Advertisement
১১ মে ২০২৪

বিতর্ক এড়াতে পিছু হটল সিবিএসই

স্কুল শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ আজ সকালে টুইট করেন, ‘ফাঁস হওয়া প্রশ্ন কত জন পরীক্ষার্থীর হাতে গিয়েছিল এবং তা থেকে কতজন ফায়দা পেয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ও পরীক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা ভেবে দিল্লি-হরিয়ানায় দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না।’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

বিতর্ক এড়াতে দশম শ্রেণিতে অঙ্ক পরীক্ষা আবার নেওয়া থেকে পিছিয়ে এল সিবিএসই বোর্ড। তবে কেন্দ্রীয় বোর্ডের ওই সিদ্ধান্তেও বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

স্কুল শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ আজ সকালে টুইট করেন, ‘ফাঁস হওয়া প্রশ্ন কত জন পরীক্ষার্থীর হাতে গিয়েছিল এবং তা থেকে কতজন ফায়দা পেয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ও পরীক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা ভেবে দিল্লি-হরিয়ানায় দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না।’

সিবিএসই-র বক্তব্য, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দিল্লি ও হরিয়ানার খুব অল্প সংখ্যক পরীক্ষার্থীর হাতেই ওই প্রশ্নপত্র পৌঁছেছিল। দুই রাজ্যের দু’লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সেই সংখ্যা নগণ্য। তাই ওই পরীক্ষা নতুন করে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও সেই সংখ্যাটি কত, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে সব পক্ষই। পুলিশের একটি সূত্রের মতে অবশ্য, সংখ্যাটি হাজারের কম নয়। এদিকে, ভবিষ্যতে কী ভাবে প্রশ্ন ফাঁস রোখা সম্ভব হবে, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্র। ৩১ মে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবে ওই কমিটি।

পুলিশ রিপোর্ট উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তা আজ বলেন, ‘‘অধিকাংশ পড়ুয়ার কাছে মাত্র আধ ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র পৌঁছয়। ফলে আধ ঘণ্টায় বিশেষ করে অঙ্কের মতো বিষয়ে বেশি কিছু করা অসম্ভব।’’ অথচ, স্কুল শিক্ষাসচিব অনিল স্বরূপ ক’দিন আগেই জানিয়েছিলেন, দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষার আগের রাতে সিবিএসই-র চেয়ারপার্সন অনিতা করবালের কাছে প্রশ্ন পত্র ই-মেল করেন একজন। পরে জানা যায়, ই-মেল প্রেরক দশম শ্রেণির এক ছাত্র। দিন কয়েক আগেই হাতে লেখা প্রশ্নপত্রটি পেয়ে গিয়েছিল সে। সেই ছাত্রের দাবি, তার পরিচিত অনেকেরই কাছেই ওই প্রশ্নপত্র ছিল। ফলে পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন ফাঁসের যুক্তি কতটা সত্যি, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ খুলতে চাননি মন্ত্রকের কোনও কর্তাই।

অঙ্কের প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব খতিয়ে দেখতে দিল্লি, হরিয়ানা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন স্কুলের হাজারটি অঙ্কের উত্তরপত্র যাচাই করেছে সিবিএসই। মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁস হলে উত্তরপত্রে সব উত্তর ঠিক হওয়ার প্রবণতা থাকে। ফলে প্রশ্ন ফাঁসের মাত্রা ব্যাপক হলে একাধিক পরীক্ষার্থীর খাতায় ওই প্রবণতা থাকার কথা। এ ক্ষেত্রে তা নেই। উল্টে অঙ্কের ফল কিছু জায়গায় খারাপ হয়েছে।’’ প্রশ্ন হল, ওই বাছাই করা পরীক্ষার্থীরাই কি প্রশ্ন হাতে পেয়েছিলেন? মন্ত্রকের উত্তর, না। এলোমেলো (র‌্যান্ডম) ভাবে ওই তিনটি রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের খাতা বেছে নেওয়া হয়েছে। যারা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছিল, তাদের খাতা ওই নমুনার বাইরে থেকে গেলে কী হবে? নিরুত্তর সিবিএসই।

উল্টে সিবিএসই বলছে, নতুন অঙ্ক পরীক্ষা কবে হবে, তা জানতে চেয়ে গত কয়েক দিনে অন্তত হাজার খানেক পরীক্ষার্থীর ফোন এসেছিল। এ দিকে পুনর্পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষার্থী, অভিভাবকদের পাশাপাশি আপত্তি ছিল শাসক শিবিরেরও। অঙ্ক পরীক্ষা কবে হবে, তা কালই জানতে চেয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। আগামিকাল ওই একই বিষয়ে মামলা ওঠার কথা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। সেই চাপের মুখে সিবিএসই দায় ঝেড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল বলেই মত অনেকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBSE Maths সিবিএসই
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE