Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
অরুণাচল

রাস্তার জন্য নেওয়া জমির ক্ষতিপূরণ দিতে নারাজ কেন্দ্র

সড়ক নির্মাণের জন্য জমি নিলেও তার জন্য ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের অনড় সিদ্ধান্তে ইটানগর-বান্দরদোয়া রাস্তা তৈরির কাজ বিশ বাঁও জলে। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে অরুণাচলের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে (হাইওয়ে-পশ্চিমাঞ্চল) চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইটানগর থেকে বান্দরদোয়া অবধি যে চার লেনের রাস্তা তৈরির প্রকল্প ছিল, তা বাতিল করা হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৯
Share: Save:

সড়ক নির্মাণের জন্য জমি নিলেও তার জন্য ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের অনড় সিদ্ধান্তে ইটানগর-বান্দরদোয়া রাস্তা তৈরির কাজ বিশ বাঁও জলে। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে অরুণাচলের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে (হাইওয়ে-পশ্চিমাঞ্চল) চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইটানগর থেকে বান্দরদোয়া অবধি যে চার লেনের রাস্তা তৈরির প্রকল্প ছিল, তা বাতিল করা হল। পরিবর্তে দুই লেনের সড়ক তৈরির জন্য বিকল্প পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের এই চিঠি পেয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। চিফ ইঞ্জিনিয়র বোরা এটে বলেন, ‘‘কেন্দ্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সড়ক সম্প্রসারণ ও নির্মাণের জন্য যে জমি নেওয়া হবে তার জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ না করে দুই লেনের রাস্তা তৈরিও সম্ভব হবে না। আর ক্ষতিপূরণ না পেলে মানুষ সড়কের জন্য জমিও ছাড়বে না।’’ রাজ্য পূর্ত ও ভূমি নিয়ন্ত্রণ দফতরের মতে, কেন্দ্র অরুণাচলের ক্ষেত্রে বৈমাত্রসুলভ মনোভাব নিয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে ৫৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল ক্ষতিপূরণ বাবদ। কিন্তু দ্বিতীয়বার জরিপের পরে, সেই পরিমাণ ২৪০ কোটি টাকা ধরা হয়। কেন্দ্র জানায় এই পরিমাণ কমাতে হবে। সেই মতো তা কমিয়ে ১৭৪ কোটি টাকার নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্র ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে নারাজ।

কংগ্রেস শাসিত অরুণাচল সরকারের অভিযোগ, ইচ্ছা করেই অরুণাচলবাসীকে বঞ্চিত করতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। দফতরের হিসেবে, ১৯৭৮ থেকে ২০০৬ সাল অবধি বহু লোক বর্তমান রাস্তার আশপাশে বাড়ি তৈরি করেছেন। কিন্তু দু’লেনের রাস্তা তৈরির জন্য ৪০ মিটার আরওডব্লিউ (রাইট অফ ওয়ে) সব স্থানে মেলা সম্ভব নয়। তার জন্য বহু বাড়ি ভাঙতেই হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সেই সব বাড়ির কোনও দায়িত্ব নিতে চাইছে না। রাজ্য সরকারের অভিযোগ: দিল্লি, লক্ষ্ণৌ, মুম্বইয়ের মতো শহরে কী রাস্তা সম্প্রসারণে বাড়ি ভাঙতে হলে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কাজ সম্ভব হত? তবে অরুণাচলের ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম কেন? পূর্ত ও ভূমি নিয়ন্ত্রণ দফতরের হিসেবে, বান্দরদোয়া-হলংগি অবধি ৫০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের সময় কেন্দ্র কোনও আপত্তি তোলেনি। এখন হলংগি থেকে গোহপুর অবধি ২০ কিলোমিটার পথের কাজ চলছে। সেই ক্ষেত্রে বাড়ি কম থাকায় কেন্দ্র সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কিন্তু এখন আচমকা কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় প্রকল্প ধাক্কা খাবে।

চলতি বছর জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ও মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, ইটানগর থেকে বান্দরদোয়া অবধি চার লেনের কংক্রিট সড়ক গড়া হবে। কিন্তু এখন মন্ত্রকের মনোভাব ঠিক উল্টো। ফলে ৪১৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ভবিষ্যত অন্ধকার বলে রাজ্য সরকারের ধারণা। রাজ্য সরকারের অভিযোগ পেয়ে রিজিজু জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি দেখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Central Government compensation land
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE