রাস্তাঘাট সংস্কারে খানিকটা হলেও আর্থিক স্বাধীনতা পেল বরাক উপত্যকা। শিলচরে পূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের উদ্বোধন হয়েছে। ছোটখাটো মঞ্জুরির জন্য আর গুয়াহাটি-দিসপুর ছুটতে হবে না। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে কাজকর্মে তদারকি বাড়বে, বাড়বে কাজের গুণমানও।
পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য আজ অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের উদ্বোধন করেন। সঙ্গে ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল। হাজির ছিলেন কাছাড়ের সব বিজেপি বিধায়ক। তাঁদের সঙ্গে হাইলাকান্দির বিতর্কিত এআইইউডিএফ বিধায়ক আনোয়ার হুসেন লস্করও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। লস্করের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিজেপির সঙ্গে বেশি মাখামাখি করছেন। দূরত্ব বাড়াচ্ছেন নিজের দলের সঙ্গে।
পরে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জানিয়েছেন, এই অফিসটির জন্য বরাকের মানুষকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। রাস্তাঘাট নিয়ে এত যে ভোগান্তি, এর একটি বড় কারণ, এখানে অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিস না থাকা। এ বার কাজে গতি বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। তাঁর কথায়, নানা ধরনের সমস্যা লেগে থাকে পূর্ত বিভাগের কাজকর্মে। অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদাধিকার বলে সে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী। ফলে খুব বড় অঙ্কের লেনদেনের ব্যাপার না থাকলে এখন আর সিদ্ধান্ত নিতে কারও অপেক্ষার প্রয়োজন পড়বে না।
মন্ত্রী জানান, এই সময়ে রাজ্যে দু’হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। তার মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা রাজ্যের গ্রামীণ সড়কগুলির জন্য বরাদ্দ হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আটমাসে ২৯৩ কিলোমিটার রাস্তাকে জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, শিলচরে উড়ালপুলের জন্য পূর্ত দফতর বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির কাজে হাত দিচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য রাজ্যের বিশেষজ্ঞদেরও সহায়তা নেবে সরকার। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালের মার্চে শিলচর বাইপাসের কাজ শেষ হবে। নির্মিত হবে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরও। বরাক উপত্যকায় ডবল রেল লাইনের কাজও হবে বলে রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই তাঁকে জানিয়েছেন বলে পরিমলবাবু জানান।
পরিমলবাবু এ দিনও পূর্ত কর্তাদের সতর্ক করে দেন, কংগ্রেস আমলের সেই সব লাইন শেষ। এখন বিজেপির ট্র্যাক। কোনও ধরনের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। শুনিয়ে দেন, আবগারি বিভাগে দুর্নীতির দায়ে ৮ মাসে ১৬ জনকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঠিকাদারদেরও আজ এক হাত নেন পরিমলবাবু। বকেয়া মেটানোর দাবিতে তাঁরা কিছুদিন আগে যে আন্দোলন করেছিলেন, তা কাদের উস্কানিতে হয়েছিল মন্ত্রী সেটা জানতে চান। পরিমলবাবু বলেন, ‘‘এখন টাকা এসেছে। তাঁদের হিসেব দিয়ে টাকা নিতে ডাকা হচ্ছে। সাড়া মিলছে না।’’ এদিনের অনুষ্ঠানে ঠিকাদারদের অনুপস্থিতির দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘‘বিভাগীয় কর্তারা সবাই আজ এসেছেন। কিন্তু ঠিকাদাররা আসেননি।’’ মন্ত্রীর অভিযোগ, ঠিকাদারদের একাংশ বরাকের রাস্তাকে গিলেছেন, খেয়েছেন। আগে যাই করুন, এখন কোনও ধরনের গাফিলতি হলে কাউকেই তিনি রেহাই দেবেন না বলে পরিমলবাবু হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হবে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মী-অফিসারদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy