রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির দরবারে নালিশ ঠুকতে চলেছে অসমের শাসক দল কংগ্রেস।
তরুণ গগৈ সরকারের অভিযোগ, ক্রমাগত প্রশাসনের বিরোধিতা করে চলেছেন রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্য। শিক্ষা ব্যবস্থাকে গেরুয়াকরণের চেষ্টাও চালাচ্ছেন। প্রতিবাদে আজ কংগ্রেস সদস্যরা রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে স্মারকলিপিও পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, পি বি আচার্য নাগাল্যান্ডের স্থায়ী ও অসমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল।
অসম সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধ শুরু হয়েছিল কাজিরাঙায় গন্ডার শিকার নিয়ে। চোরাশিকার রুখতে সরকার ব্যর্থ বলে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যপাল। এপিএসসি পরীক্ষা কেলেঙ্কারি, ডিব্রগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এগজিকিউটিভ কাউন্সিলে সদস্য নিয়োগ নিয়েও দু’পক্ষে কাজিয়া হয়।
গন্ডার শিকার নিয়ে রাজ্যপাল মন্তব্য করেছিলেন— ‘গন্ডার রাজ্যের গর্ব। তার শিকার ঠেকাতে না পারলে বনমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।’ পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দাগে গগৈ সরকার। কংগ্রেস জানিয়ে দেয়, রাজ্যপাল যেন সাংবিধানিক সীমানা অতিক্রম না করেন। এমনকী, রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে হাজির হননি বনমন্ত্রী এটোয়া মুন্ডা। সম্প্রতি, এপিএসসি পরীক্ষায় বেনিয়মের অভিযোগ নিয়েও সরব হন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের তদন্ত কমিশনকে সময় বেঁধে দিয়ে তিনি সিবিআই তদন্তেরও ইঙ্গিত দেন।
এ সবে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ শাসক দল কংগ্রেস। দলের নেতাদের অভিযোগ, রাজ্যপাল ইচ্ছাকৃত ভাবে অসম সরকারের বিরোধিতা করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন। এপিএসসি পরীক্ষা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তদন্ত কমিটি গড়লেও, আইনবিরুদ্ধ ভাবে ওই কমিটিকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন রাজ্যপাল।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘‘রাজ্যপাল হাইকোর্ট নন। তিনি তদন্ত কমিটির সময়সীমা বেঁধে দিতে পারেন না। সিবিআই তদন্তের সুপারিশ শুধুমাত্র রাজ্য সরকারই করতে পারে।’’ কংগ্রেসের দাবি, মন্ত্রিসভার পরামর্শমতো না চলে রাজ্যপাল সমান্তরাল সরকার চালাতে চাইছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যপাল ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলে যে সদস্যদের নাম সুপারিশ করেছেন, তাঁরা আরএসএস সদস্য। মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস সচিব ভরতচন্দ্র নরহ জানান, পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল ওই কাউন্সিলে এমন ১২ জন সদস্যের নাম সুপারিশ করেন, যাঁদের অনেকে আরএসএস সদস্য। রাজ্যপাল অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, আরএসএস নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। তিনি দলীয় ভিত্তিতে সদস্যদের নাম সুপারিশ করেননি। যোগ্যতার ভিত্তিতেই করেছেন।
অসমের স্কুলে স্কুলে যোগাসন অনুশীলনের উপর জোর দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বিবৃতি দিয়ে জানান, রাজ্য সরকার যোগাসনের বিরুদ্ধে না হলেও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যোগাসন বাধ্যতামূলক করার বিপক্ষে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy