পড়ুয়াদের জমায়েত।
প্রায় ৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিন কিলোমিটার হেঁটে ইন্ডিয়া গেটের জমায়েতে যোগ দিলেন দিল্লির বিজয়নগর বেঙ্গলি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের রিসেপশনিস্ট ইভনাভা লাহিড়ী। বেশ কয়েক বছর যাবত কর্কট রোগের সঙ্গে মানসিক ও শারীরিক দীর্ঘ লড়াই-এর পর ইভনাভা আজ সম্পূর্ণ সুস্থ। জানালেন, “আমার মত আরও অন্যদের মানসিক বল বাড়াতেই এই কর্মসূচিতে এসেছি। শুধু ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি নয়, মানসিক বলই এই রোগের অন্যতম ব্রম্ভাস্ত্র।”
‘ক্যান সাপোর্ট’ আয়োজিত দশতম ‘জীবনের জন্য হাঁটা’। ৫ ফেব্রুয়ারি, রবিবারের এই কর্মসূচিতে দিল্লির বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে পা মিলিয়ে অনুষ্ঠানটিকে সফল করে তুলেছেন ক্যানসার সার্ভাইভার মানুষেরা এবং ক্যানসার আক্রান্ত মানুষদের বাড়ির লোকজনও।
সদ্য কর্কট রোগের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করে ওঠা বলিউড অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর স্ত্রী গুরুশরণ কউর, মার্কিন দূতাবাসের আদার অ্যাফেয়ার্স ইনচার্জ মিস ক্যারলসন, ম্যাক্স ইনস্টিটিউট অফ অনকোলজি-র ডিরেক্টর হরিত কুমার চতুর্বেদী- এঁরা সকলেই এই কর্মসূচিতে যোগদান করে কর্কট রোগের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়া মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন, খেলনা বাঘ-মায়ের আদরে বান্ধবগড়ে বাড়ছে শাবকরা
“আমাদের স্কুলই দিল্লির একমাত্র বাংলা সরকারি স্কুল যারা দিল্লির অন্যান্য স্কুলের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে রাজপথের জমায়েতে জড়ো হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের ও অভিভাবকদের উৎসাহ এক্ষেত্রে লক্ষণীয়। এই ভাবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মানুষের পাশে দাঁড়াক। তবেই সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।” বললেন বিজয়নগর বেঙ্গলি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের সেক্রেটারি ও ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান উৎপল ঘোষ।
মঞ্চে রয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর স্ত্রী গুরুশরণ কউর প্রমুখ।
বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা অংশগ্রহণ করেছিল এই অনুষ্ঠানে। ক্যান সাপোর্টের সিনিয়র ভলেন্টিয়ার কর্মী কাবেরী গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “আমাদের এই কর্মসূচি সারা বছর ধরে চলে। ফুটপাথে থাকা যে বাচ্চাটা ক্যানসার বানান পর্যন্ত জানে না সেই শিশুটিই হয়ত এই রোগের জন্য বাবা-মায়ের সাথে হাসপাতালে ডাক্তারদের নির্দেশ অনুযায়ী একের পর এক বিভাগে বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্ট করাতে যায়, অথবা, যন্ত্রণাদায়ক কেমোথেরাপির মধ্যে দিয়ে না বুঝতে পারা কষ্ট-যন্ত্রণা ব্যক্ত করে। আমরা চাই সেই সব মানুষদের, শিশুদের কিছুটা স্বস্তি দিতে। আমাদের টিমে অনকোলজিস্ট, নার্স ও ভলেন্টিয়াররা রয়েছেন। এই কর্মসূচিগুলোর জন্য আমাদের অর্থ সাহায্য করে বিভিন্ন কর্পোরাট সংস্থার সিএসআর(Corporate Social Responsibility) বিভাগ।”
ক্যানসার এমন একটা রোগ যা শুধু এই রোগে আক্রান্ত রোগীই নয়, তাঁর সমস্ত প্রিয়জনদেরও এক ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। কী করে একটু স্বস্তি দেওয়া যায় যন্ত্রণায় কাতর প্রিয়জনকে? জীবনের নির্দিষ্ট দিনগুলোকে কোনও অবস্থাতেই বাড়ানো সম্ভব নয়, তবে বেঁচে থাকার দিনগুলোর মধ্যে জীবনকে অবশ্যই জোড়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy