তিস্তার জল বাংলাদেশকে কতটা দেওয়া হবে এবং কী শর্তে, তা এখনও জানে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অভিযোগ তৃণমূলের। —ফাইল চিত্র।
তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে ফের প্রতিবাদ জানাল তৃণমূল। এ বার সংসদে সরব হলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্য সরকারকে কিছুই না জানিয়ে যদি তিস্তা চুক্তির শর্তাবলী চূড়ান্ত হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলে কোনও ভাবেই তাতে সিলমোহর দেবেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইঙ্গিত সৌগত রায়ের। জলের বণ্টন নিয়ে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আচরণ দু’রকমের, এমন মন্তব্যও এ দিন করেছেন তিনি।
গত ২৩ মার্চ এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তা চুক্তি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কেন্দ্র কিছু না জানালেও শীঘ্রই তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর হতে চলেছে বলে তিনি শুনেছেন, জানিয়েছিলেন মমতা। কী শর্তে চুক্তি হতে চলেছে, সে বিষয়েও রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে বিশদে না জেনে তিনি কিছুতেই তাতে অনুমোদন দেবেন না।
সোমবার সংসদে সৌগত রায় তুললেন তিস্তা প্রসঙ্গ। —ফাইল চিত্র।
সৌগত রায় সেই বিষয়টিই সোমবার তুললেন লোকসভায়। জিরো আওয়ারে তিনি বিষয়টির প্রতি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাংলার স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশকে জল দেওয়া যে রাজ্য সরকার মানবে না, তা তিনি জানিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তা চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা যদি সত্য হয়, সে ক্ষেত্রে এই চুক্তিতে বাংলার সরকার অনুমোদন দেবে না, বেশ স্পষ্ট করেই এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন সৌগত রায়।
আরও পড়ুন: গিলগিট-বাল্টিস্তান ভারতের, পাক দখলদারি অবৈধ: ব্রিটিশ পার্লামেন্ট
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি রয়েছে। উরিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে ভারত সরকার ওই চুক্তি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘রক্ত আর জল এক সঙ্গে বইতে পারে না।’ সিন্ধু চুক্তি অনুযায়ী যতটা জল পাকিস্তানে যাওয়ার কথা, তার চেয়ে একটুও বেশি জল যাতে পাকিস্তান না পায়, ভারত সরকার তা নিশ্চিত করতে চাইছে। পাকিস্তানের আপত্তি অগ্রাহ্য করে চন্দ্রভাগার উপর একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও ভারত তৈরি করছে। ভারতের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পাকিস্তানকে অতিরিক্ত জল দেওয়া হবে না, ভারত এমনই নীতি নিয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত উল্টো নীতি নিচ্ছে বলে সৌগত রায়ের অভিযোগ। দেশের ক্ষতি করে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত জল দেওয়া চেষ্টা মানা হবে না বলে তিনি সংসদে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy