Advertisement
E-Paper

যোরহাটে ভাঙল বাঁধ, আতঙ্কিত গুয়াহাটি

বন্যার তোড়ে প্রায় একশো মিটার বাঁধ ভেঙে যোরহাটের ৪০টি গ্রাম ডুবিয়ে দিল ভোগদৈ নদী। অন্য দিকে, জমা জলের সঙ্গে ঘর করা গুয়াহাটিতে রোগ ছড়াবার আশঙ্কায় রয়েছে প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে অন্যান্য জেলাগুলিতে। তবে এখনও পাঁচটি জেলা বন্যাকবলিত। ধুবুরি ও যোরহাটে ব্রহ্মপুত্র ও গোলাঘাটে ধনসিরি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৬ ০২:২৭
বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে তৎপর সেনা। মালৌঘাটে। — নিজস্ব চিত্র

বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে তৎপর সেনা। মালৌঘাটে। — নিজস্ব চিত্র

বন্যার তোড়ে প্রায় একশো মিটার বাঁধ ভেঙে যোরহাটের ৪০টি গ্রাম ডুবিয়ে দিল ভোগদৈ নদী। অন্য দিকে, জমা জলের সঙ্গে ঘর করা গুয়াহাটিতে রোগ ছড়াবার আশঙ্কায় রয়েছে প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে অন্যান্য জেলাগুলিতে। তবে এখনও পাঁচটি জেলা বন্যাকবলিত। ধুবুরি ও যোরহাটে ব্রহ্মপুত্র ও গোলাঘাটে ধনসিরি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

ভোগদৈয়ের বাঁধ ভাঙার পরে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ বন্যা কবলিতদের উদ্ধারে নামে। জল বাড়তে থাকায় নামানো হয় সেনা। তার মধ্যেই বন্যা দেখতে এসে এ দিন স্থানীয় গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়েন সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র গৌরব গগৈ। যোরহাটের যে জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে সেই মালৌখাট এলাকা গৌরবের কলিয়াবর কেন্দ্রের অন্তর্ভূক্ত। স্থানীয় বিধায়ক বি ভরালি এখনও সেখানে আসেননি। বন্যার্তদের অভিযোগ, গত দু’দিন ধরে খাবার জলটুকুও পাননি তাঁরা। স্থানীয় সার্কেল অফিসার জানান, শুধু ওই ৪০টি গ্রামেই ৫০ হাজার মানুষ ঘর ছাড়া। পুরোপুরি জলের তলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি। এমন ঘটনা ওই এলাকায় আগে কখনও ঘটেনি। চারটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার দশেক মানুষ। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তার দেড় কিলোমিটার অংশও পুরো জলের তলায়। গ্রামবাসীদের উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেওয়া পুলিবরের ওসি হৃষিকেশ হাজরিকা জানান, বাঁধ ভাঙায় মানুষ বা প্রশাসন প্রস্তুতির সময়টুকুও পায়নি। মিনিট কয়েকের মধ্যেই জল বুক ছাড়িয়ে উঠে যায়। তিনি জানান, আজ জল এক ফুট মতো নীচে নামলেও বন্যার তোড় রয়েছে। বাঁধও দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে। জেলাশাসক রোশনি অপরাঞ্জি কোরাতি জানান, পরিস্থিতি এখনও সংকটজনক। ভোগদৈ নদীর জলে তীব্র স্রোত। প্রাণহানি না হলেও এক বৃদ্ধ জখম হয়েছিলেন। তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মাজুলিতে বন্যার কবলে পড়েছে ২০টি গ্রাম। সেখানে দুই হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে গিয়েছে। গোলাঘাট জেলায় ধনসিরি নদীর বাঁধ ভেঙে বানভাসি মরঙ্গি এলাকা। নামনি অসমের ধুবুরি, বঙাইগাঁও, বরপেটা, নলবাড়িতেও বন্যার জল গ্রামগুলিতে ঢুকছে।

এ দিকে গুয়াহাটির অনিল নগর, নবীন নগর, বিরুবাড়ি, তরুণ নগর, রাজগড়ের মতো নিচু অংশগুলি থেকে জমা জল এখনও না নামায় ওই সব অংশের বাসিন্দারা শোচনীয় অবস্থায় রয়েছেন। কমছে পানীয় জলের সরবরাহ। বাড়ছে মশা, কীটপতঙ্গ ও জলবাহিত রোগের আশঙ্কা। সব ক’টি এলাকায় জল সরবরাহের পাইপ, অগভীর নলকূপ, কুয়োগুলি জমা জলের নীচে। বৃহস্পতিবারের বৃষ্টির জল নামার আগেই আজ ফের বৃষ্টি হয়। জেলাশাসক এম আঙ্গামুথু জানান, জলমগ্ন সব এলাকায় পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক দিকে, মেঘালয়ের দিক থেকে জল ঢুকছে শহরের খানাপাড়া, বেলতলার দিকে। অন্য দিকে, ব্রহ্মপুত্রের জলও শহরে ঢুকে পড়ছে। তাই জল বের হওয়ার জায়গাই নেই। শহরের বিভিন্ন অংশে জল সরার পরে পিচের প্রলেপ উঠে রাস্তার বেহাল দশা।

বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আজ রাজ্যের বেশ কিছু অংশে বন্যার জল নেমেছে। বন্যা কবলিত জেলার সংখ্যা এখন পাঁচটি। সেগুলি হল লখিমপুর, গোলাঘাট, মরিগাঁও, বরপেটা, যোরহাট। ১৩৮ গ্রামের মোট এক লক্ষ পাঁচ হাজার ৬৫৫ জন মানুষ বন্যা কবলিত।

Jorhat guwahati bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy