Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পরীক্ষা পিছোতেই খুন? প্রদ্যুম্ন খুনে ধৃত ছাত্র

সিবিআইয়ের এই গ্রেফতারিতে হরিয়ানা পুলিশের তদন্ত নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই এর সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।

পাকড়াও একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ছবি: পিটিআই। (ইনসেটে প্রদ্যুম্ন)।

পাকড়াও একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ছবি: পিটিআই। (ইনসেটে প্রদ্যুম্ন)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

দু’মাসের মাথায় নয়া মোড়। ফের শিরোনামে প্রদ্যুম্ন ঠাকুর হত্যাকাণ্ড।

গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির প্রদ্যুম্নকে খুনের অভিযোগে আগেই গ্রেফতার হয়েছিল স্কুলের একটি বাসের খালাসি অশোক কুমার। কিন্তু আজ ওই মামলায় স্কুলেরই এক একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে গ্রেফতার করল সিবিআই। স্কুলের কোনও ছাত্রকে মারলে স্কুল ছুটি হয়ে বন্ধ হয়ে যাবে পরীক্ষা। হবে না অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠকও। এই ভাবনা থেকে ওই ছাত্র এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। ধৃত ছাত্রকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে তারা।

সিবিআইয়ের এই গ্রেফতারিতে হরিয়ানা পুলিশের তদন্ত নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই এর সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার অভিযোগ, ‘‘নোট বাতিলের পদক্ষেপ যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তা বুঝে নজর ঘোরাতেই সিবিআইকে দিয়ে এই গ্রেফতারি করিয়েছে মোদী সরকার।’’

গত ৮ সেপ্টেম্বর স্কুলের শৌচাগারে গলার নলি কাটা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল খুদে প্রদ্যুম্নকে। ওই দিন বিকেলেই অশোককে গ্রেফতার করে গুরুগ্রামের পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, প্রদ্যুম্নের উপর যৌন নিগ্রহ করে তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে ওই শিশুকে মেরে ফেলেছিল অশোক। কিন্তু তার পরও সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হয় প্রদ্যুম্নের পরিবার। তাদের অভিযোগ ছিল, স্কুলের কর্ত্রী গ্রেস পিন্টো মুম্বই বিজেপির মহিলা মোর্চার সচিব। তিনি শাসক দলের নেত্রী হওয়ার সুবাদে তদন্তে প্রভাব খাটাচ্ছেন। প্রায় তিন সপ্তাহ পরে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তের ভার তুলে দেয় খট্টর প্রশাসন।

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌচাগারের সামনে থাকা সিসিটিভিতে প্রদ্যুম্ন ছাড়াও চার জনের ছবি দেখা গিয়েছে। অশোক, ধৃত ছাত্র ছাড়াও আরও দুই ছাত্র। সিবিআই জানিয়েছে, স্কুলের প্রায় দেড়শো ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের জেরায় বেরোয়, যে ছুরি দিয়ে প্রদ্যুম্নের গলা কাটা হয়েছিল, ধৃত ছাত্রটির কাছেও সে রকম ছুরি দেখা গিয়েছিল। ঘটনার দিনও ওই ছাত্রের ব্যাগে ওই ছুরি দেখে সহপাঠীরা। এমনকী খুনের আগের দিন ছাত্রটি তার সহপাঠীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছিল।

সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চালালে দেখা যায়, ধৃত ছাত্র পড়াশোনায় আদৌও ভাল নয়। তার মানসিক চিকিৎসাও চলছিল। এক তদন্তকারীর দাবি, ‘‘জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে, এই ধরনের কিছু করলে শোরগোল হয়ে স্কুল ছুটি হয়ে যাবে আর তার ফলে পরীক্ষা দিতে হবে না— এই ভাবনা থেকে সে ওই খুন করেছে।’’ সিবিআই মনে করছে, প্রদ্যুম্ন আগে থেকেই ধৃতের নিশানায় ছিল না। ঘটনাচক্রে সে ওই সময় শৌচাগারে গিয়েছিল মাত্র। যদিও ধৃত ছেলেটির বাবার দাবি, তাঁর ছেলের জামায় এক ফোঁটা রক্তের দাগ ছিল না। সিবিআই পরিকল্পিত ভাবে তাঁর ছেলেকে ফাঁসাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন ধৃতের পিতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE