আইপিএস আধিকারিক রাকেশ বলওয়াল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দুই পড়ুয়ার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর। এই পরিস্থিতিতে সে রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি কাশ্মীর থেকে উড়িয়ে আনা হচ্ছে মণিপুর ক্যাডারের আইপিএস আধিকারিক রাকেশ বলওয়ালকে। বর্তমানে শ্রীনগরে পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেডেন্ট পদে কর্মরত রয়েছেন রাকেশ। কিন্তু দ্রুত তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে মণিপুরে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচিত রাকেশের অভিজ্ঞতাকে মণিপুরে হিংসা থামাতে কাজে লাগাতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
মণিপুর ক্যাডারের আইপিএস অফিসার হওয়ায় রাকেশ রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিশেষ ভাবে ওয়াকিবহাল থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রায় এক মাস আগেই কিছু পুলিশ আধিকারিককে সে রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এত দিনে সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি। কমিটির প্রস্তাব অনুমোদন পাওয়ার পরেই রাকেশকে বদলি সংক্রান্ত কাজকর্ম দ্রুত গতিতে এগোতে শুরু করে।
দুই পড়ুয়াকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনার জেরে ক্রমশই নতুন করে অশান্ত হচ্ছে মণিপুর। বুধবার সন্ধ্যায় সেই অশান্তির পরিণতিতেই হামলা হল পাহাড়ি জেলা থৌবলের বিজেপি দফতর। সেখানে অবাধে ভাঙচুর চালানোর পরে আগুন ধরায় উত্তেজিত জনতা। জেলা বিজেপির দফতরে রাখা কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ। গোষ্ঠীহিংসার কারণেই নিরপরাধ দুই মেইতেই ছাত্রছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুকি দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে রাজধানী ইম্ফল-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেছে মেইতেই সংগঠনগুলি। মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে গত ছ’মাসে প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy