ডাঁই হয়ে জমে থাকা লাল টুকটুকে টোম্যাটো বিক্রি হচ্ছে দু’টাকা কিলো দরে। আর পাইকারি দাম এক টাকা থেকে দেড় টাকা পাল্লা। তাও নেই খদ্দের। এখানেও ‘আসামীর কাঠগড়ায়’ সেই নোট বাতিল কাণ্ড। অন্তত কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবি তেমনই। তবে তাকে বিশেষ পাত্তা দিতে রাজি নন ‘ক্যাশলেস’ রাজ্যের কাণ্ডারী, প্রশাসনিক কর্তারা।
রাঁচী থেকে ঘন্টাখানেকের দূরত্বে লোহারডাগার কায়রো ব্লকের ছোট্ট গ্রাম উতপা। গ্রাম ছোট হলে কী হবে, শীতকাল এলেই এই গ্রামের জমজমাট পাইকারি বাজারে ভিন রাজ্যের, বিশেষ করে কলকাতার ব্যবসায়ীদের ট্রাকের লাইন লেগে যায়। এ বার উধাও সেই লাইন! চাষীদের মতে, নোট বাতিলে আড়তদারদের ট্রাক গ্রামের পথ ভুলে গিয়েছে। আদিত্য যাদব নামে এক কৃষকের কথায়, ‘‘এ বার টোম্যাটোর ফলন অন্য বারের থেকে ভাল। কিন্তু তা বলে দাম এতটা পড়ে যাওয়ার কথা নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, যে কয়েক জন ক্রেতা এসেছিলেন তাঁরা বলছেন, হাতে নগদ টাকা কম। তাই বেশি কিনতে পারবেন না।
টোম্যাটোর দাম এ ভাবে পড়ে যাওয়ার জন্য নোট বাতিলকেই দায়ি করছেন কৃষকরা। সঞ্জয় পাণ্ডা নামে আর এক কৃষকের বক্তব্য, ‘‘আমরা কলকাতা থেকে আসা ট্রাকগুলির উপরেই নির্ভর করি। ওরা বলছেন, হাতে নগদ না থাকায় এতদূরের এই পাইকারি বাজারে আসছেন না।’’ নইম খান নামে এক স্থানীয় চাষী জানান, চাষের জন্য এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। এখন খেত থেকে বাজার পর্যন্ত টোম্যাটো আনার ভ্যান ভাড়াটাও উঠছে না। এর উপর অবিক্রিত টোম্যাটো ফের ফেরত নিতে গেলে দ্বিগুণ লোকসান। সে কারণে অনেকে টোম্যাটো খেত থেকেই তুলছেন না। শুধু টোম্যাটোই নয় তাদের পাইকারি বাজারে মটরশুটিরও কদর রয়েছে। সেই মটরশুটির দামও এবার নেমে গিয়েছে পাঁচ টাকায়।
রাজ্যের কৃষি নির্দেশক জটাশঙ্কর চৌধুরী বা উদ্যান বিভাগের নির্দেশক রাজীব কুমার কৃষকদের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। রাজীববাবুর মতে, ‘‘এবার ফলন বেশি হয়েছে। তাই সব সব্জির দামই কমেছে।’’ অন্য দিকে, জটাশঙ্করবাবুর বক্তব্য, ‘‘নোট বাতিলে প্রথম কয়েক দিন সব্জির পাইকারি বাজারে মন্দা থাকলেও এখন নগদ টাকা এসে গিয়েছে। তবু কেন চাষিদের এই অভিযোগ তা খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy