অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়ায় চল্লিশ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার পর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সকলকেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লিতে বিজেপি দফতরে বসে নিজেরই দলের সর্বভারতীয় সভাপতির কথায় সায় দিলেন না অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে তার আগে সোনোয়াল কংগ্রেসকে দুষে নরেন্দ্র মোদীর গুণ গাইছিলেন। মোদীর জন্যই যে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি হয়েছে, সীমান্ত ‘সিল’ হচ্ছে, এনআরসি না হলে যে অনুপ্রবেশকারীদের বাছা যেত না, সে সব বলে প্রধানমন্ত্রীরই প্রশস্তি করছিলেন। এরপরেই সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, অমিত শাহ যে বাদ পড়া সকলকেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলেছিলেন, তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কী একমত? সরাসরি জবাব এড়িয়ে সোনোয়াল শুধু বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই গোটা প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত নতুন করে আবেদন জমা নেওয়া হবে।’’
সাংবাদিকদের লাগাতার প্রশ্নেও অমিত শাহের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেননি তিনি। পাশাপাশি, ভিন্ন মতও পোষণ করলেন না। বরং সংবিধানের পথেই তাঁর সরকার চলবে বলে এড়িয়ে গেলেন জবাব। অমিত শাহের মন্তব্যের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য বিরোধী দলও তীব্র আপত্তি তোলে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি আসলে মেরুকরণের তাস খেলছে। এক দিকে এনআরসি, অন্য দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে শুধু হিন্দুদের আড়াল করতে চাইছে বিজেপি। সোনোয়াল আজ এই বিল নিয়েও সরাসরি জবাব এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন রয়েছে।’’ গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট এনআরসির দাবি ও আপত্তি জমা দেওয়ার সময় বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করেছে। যে ৪০ লক্ষেরও খসড়াছুটের মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ পুনরায় আবেদন করেছেন।