Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নিষ্কৃতি মৃত্যুর উইলে নারাজ কেন্দ্র

চলচ্ছক্তিহীন জড় পদার্থের মতো হাসপাতালে শুয়ে থাকতে হলে যেন তাঁকে নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হয়— এমনটা কেউ উইল করতেই পারেন। কিন্তু সেই উইলের অপব্যবহারও হতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

প্রার্থনা: নিষ্কৃতি-মৃত্যু চেয়েই সওয়াল করেছিল এই ছবিটি।

প্রার্থনা: নিষ্কৃতি-মৃত্যু চেয়েই সওয়াল করেছিল এই ছবিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

চলচ্ছক্তিহীন জড় পদার্থের মতো হাসপাতালে শুয়ে থাকতে হলে যেন তাঁকে নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হয়— এমনটা কেউ উইল করতেই পারেন। কিন্তু সেই উইলের অপব্যবহারও হতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

নিষ্কৃতি মৃত্যুকে মৌলিক অধিকার দেওয়ার আবেদন নিয়ে মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের এই যুক্তি মেনে নিয়েছেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরাও। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের চিকিৎসার ভার থেকে মুক্তি পেতে সন্তানরা এই উইলকে কাজে লাগাতে পারেন, এ আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারেননি তাঁরা। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, ‘‘আজকের বাস্তবতা হল, মধ্যবিত্ত পরিবারে বৃদ্ধদের কেউ চায় না। তাদের বোঝা হিসেবে ধরা হয়। তাই এই ধরনের উইল নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে।’’

আরও পড়ুন:জয় এড়িয়ে উন্নয়ন-কথা অমিতের

কেন্দ্রের আইনজীবী পি এস নরসিমহা যুক্তি দেন, পরোক্ষ নিষ্কৃতি মৃত্যুতে অসুবিধা নেই। কিন্তু সরকার তার জন্য আগেভাগে উইল করে যাওয়ার বিরুদ্ধে। বিষয়টি দেখভালের জন্য খসড়া বিল তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রের মত, জেলা ও রাজ্য স্তরে মেডিক্যাল বোর্ড থাকবে। তারাই ঠিক করবে, জড় পদার্থের মতো মৃত্যুশয্যায় শুয়ে থাকা কোনও ব্যক্তিকে পরোক্ষ নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হবে কি না।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এখন নিষ্কৃতি মৃত্যুর অধিকার নিয়ে শুনানি চলছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুলে মামলা করেছে। মহাভারতে পিতামহ ভীষ্ম ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারী ছিলেন। কিন্তু ভারতে অন্ধ্রের মৃত্যুপথযাত্রী কিশোর ভেঙ্কটেশের নিষ্কৃতি-মৃত্যু চেয়ে তার মা সুজাতা আদালতে গিয়েও অনুমতি পাননি। মুম্বইয়ের অরুণা শনবাগের নিষ্কৃতি-মৃত্যু চেয়ে আবেদন করেছিলেন তাঁর বান্ধবী পিঙ্কি ভিরানি। সেখানেও অনুমতি মেলেনি। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টেই ব্যক্তিপরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার অধিকার দেওয়ার পর, নিষ্কৃতি মৃত্যুর অধিকারের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর প্রশ্ন, ‘‘কেউ সুস্থ অবস্থায় এটা উইল করতেই পারেন যে, তাঁকে যেন ভেন্টিলেটরে রাখা না হয়। কিন্তু এটা যে তাঁরই উইল, তা কী করে ঠিক হবে? কে ঠিক করবে, আর বাঁচিয়ে রাখার অবস্থা নেই?’’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডই যদি দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তর দেয়, তা হলে আর প্রথম প্রশ্নটির অবকাশ থাকছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE