জিএসটি’র বিরোধিতায়। ছবি: পিটিআই।
চিন্তা ছিল ভূস্বর্গ নিয়ে। দেখা গেল, ভূস্বর্গ-জয় হল ঠিকই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর ঘরের মাঠেই ঠোক্কর খেল জিএসটি-র রথের চাকা।
১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হওয়ার আগে থেকেই আমদাবাদ ও সুরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। জিএসটি চালু হওয়ার পরে দু’সপ্তাহ কাটতে চললেও বিক্ষোভ কমেনি। উল্টে ক্ষোভের আগুন ক্রমশ ছড়াচ্ছে। চলতি বছরের শেষেই গুজরাতের বিধানসভা ভোট। তার আগে বিজেপির প্রধান ভোট-ব্যাঙ্ক ব্যবসায়ীদের এই আন্দোলন, নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কারণ, সুরাতের এই হীরে-বস্ত্র ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ পটেল বা পাতিদার সম্প্রদায়ের। ব্যবসায়ীরাও জানেন তাঁদের ভোট বিজেপির কাছে কতখানি দামি। সেই বুঝে তাঁরা মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে চাইছেন।
দেশে ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হলেও বাকি ছিল জম্মু-কাশ্মীর। ‘এক রাষ্ট্র, এক কর’-এর ছবি থেকে জম্মু-কাশ্মীর বাকি পড়লে তা নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে অস্বস্তির কারণ হতো। জম্মু-কাশ্মীরে যাবতীয় বিরোধিতা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বিধানসভাতে জিএসটি বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জিএসটি-র বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আছড়ে পড়েছে গুজরাত উপকূলে।
আরও পড়ুন: জঙ্গিদের জমি দিচ্ছেন মোদীই: রাহুল
গুজরাত যে শুধু নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর ঘরের মাঠ, তা নয়। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও গুজরাত থেকেই রাজ্যসভার সাংসদ। যে শিল্পের ব্যবসায়ীরা ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, সেই বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও গুজরাত থেকেই রাজ্যসভায় নির্বাচিত। অর্থ মন্ত্রকে রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢ়িয়ার কাঁধেই জিএসটি রূপায়ণের দায়িত্ব। তিনিও গুজরাতি। গুজরাত ক্যাডারেরই অফিসার। হীরের ব্যবসায়ীরাও পালিশ করা ও রুক্ষ হীরের উপর কর বসানোর প্রতিবাদ করছেন।
হার্দিক পটেলের নেতৃত্বে পাতিদারদের আন্দোলনের মুখে মোদীকে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হয়েছিল। তার পরে সুরাতে গিয়ে মোদীকে জনসভাও করতে হয়েছে। কারণ পাতিদাররা রাজ্যের জনসংখ্যার অন্তত ১৫ শতাংশ। তারা ফের চটে গেলে ভোটবাক্সে প্রভাব পড়তে বাধ্য। শুধু সুরাতেই ১৬৫টি জামাকাপড়ের বাজার রয়েছে। দৈনিক প্রায় ১০০ কোটির ব্যবসা। আর সুরাতে হীরের ব্যবসার পরিমাণ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা।
আন্দোলনের মুখে জেটলি কড়া সুরে বলেছেন, আসলে বস্ত্র-ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ জিএসটি নিয়ে আপত্তি নেই। কারণ ওই করের বোঝা দামের সঙ্গে যোগ হবে। তবে ব্যবসায়ীরা জানেন, জিএসটি-র আওতায় এলে তাঁদের ব্যবসার পরিমাণ ধরা পড়ে যাবে। আয়কর ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে আন্দোলনের সুর আরও চড়েছে। আমদাবাদ-সুরাতের সঙ্গে গোটা রাজ্যের ব্যবসায়ীরাও আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy