ফাইল চিত্র।
আড়াই বছর পরে সুপ্রিম কোর্টে সিএএ বা নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে শুনানি হতে চলেছে।
সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে এখনও পর্যন্ত প্রায় শ’দুয়েক মামলা জমা পড়েছে। আড়াই বছর আগে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চ ইঙ্গিত দিয়েছিল, সিএএ-র বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চ, অর্থাৎ পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানো হতে পারে। আদালতঅবশ্য আইনে স্থগিতাদেশ জারি করতে রাজি হয়নি। আগামী সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর অবশ্য প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টের বেঞ্চেই শুনানি হতে চলেছে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই মোদী সরকার সংসদে সিএএ সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়েছিল।দেশ জুড়ে সিএএ-র বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে হিংসা ও সংঘর্ষে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৯-এরডিসেম্বরে সংসদে আইন পাশ হয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু তার পরে আড়াই বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও এই আইনের বিধিনিয়ম জারি হয়নি। ফলে সিএএ-র রূপায়ণও শুরু হয়নি। এক দিকে যেমন সিএএ-র বিরোধিতা হয়েছে, তেমনই পশ্চিমবঙ্গে মতুয়াদের মতো কিছু সংগঠন দ্রুত সিএএ চালু করার দাবি তুলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কোভিডের কারণে আইনের রূপায়ণ শুরু করা যাচ্ছে না বলে যুক্তি দিয়েছেন।
সিএএ-তে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানে নিপীড়নের শিকার ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সিদের জন্য সহজে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। বাদ গিয়েছিলেন মুসলিমরা। অমিত শাহর যুক্তি ছিল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশে মুসলিমরা নিপীড়নের শিকার হতে পারেন না। কিন্তু এ দেশে মানুষের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা সংবিধান বিরোধী বলে অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ভি গোপালগৌড়ার মতো একাধিক আইনজ্ঞ এই মত দিয়েছিলেন। সিএএ-র বিরুদ্ধে মামলাকারীদের মধ্যে যেমন ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগ, ডিএমকে-র মতো রাজনৈতিক দল রয়েছে, তেমনই একগুচ্ছ রাজনীতিক, মানবাধিকার সংগঠন, সমাজকর্মী সিএএ-র বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনারও এই মামলায় ‘আদালত বান্ধব’ হতে চেয়ে আর্জি জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট মোদী সরকারের বক্তব্য জানতে চাওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, সিএএ একেবারেই নিরীহ আইন। প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে এ দেশে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে সহজে নাগরিকত্ব পাইয়ে দিতেই আইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু মামলাকারীদের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই সিএএ-র পরে অসমের মতো গোটা দেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরির কথা বলেছিলেন। তা হলে এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সন্দেহজনক নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করেফেলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy