুরি ক’দিন আগে বলেছিলেন, সিপিএম-টা ‘কমিউনিস্ট পার্টি অব কেরল-মার্ক্সিস্ট’ নয়। আজ ওই মন্তব্যকেই একটু ঘুরিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়েছে— ‘সেই কেরলেই টিমটিম করে জেগে রইল সিপিএম।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy