Advertisement
০৪ মে ২০২৪

মাউস-ডিয়ার, চারশিঙা হরিণ পলামুতে

ব্যাঘ্র-সুমারির জন্যই গভীর জঙ্গলে বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। ক্যামেরায় একটা বাঘও ধরা পড়েনি। তবে ধরা যা পড়ল তাতেই উল্লসিত পলামুর বন দফতরের আধিকারিকরা।

মাউস-ডিয়ার। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

মাউস-ডিয়ার। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে

আর্যভট্ট খান
রাঁচি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১৪
Share: Save:

ব্যাঘ্র-সুমারির জন্যই গভীর জঙ্গলে বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। ক্যামেরায় একটা বাঘও ধরা পড়েনি। তবে ধরা যা পড়ল তাতেই উল্লসিত পলামুর বন দফতরের আধিকারিকরা।

ক্যামেরার ছবি দেখত দেখতে তাদের চোখে পড়েছে এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতার ছোট্ট হরিণ—মাউস ডিয়ার। শুধু দেড় ফুটের হরিণই নয় ধরা পড়েছে চার শিংওয়ালা এক বিশেষ প্রজাতির হরিণও (ফোর হর্ন অ্যান্টিলোপ)। পলামু টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের ডিরেক্টর সঞ্জয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এই প্রথম পলামুর জঙ্গলে মাউস ডিয়ারের সন্ধান মিলল। ধরা পড়েছে চার শিংওয়ালা বিশেষ প্রজাতির হরিণও। পলামুর জঙ্গলে এর আগে কখনও মাউস ডিয়ার বা ফোর হর্ন অ্যান্টিলোপের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এটা খুবই বিরল ঘটনা। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার এবং ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্টের শিডিউল-১-এ থাকা মাউস ডিয়ার ও ফোর হর্ন অ্যান্টিলোপের সন্ধান পাওয়া নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।’’

বন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পলামুর জঙ্গলের মোট ১৩০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। মে মাস থেকে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ক্যামেরা বসানো ছিল। জঙ্গলে জানোয়ারদের গতিবিধি, বিশেষ করে বাঘের সংখ্যা গোনার জন্যই এই ট্র্যাপ-ক্যামেরাগুলি লাগানো হয়েছিল। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শেষবার পলামুর জঙ্গলে তিনটি বাঘের
সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এই জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা কেন কমল, তা নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা কিছু কম হয়নি। তবু এই অবস্থায় ক্যামেরায় নতুন নতুন জন্তু ধরা পড়া একটা ভাল ঘটনা। জঙ্গলের জীববৈচিত্র্যে নতুন অক্সিজেন জোগান দেবে এই দু’টি প্রাণীর অস্তিত্ব।’’দেড় ফুট উচ্চতার তৃণভোজী এই মাউস ডিয়ার জঙ্গলের ঘাসে কার্যত মিশে থাকে। ধেড়ে ইঁদুরের থেকে কিছুটা বড়। দৌড়য় অবশ্য ক্ষিপ্র গতিতেই। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘আমাদের দেশ থেকে খুব দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এই বিরল প্রজাতির প্রাণী। পলামুর জঙ্গলে মাউস ডিয়ার ধরা পড়ায় বোঝা যাচ্ছে এই জঙ্গলের ইকো সিস্টেম খুব ভাল আছে।’’ চার শিংওয়ালা যে হরিণ ধরা পড়েছে তার সামনের শিং দু’টি খুব ছোট ও পিছনের সিং দু’টি তার থেকে কিছুটা বড়।

পলামু টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ক্যামেরায় বাঘ ধরা পড়েনি বলে তারা হতাশ নন। তাঁর মতে যেখানে ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল সেই জায়গায় হয়তো বাঘ আসেনি। বাঘ খুব দ্রুত জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। তিনি বলেন, ‘‘ফের অক্টোবর মাসে ক্যামেরা লাগানো হবে। তখন বাঘের দেখা নিশ্চয়ই মিলবে। এবার আমরা যে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির দু’টি প্রাণীর সন্ধান পেলাম তার ফের দেখা মেলে কিনা সে জন্যই আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Deer Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE