Advertisement
১১ মে ২০২৪

গ্যাস ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো ঝুলিয়ে রাখল কেন্দ্র

সংস্কারের রথে রাজনৈতিক ভারসাম্যের লাগাম টানল মোদী-সরকার। সামনেই বিধানসভা ভোট মহারাষ্ট্র-সহ কিছু রাজ্যে। তার আগে রেলভাড়া বৃদ্ধির মতো স্পর্শকাতর সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রের দিকে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেও। সম্ভবত তা মাথায় রেখেই আজ রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ঝুলিয়ে রাখল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি। এগোল না কেরোসিনের দর বাড়ানোর দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০৩:০২
Share: Save:

সংস্কারের রথে রাজনৈতিক ভারসাম্যের লাগাম টানল মোদী-সরকার। সামনেই বিধানসভা ভোট মহারাষ্ট্র-সহ কিছু রাজ্যে। তার আগে রেলভাড়া বৃদ্ধির মতো স্পর্শকাতর সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রের দিকে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেও। সম্ভবত তা মাথায় রেখেই আজ রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ঝুলিয়ে রাখল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি। এগোল না কেরোসিনের দর বাড়ানোর দিকে। কেজি বেসিন-সহ বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্র থেকে তোলা প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নির্ধারণের বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন বলেও জানাল তারা। বাড়াল ধান, ডাল, তৈলবীজ, তুলোর মতো কিছু কৃষিপণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য।

অনেকের মতে, এতে কেন্দ্রের বার্তা স্পষ্ট। অর্থনীতির হাল ফেরাতে সরকার তেতো ওষুধ প্রয়োগে বাধ্য হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু মনে রাখছে গরিব-মধ্যবিত্তদের কথাও। যাঁদের ‘সুদিন’ আনার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। শোনা যাচ্ছিল, জ্বালানিতে ভর্তুকি ছাঁটতে গ্যাসের সিলিন্ডার পিছু প্রতি মাসে দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়াবে কেন্দ্র। ফি মাসে ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা বাড়বে কেরোসিনও। কিন্তু এ দিন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, এই মুহূর্তে ওই ভাবে দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব ছিল (যার জন্য দীর্ঘ দিন দাবি করছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ) তা-ও পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে আরও তিন মাস। শিল্পের দাবি, নতুন দর ঘোষণা করলে, তবেই গ্যাস উত্তোলনে টাকা ঢালতে আগ্রহ দেখাবেন লগ্নিকারীরা। কিন্তু তেমনই আশঙ্কা, এর ফলে দাম বাড়বে ওই গ্যাস ব্যবহারকারী সার ও বিদ্যুৎ শিল্পের। হয়তো সেই কারণেই এ দিন নয়া দর ঘোষণার পথে হাঁটেনি কেন্দ্র।

অর্থনীতির অবস্থা শোচনীয় বুঝেই কঠোর সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন মোদী। পরে রেলের যাত্রিভাড়া ও মাসুল বাড়ায় কেন্দ্র। তারপরই আক্রমণ করেন বিরোধীরা। কটাক্ষ করেছিলেন ‘সুদিন আসা’ নিয়ে। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে এ নিয়ে অখুশি ছিল শরিক এমনকী বিজেপির একাংশও। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের কথায়, “কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ঠিকই। কিন্তু বেশি তাড়াহুড়ো হয়ে গিয়েছে।” অনেকে মনে করছেন, এই জাতীয় আক্রমণকে ভোঁতা করতেই এক পা পিছোলো কেন্দ্র। অর্থনীতির আগে রাখল রাজনীতিকে।

এ দিন এই বার্তা দেওয়ার তাগিদ কতটা তীব্র ছিল, তা স্পষ্ট আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের কথাতেই। কৃষিপণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়লে মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা আরও বাড়বে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে প্রসাদ বলেন, “মোদী-সরকার গরিব, কৃষকদের জন্যই কাজ করে। এর পর যদি মূল্যবৃদ্ধি হয়, তা পরে বিবেচনা করা যাবে। এ দিন সব সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের স্বার্থে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kerosene gas prices central government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE