Advertisement
E-Paper

‘ক্ষতি হয়তো কুকথাতেও’, দিল্লি হারের ব্যাখ্যায় অমিত

শাহ-সহ বিজেপির সব নেতা জানতেন, দিল্লিতে এ বার জমি তৈরি ছিল অরবিন্দ কেজরীবালের পক্ষে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪১
নয়াদিল্লিতে বিমস্টেক সম্মেলনে অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।

নয়াদিল্লিতে বিমস্টেক সম্মেলনে অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।

নিজেকেই বাজি রেখে অবতীর্ণ হয়েছিলেন দিল্লি ভোটে। বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পর দু’দিন প্রকাশ্যে আসেননি! আজ দেখা দিলেন অমিত শাহ। আগে ঘনিষ্ঠ মহলে যা বলেছিলেন, আজ সকলের সামনেই বললেন সেটা। হার কবুল করে জানালেন, দিল্লি ভোট মূল্যায়নে তাঁর ‘ভুল’ হয়েছিল। ‘চাণক্য’ তকমাও আর চান না তিনি। একই সঙ্গে স্বীকার করলেন, ‘দেশকে গদ্দারকো, গোলি মারো শালো কো’ বা ‘দিল্লি ভোট ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ’— বিজেপি নেতাদের এ ধরনের মন্তব্যের জন্যও ভোটে খেসারত দিতে হয়ে থাকতে পারে। এ সব বলা ‘উচিত’ হয়নি।

শাহ-সহ বিজেপির সব নেতা জানতেন, দিল্লিতে এ বার জমি তৈরি ছিল অরবিন্দ কেজরীবালের পক্ষে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী, রাজনাথ সিংহ, জগৎপ্রকাশ নড্ডাদের সঙ্গে বৈঠকে শাহই আস্থা জুগিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দিল্লি বার করে নেবেন। মেরুকরণই হবে প্রধান অস্ত্র। তখনই স্থির হয়, শাহিন বাগই হবে প্রধান ‘প্রতিপক্ষ’। প্রচারে শাহ বলেছিলেন, ‘‘ইভিএমের বোতাম এত জোরে টিপুন যেন শাহিন বাগে কারেন্ট লাগে।’’ অনুরাগ ঠাকুর, কপিল মিশ্রেরাও মেতে উঠেছিলেন বিতর্কিত মন্তব্যে। শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের নিশানা করে বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা বলেছিলেন, তাঁরা নাকি ধর্ষণ করতে পারেন। আজ শাহের অবশ্য বক্তব্য, এমন কোনও কথা বলা হয়নি। যা-ই হোক, শেষ পর্যন্ত দিল্লির ৭০ আসনে বিজেপির মাত্র ৮, কেজরীবালের ৬২।

অথচ এই ভোট জিততে শাহ আয়োজন করেছিলেন ৫ হাজারের বেশি সভা। শত শত বিজেপি নেতা ছুটেছেন দিল্লির অলিতে-গলিতে। শাহ নিজেও দুই ডজনের বেশি সভা করেছেন। এত মেহনতের পরেও হার? ৪৫টি আসন পাওয়ার দাবি কী হল? এক চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এই প্রশ্নের জবাবে শাহ বলেন, ‘‘পরিশ্রম সব ভোটেই করি। আর হার এই প্রথম বার হয়নি। ভেবেছিলাম, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, মূল্যায়ন ভুল হয়েছে। আমার বেশির ভাগ মূল্যায়ন ঠিক হয়, এ বার ভুল হল।’’ তবে তাঁর দাবি, এই হারের সঙ্গে সিএএ-প্রতিবাদের যোগ নেই।

নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য সম্পর্কে শাহ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাঠিপেটা’ করা নিয়ে রাহুল গাঁধীর মন্তব্যের মতো বিজেপি নেতাদের বক্তব্যও দুর্ভাগ্যজনক। উচিত হয়নি। দল তখনই দূরত্ব তৈরি করেছে। হতে পারে এরও খেসারত দিতে হয়েছে ভোটে।’’ যা শুনে বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোট-প্রচার চলাকালীন কেন মুখ বুজে ছিলেন শাহ? কেন কুমন্তব্য করা নেতাদের প্রচার নির্বাচন কমিশন নিষিদ্ধ করলেও তাঁদের দিয়ে সংসদে বলানো হয়েছিল? ওই বিরোধী নেতাদের মতে, শাহ আজ ভুল কবুল করেননি। স্বীকার করেছেন তাঁর কৌশল কাজে আসেনি, এই মাত্র।

দিল্লিতে বিজেপি নেতারা অবশ্য বলছেন, এ সব কথার কথা। ভোটের সময় হতেই থাকে। কিন্তু আজ নড্ডা দীর্ঘ বৈঠক করেন দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে। হারের দায় কে নেবেন, তা আলোচনা করতে। খোদ শাহের ‘বিনম্রতার সঙ্গে হার’ কবুল করাটা এক দিক থেকে ভালই হল বলে তাঁদের অভিমত।

দিল্লির প্রচারে শাহকে ‘চাণক্য’ বলেই মেলে ধরা হয়েছিল। আজ শাহ বলেন, ‘‘এ সব তাৎক্ষণিক তকমা আসে-যায়। কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর ৫০ বছর পর ইতিহাসে তাঁর অবদান লেখা হয়। আমার সে সব নেই। আর চাণক্য পড়েছি, বুঝেছি বলে জানি, কী তাঁর উচ্চতা। অমিত শাহ বেচারা অনেক ক্ষুদ্র ব্যক্তি, কোনও তুলনাই হয় না।’’

Delhi Election 2020 Amit Shah BJP AAP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy