উপহার: অমিত শাহের সঙ্গে যোগী আদিত্যনাথ। রবিবার লখনউয়ের অনুষ্ঠানে। পিটিআই
দু’বছর আগে বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে যখন একাধিক নেতাকে সরিয়ে যোগী আদিত্যনাথকে বেছে নিয়েছিল দল, তখন অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। এ নিয়ে কথাও কম হয়নি। দু’বছর পরে হঠাৎই যোগীকে বেছে নেওয়ার সেই ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আর তাঁর সেই ব্যাখ্যা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গেল।
রবিবার লখনউয়ে ৬৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে হঠাৎই যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করেন বিজেপি সভাপতি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে গোরক্ষনাথ মন্দিরের প্রধান যোগী যে কোনও দিন প্রশাসনিক কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তা মেনে নিয়েই অমিত বলেন, ‘‘কেউ ভাবেননি যোগী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তখন অনেকেই আমাকে বলেছিলেন, যোগী কখনও কোনও পুরসভাও পরিচালনা করেননি। তা হলে তাঁকে কেন এত বড় একটা রাজ্যের ভার দেওয়া হচ্ছে? কেন মুখ্যমন্ত্রী করা হচ্ছে? এটা ঠিক, তিনি কখনও পুরসভাও চালাননি। তিনি একটি মন্দিরের প্রধান ছিলেন। কিন্তু আমি এবং নরেন্দ্র মোদীজি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের লক্ষ্য ছিল দায়বদ্ধতা, আনুগত্য এবং পরিশ্রমের ক্ষমতা। যোগী কাজের লোক এবং নিজের কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণও করে নিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন, ওই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল।’’ অমিতের দাবি, উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের হাত ধরেই ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন ছোঁবে ভারত।
কিন্তু বিজেপি শিবিরেরই একাংশ অমিতের এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, যোগী ছিলেন অমিতের পছন্দ। দেশের বৃহত্তম এবং রাজনৈতিক ভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উগ্র হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ যোগীকে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না মোদী। কিন্তু অমিতের চাপেই তাঁকে মানতে হয়েছিল। আজ যোগীর প্রশংসার ছলে অমিত কি তা হলে প্রকারান্তরে মোদীকেই বার্তা দিলেন? অমিত কি বোঝালেন যে, তিনি প্রশাসনিক কাজে অনভিজ্ঞ কোনও নেতাকেও সফল প্রশাসক করে তুলতে পারেন?
প্রকাশ্যে অবশ্য কেউ এ সব কথা মুখেও আনছেন না। অনেকেই মনে করাচ্ছেন, ২০১৩ সালে উত্তরপ্রদেশে দলীয় সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেন অমিত। তার পরেই ২০১৪-র লোকসভা এবং ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বিরোধীদের কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বিপুল সাফল্য পায় বিজেপি।
যদিও উত্তরপ্রদেশে যোগীর শাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিস্তর। যোগী-রাজ্যে সংখ্যালঘু এবং দলিতদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা প্রতিদিন বাড়ছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে খুন, ধর্ষণ, নারী-নিগ্রহের ঘটনাও ক্রমবর্ধমান। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা পূর্ব উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের দায়িত্ব নেওয়ার পরে নানা ভাবে যোগী প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন। যোগীর সরকার পরিচালনা নিয়ে কথা উঠছে বিজেপির অন্দরেও। এই অবস্থায় ফের যোগীর পাশে অমিতের দাঁড়ানো তাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy