Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ঘুষ দিতে হয়েছে? ১১০০তে ডায়াল করলেই ফেরত আসবে টাকা

আর অভিযোগ জানানোর পরে? মজাটা সেখানেই। ঘুষ যিনি নিয়েছিলেন, সেই তিনিই হয়তো ‘ঘুষদাতার’ বাড়ি বয়ে এসে ফেরত দিয়ে যাবেন টাকাটা।

সংবাদ সংস্থা
অমরাবতী শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ১২:০০
Share: Save:

শুধু একটা ফোন করতে হবে এই নম্বরে। ১১০০। সরকারি পরিষেবা পেতে কোনও অফিসার বা অন্য কোনও লোককে যদি ঘুষ দিতে হয়ে থাকে, সে কথা নির্দ্বিধায় জানানো যাবে এই হেল্পলাইনে। সরকারি এই হেল্পলাইনের অন্যতম উদ্যোক্তা মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর তরফে রয়েছে অভিযোগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার আশ্বাস।

আর অভিযোগ জানানোর পরে? মজাটা সেখানেই। ঘুষ যিনি নিয়েছিলেন, সেই তিনিই হয়তো ‘ঘুষদাতার’ বাড়ি বয়ে এসে ফেরত দিয়ে যাবেন টাকাটা। তাঁর রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে এমন ঘটনা যে সত্যি সত্যিই ঘটতে শুরু করেছে, মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু নিজেই তা জানিয়েছেন। ১১০০ হেল্পলাইনের পোশাকি নাম ‘পিপল ফার্স্ট’। গত ২৫ মে চালু হয়েছে অন্ধ্রে। নায়ডু বলছেন, ‘‘এই ক’দিনেই ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন ১২ জন। কুর্নুল জেলায় এক পঞ্চায়েতের সচিব তো আলাদা আলাদা অভিযোগে ১০ জনকে টাকা ফিরিয়েছেন।’’

‘‘দুর্দান্ত সাড়া পাচ্ছি। দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্তারা ঘুষের টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন। সমাজটাকে পরিষ্কার করার এটা একটা ভাল চেষ্টা’’— সম্প্রতি বলছিলেন রাজ্য সরকারের যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা পি প্রভাকর। পরিচ্ছন্নতার এই আয়োজন যে একেবারেই অপ্রত্যাশিত, এমন নয়। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় ভারতের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্যের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে কর্নাটক। দ্বিতীয় স্থানেই অন্ধ্র। রাজ্য ভাগ হওয়ার পরেও দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ ভাবাচ্ছিল চন্দ্রবাবু সরকারকে। সেই সার্বিক ভাবনারই ফসল ‘পিপ্‌ল ফার্স্ট’ হেল্পলাইন।

আরও খবর
বিয়ের সন্ধ্যায় নাচতে নাচতে মালাবদলের আগেই মারা গেলেন বর!

৭৫০ টেলি-কলারকে নিয়োগ করা হয়েছে এই প্রকল্পে। তাঁরা শুধু যে ১১০০ নম্বরে ফোন করা আমজনতার অভিযোগ নথিভুক্ত করছেন তা-ই নয়, সরাসরি ফোন করছেন বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের। এবং সেখানেও সরকারি বিমা থেকে গণবণ্টন ব্যবস্থা— নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির হাজার তিনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। চন্দ্রবাবু জানান, শুধু সরকারি কর্তা বা পদাধিকারীরা নন, ১১০০-র চাপে একাধিক দালালও বাধ্য হন টাকা ফেরত দিতে। তাঁরা কেউ রেশন কার্ড করিয়ে দিতে, কেউ বিমার টাকা পাইয়ে দিতে টাকা নিয়েছিলেন। তবে এখনও পর্যন্ত ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবেতেই গড় টাকার অঙ্কটা পাঁচশো-হাজারের মধ্যে। ঘুষ নেওয়ার দায়ে এই প্রকল্পে কারও সাজা হওয়ার খবরও এখনও নেই। কেন? চন্দ্রবাবু বলছেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ চাপিয়ে কোনও সরকারি অফিসারকে কলঙ্কিত করার চেষ্টাও তো হতে পারে। তাই অভিযোগের তদন্তের পরেই পদক্ষেপ করা হবে।’’

টাকা যে ফেরত পাওয়া যাবেই, এমন গ্যারান্টি অবশ্য বিলোচ্ছেন না চন্দ্রবাবুরা। এক কর্তার কথায়, ‘‘লোকে তো জানছে, ১১০০ হেল্পলাইনকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ঘুষ দিয়ে থাকলে সেই টাকা ফেরত পাওয়ার একটা আশা তো জাগছে মনে। ওই আশাটাই ভরসা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bribe Andhra Pradesh Chandrababu Naidu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE