Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জন সুরক্ষা আইনে বন্দি হলেন ফারুক আবদুল্লা

সংসদের অধিবেশন চলার সময়েই বিরোধী সাংসদরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ফারুক আবদুল্লা কোথায়?

ফারুক আবদুল্লা।

ফারুক আবদুল্লা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫১
Share: Save:

গত মাসের ৫ তারিখে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে গৃহবন্দি করেছিল। সোমবার বিতর্কিত ‘জম্মু ও কাশ্মীর জন সুরক্ষা আইন’ প্রয়োগ করা হল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে লোকসভার সদস্য ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে, যার বলে বিনা বিচারে দু’বছর পর্যন্ত আটক করে রাখা যাবে এই কাশ্মীরি রাজনীতিককে। কেন্দ্র ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদ করার পর থেকে ফারুক ছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরের আরও দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিকেও গৃহবন্দি করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে উপত্যকার ৩৮ জন রাজনৈতিক নেতাকে। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এই আইন বাতিলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ন্যাশনাল কনফারেন্স। সেই আইনেই বিদ্ধ করা হল ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ৮১ বছরের ফারুক আবদুল্লাকে।

সংসদের অধিবেশন চলার সময়েই বিরোধী সাংসদরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ফারুক আবদুল্লা কোথায়? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বলেন, ‘‘ফারুককে আটক করা হয়নি। উনি বাড়ি থেকে না বেরোলে কানের গোড়ায় বন্দুক ঠেকিয়ে তো আর নিয়ে আসতে পারব না!’’ এ দিন সুপ্রিম কোর্টে ফারুকের গৃহবন্দিত্ব নিয়ে মামলার সওয়াল চলার মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে জন সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করে প্রশাসন। শুনানির সময়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, উনি কি সত্যিই গৃহবন্দি? মেহতা বলেন, ‘‘বিষয়টি জেনে বলতে হবে।’’ সিপিএম মেতা মহম্মদ সেলিম এ দিন টুইটে বলেন, ‘ফারুক আবদুল্লাকে আটক করা নিয়ে অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যা ঘোষণা করেছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা কি রইল?’ টুইটে অমিতের সেই বক্তৃতার ভিডিয়োও তিনি জুড়েছেন। কংগ্রেস-সিপিআইও ফারুকের বিরুদ্ধে জন সুরক্ষা আইন প্রয়োগের প্রতিবাদ করেছে।

সরকারি সূত্রের খবর, আজ সকালে শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনারের সই করা নির্দেশনামাটি ফারুকের হাতে দেওয়া হয়। তাঁকে নিজের বাড়িতেই আটক করে রাখা হবে, না কারাগারে পাঠানো হবে, সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, তাঁর বাড়িকেই জেল ঘোষণা করে সেখানেই ফারুককে রাখা হবে। কেন তাঁর বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ তার একটি ইঙ্গিত মিলেছে সরকারি নোটে। জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন আজ সুপ্রিম কোর্টে এই নোেট জানিয়েছে, ফারুক উপত্যকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন। তাদের যুক্তি— কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারানোয়, ফারুকের মতো এত দিন যাঁরা রাজ্যে ক্ষমতা ভোগ করেছেন, তাঁরা এবং প্রভাবশালী বিচ্ছিন্নতবাদীরা ধাক্কা খাবেন। উপত্যকায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোয় তাঁরা উঠেপড়ে লাগবেন।

ফারুক আবদুল্লার বাড়ির সামনে আধাসেনার টহল। সোমবার। ছবি: এপি

কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এ দিন বলেন, ‘‘প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রী কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করেছেন। বাজপেয়ী সরকারে ফারুক মন্ত্রীও ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে এই অবিচার অযৌক্তিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE