Advertisement
১১ মে ২০২৪
Examination

পরীক্ষা দিতে পাহাড়ের মাথায়

কোভিড পরিস্থিতিতে মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইন সেমেস্টার পরীক্ষা শুরু করেছে ২ জুন থেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৭:২৪
Share: Save:

বাংলাদেশ সীমান্ত ও মায়ানমার সীমান্তে পাহাড়ের মাথায় মাথায় তৈরি হচ্ছে ঘাঁটি। অস্থায়ী ছাউনিগুলির কোনওটায় বেঞ্চ পাতা, কোথাও শতরঞ্চি। প্রস্তুতি যুদ্ধকালীন। কিন্তু যুদ্ধটা টাওয়ার ও সিগন্যালের সঙ্গে! রাইফেল হাতে সেনা নয়, খাতা-পেন হাতে ছাউনির উদ্দেশে পাড়ি দেয় ছাত্রের দল। পৌঁছোনোর জন্য পার করতে হয় কয়েক কিলোমিটার পাহাড়-জঙ্গল। সৌজন্যে, অনলাইন সেমেস্টার পরীক্ষা!

কোভিড পরিস্থিতিতে মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইন সেমেস্টার পরীক্ষা শুরু করেছে ২ জুন থেকে। পরীক্ষা চলবে ২৮ জুন পর্যন্ত। কিন্তু অনলাইনে পরীক্ষা দিতে হলে নেটসংযোগ নিরবিচ্ছিন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। এ দিকে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা লুংলে ও মায়ানমার সীমান্তঘেঁষা সিয়াহায় নেটসংযোগ নামে থাকলেও তা কাজে লাগে না। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ চালাচ্ছে ছাত্রসংগঠনগুলি, লাভ হয়নি। তাই অনলাইন ক্লাস হোক বা পরীক্ষা, নেটসংযোগ পেতে ছাত্রছাত্রীদের পাহাড়ের মাথায় উঠতে হয়। অনেক গ্রামে ইন্টারনেটও পৌঁছয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক লালনানলুয়াঙ্গা জানান, অতিমারি ও লকডাউনে অনলাইন পরীক্ষা নেওয়া ভিন্ন উপায় ছিল না। স্নাতক স্তরের ২৪০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাঁদের প্রশ্নপত্র মেল করা হয়েছে। তা ডাউনলোড করে, ৩ ঘণ্টার মধ্যে সাদা পাতায় উত্তর লিখে প্রতিটি পাতা স্ক্যান করে মেল করতে হচ্ছে।

পরীক্ষার্থীদের সুবিধের জন্য লুংলে জেলার ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশন ও সিয়াহায় মারা ছাত্র সংগঠন পাহাড়ের মাথায়, যেখানে ভাল নেটওয়ার্ক মিলছে, ছাউনি তৈরি করে দিচ্ছে। কোথাও ছাউনির মাথায় কলাপাতার ছাদ, কোথাও টিন। কারও ছাউনি মাটির বুকেই, কারও আবার ইটের মঞ্চে।

মাওহরেইয়ের এমনই এক ছাউনিতে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন ২৩ জন ছাত্রছাত্রী। জানান, নীচের গ্রামে কখনও ২জি সিগন্যাল মেলে। তাও অনিয়মিত। তাই দুই কিলোমিটার পাহাড় চড়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য তারা। অনলাইন ক্লাস করতে হলেও পাহাড়ের মাথায় আসতে হয়।

সমস্যা মেনে নিয়ে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবার্ট আর রয়তে জানান, রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা উন্নত করতে রাজ্য সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ নিয়ে টাস্ক ফোর্সও গড়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ও দুর্গমতার কারণে টাওয়ার বসানো যায়নি। সীমান্তে নেটওয়ার্ক বা সিগন্যাল ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি কেন্দ্রের হাতে রয়েছে। তা ছাড়া লকডাউনের ফলে আন্তঃজেলা যান চলাচল বন্ধ থাকায় সমস্যা বেড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Examination Bangladesh Border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE