লখনউ বিমানবন্দরে এ ভাবেই আটকে দেওয়া হয় অখিলেশ যাদবকে। ছবি: অখিলেশ যাদবের টুইটার অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।
ভয় পেয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। তাই তাঁকে লখনউয়ের বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এই ভাষাতেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দিকে অভিযোগের তির ছুড়লেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। সেই সঙ্গে একে ‘বিজেপি সরকারের একনায়কতন্ত্রের উদাহরণ’ বলেও আক্রমণ করেন তিনি। যদিও এই অভিযোগ খণ্ডন করে আদিত্যনাথের দাবি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থেই এ পদক্ষেপ করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। গোটা পর্বকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে অখিলেশের সমর্থনে মুখ খুলেছেন বসপা নেত্রী মায়াবতী। একে ‘উদ্ধত আচরণ’ বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেখানকার ছাত্র পরিষদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার কথা ছিল অখিলেশ যাদবের। কিন্তু সকালে লখনউয়ে চৌধরি চরণ সিংহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখতেই তাঁকে আটকে দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তা নিয়েও সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, “লখনউ বিমানবন্দরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ঢুকতেই পারে না। কারণ সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরা থাকে। তবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ক্ষমতার জোরেই বিমানবন্দরে ঢোকে পুলিশ এবং আমাকে আটক করে।” ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানটি যে আগে থেকেই তাঁর কর্মসূচির মধ্যে ছিল, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি।
অখিলেশ-কাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ও লখনউ বিমানবন্দরের বাইরে এবং প্রয়াগরাজে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সমাজবাদী পার্টির নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। ওই প্রতিবাদে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তাতে আহত হন সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব-সহ বেশ কয়েক জন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভাতেও হই-হট্টগোল করেন দলীয় বিধায়কেরা।
আরও পড়ুন: ‘আদালতের এক কোণে গিয়ে বসে থাকুন’, নাগেশ্বর রাওকে বলল সুপ্রিম কোর্ট
I was prevented from boarding the airplane without any written orders. Currently detained at Lucknow airport.
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) February 12, 2019
It is clear how frightened the govt is by the oath ceremony of a student leader. The BJP knows that youth of our great country will not tolerate this injustice anymore! pic.twitter.com/xtnpNWtQRd
অখিলেশ যাদব জানিয়েছেন, আগামিকাল এ নিয়ে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল রাম নায়েকের কাছে যাবেন তিনি। তবে যে ঘটনা নিয়ে অখিলেশ-কাণ্ডের সূত্রপাত, তা নাকি বিমানবন্দর ডিরেক্টররের গোচরেই আসেনি। এ দিন বিমানবন্দর ডিরেক্টর এ কে শর্মা দাবি করেন, “এ বিষয়ে কোনও তথ্য আমার কাছে নেই।”
লখনউ বিমানবন্দরের ঘটনার পরই আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন অখিলেশ। দুপুর ১২টা নাগাদ টুইটারে তিনি লেখেন, “উত্তরপ্রদেশ সরকার আসলে এতটাই ভয় পেয়েছে যে ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রনেতার শপথ-গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেও আমাকে বাধা দিয়েছে।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। তাঁর দাবি, “কোনও রকম লিখিত নির্দেশ ছাড়াই বিমানে ওঠায় আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিজেপি জানে যে দেশের যুবসমাজ এ ধরনের অবিচার আর সহ্য করবে না!”
তবে অখিলেশের দাবিকে অস্বীকার করে যোগী আদিত্যনাথের পাল্টা দাবি, “অখিলেশের উপস্থিতিতে ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন সেখানকার কর্ত়ৃপক্ষ। ছাত্র ইউনিয়নগুলির মধ্যে মতপার্থক্যের জন্যই এমনটা হতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই অনুরোধ করেছিলেন। সে কারণেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।” একটি বিবৃতিতে সমাজবাদী দলের ‘স্বৈরাচারী কাজকর্ম’ বন্ধেরও দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে কাল মহাসমাবেশ, আজ রাতেই পৌঁছচ্ছেন মমতা, রাজধানী সরগরম
Extremely condemnable that Samajwadi Party President and former UP Chief Minister Akhilesh Yadav was stopped at Lucknow airport today in order to prevent him from attending programme in Allahabad. This is anti-democratic and an example of total dictatorship of BJP government.
— Mayawati (@Mayawati) February 12, 2019
তবে আদিত্যনাথের মন্তব্য নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অখিলেশ। তাঁর দাবি, ‘নিজের ভয় চাপা দিতেই’ আদিত্যনাথ এমনটা করিয়েছেন। অখিলেশের কথায়, “যদি সত্যিকারের কোনও সমস্যা হত, তবে তো সেখানকার পুলিশই বাধা দিত। অথবা আমার কর্মসূচিতে বদল ঘটাতে বলত!”
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে মহিলা মন্ত্রীর ‘গায়ে হাত’! প্রতিবাদে বামেদের মিছিল
এই ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতী। এর তীব্র নিন্দা করে টুইটারে তাঁর কটাক্ষ, “কেন্দ্রে ও উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকার কি বিএসপি-সপা জোটকে এতটাই ভয় পেয়েছে যে আমাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপও এখন অগণতান্ত্রিক উপায়ে রুখে দিচ্ছে?”
Extremely condemnable that Samajwadi Party President and former UP Chief Minister Akhilesh Yadav was stopped at Lucknow airport today in order to prevent him from attending programme in Allahabad. This is anti-democratic and an example of total dictatorship of BJP government.
— Mayawati (@Mayawati) February 12, 2019
মায়াবতীর মতোই অখিলেশের স্বপক্ষে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে টুইটারে তিনি লিখেছেন, “আমরা সকলেই বিজেপি নেতাদের এ ধরনের উদ্ধত আচরণের নিন্দা করছি, যাঁরা পড়ুয়াদের এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়াতে অখিলেশকে বাধা দেন।” তাঁর প্রশ্ন, “আমাদের দেশে কি গণতন্ত্র নেই নাকি? আর তাঁরা সকলকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে!”
শুধুমাত্র মায়াবতী বা মমতাই নন, বিষয়টি নিয়ে সংসদেও সরব হন অখিলেশের দলের সাংসদেরা। মূলত তাঁদের শোরগোলেই রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy