Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নকল পুরোহিত থেকে সাবধান

দুর্গাপুজোয় নকল পুরোহিত! কথাটা শুনলে একটু অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু বেশ কিছু অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি চিন্তায় ফেলেছে আয়োজকদের। আর তাই ‘নকল’ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজধানীর পুজোমণ্ডপগুলি।

সুমনা কাঞ্জিলাল
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৫ ২০:১০
Share: Save:

দুর্গাপুজোয় নকল পুরোহিত! কথাটা শুনলে একটু অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু বেশ কিছু অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি চিন্তায় ফেলেছে আয়োজকদের। আর তাই ‘নকল’ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজধানীর পুজোমণ্ডপগুলি।

বিতর্কের শুরু পুজো কমিটির কিছু সদস্যের অভিজ্ঞতা থেকে। অভিযোগ, প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর ঠিক আগে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর, মালদহ ইত্যাদি জেলা থেকে পুরোহিতের কাজ করতে দিল্লিতে পাড়ি দেন এমন অনেক মানুষ,যাঁরা আদৌ ব্রাহ্মণ নন। এরকম কিছু ‘নকল ব্রাক্ষ্মণ’ আসেন ওড়িশা থেকেও। কিন্তু দিল্লিতে পৌঁছে তাঁরা উপবীত ধারণ করে নিজেদের আসল নাম-পদবী গোপন করে ব্রাহ্মণ পরিচয় দিয়ে পুজোর কাজ জুটিয়ে নেন। দুর্গাপুজোয় বেশ ভাল অঙ্কেরই দক্ষিণা পান পুরোহিতরা।

কিন্তু কী ভাবে পুজোর কাজ জোটান এই নকল পুরোহিতরা? প্রথমেই দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মন্দিরগুলিতে যোগাযোগ করেন এঁরা। তারপর সেই সব মন্দিরের পুরোহিতদের ‘সম্মতি’তেই তাঁরা হয়ে যান তাঁদের সহচর। কিন্তু ধর্মাচরণে বিশ্বাসী হিন্দুরা যেখানে ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য শ্রেণির মানুষকে তাঁদের পূজারী হিসেবে মেনে নিতে পারেন না, সেখানে কী ভাবে এমন তথাকথিত অশ্রাস্ত্রীয় ঘটনায় নিজেদের জড়িয়ে ফেলেন পুরোহিতরা?

লোধি রোড কালিবাড়ীর প্রধান পুরোহিত অদ্রিজাশঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বর্তমানে বৃহত্তর দিল্লিতে মোট দুর্গাপুজোর সংখ্যা প্রায় ৭০০। পুজোর বিশাল ধর্মাচার কখনই একজন পুরোহিতের পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। চার দিনের পুজোয় এক জন প্রধান পুরোহিতের তিন জন সহকারীর প্রয়োজন হয়।’’

লক্ষ্মীবাঈনগর দুর্গাপুজো সমিতি (গৃহকল্যান কেন্দ্রের)সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘‘গত বছর কাঁথি থেকে আসা জনৈক সলিল মণ্ডল হাতেনাতে ধরা পড়ে। সে নিজের পরিচয়ে গোপন করে পদবী পরিবর্তনে হয়ে যায় সলিল ভট্টাচার্য। তাই এ বছর আমরা সতর্ক।’’

মাতৃমন্দিরের প্রধান পুরোহিত মুকুলবিকাশ মিশ্র এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মানতে রাজি নন। তাঁর দাবি, দিল্লিতে বহু জায়গায় উনি নিজের দায়িত্বে পুরোহিত পাঠান এবং টোলের প্রকৃত পণ্ডিত ছাড়া কাউকেই পাঠান না। কিন্তু গাজিয়াবাদের অভীক ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর প্রায় শ’খানেক পুরোহিত এখানে আসেন। সকলের প্রকৃত পরিচয়পত্র থাকে না।

এখানেই শেষ নয়। জানা যাচ্ছে যে দুর্গাপুজোর মরসুম শেষ হলেও এঁদের অনেকেই আর ফেরেন না দিল্লি থেকে। বরং পুরোহিতগিরির মতো লাভজনক পেশাকেই অবলম্বন করে থেকে যান। কে না জানে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durga puja priest fake sumana kanjilal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE