Advertisement
০৬ মে ২০২৪
জাতীয় সঙ্গীত

কেরলে বাম: তা হলে বরং দেরিতে ঢুকুন

কথায় আছে, বাঙালকে নাকি হাইকোর্ট দেখাতে নেই। সিপিএম বোঝাতে চাইছে, তাদের সুপ্রিম কোর্ট দেখাতে নেই!

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০০
Share: Save:

কথায় আছে, বাঙালকে নাকি হাইকোর্ট দেখাতে নেই। সিপিএম বোঝাতে চাইছে, তাদের সুপ্রিম কোর্ট দেখাতে নেই!

সিনেমা হলে ছবির শো শুরু হওয়ার আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো বাধ্যতামূলক বলে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় বলে কথা। তাই অন্যথা করার উপায় নেই। বাম-শাসিত কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ১৪ জনকে ইতিমধ্যে পুলিশ আটকও করেছে জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে উঠে না দাঁড়ানোর অপরাধে। যখনই ডাক পড়বে, তখনই থানায় হাজিরা দিতে হবে— এই শর্তে পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ যখন এই কাজ করছে, শাসক দল তখন সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সহমত হতে নারাজ! শেষমেশ তাই কেরল সিপিএম ঘোষণা করেছে মধ্যপন্থা।

সিপিএম নেতৃত্বের যুক্তি, জাতীয়তাবাদের ধামা নিয়ে বিজেপি বাজারে বেরোবে, সে তো প্রত্যাশিতই। সুপ্রিম কোর্ট কেন জাতীয়তাবাদের এমন দাওয়াই সুপারিশ করতে গেল, তা যুক্তির অগম্য! এই আপত্তি থেকেই কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন জনতার কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মানতে সরকার বাধ্য। তাই হলে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে। আপনারা জাতীয় সঙ্গীত হয়ে যাওয়ার পরে হলে ঢুকবেন! তা হলে দাঁড়ানোর ব্যাপারও নেই, পুলিশও কিছু করতে পারবে না!’’ যাঁরা দেশভক্তির রসে নেহাতই সিঞ্চিত হতে চান, তাঁরা স্বেচ্ছায় হলে জাতীয় সঙ্গীতের সময়ে দাঁড়িয়ে উঠে জাতীয়তাবাদের নিশান ওড়াতেই পারেন। তাতে তো অসুবিধা নেই। বলেছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বালকৃষ্ণন।

কেরলে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (আইএফএফকে) জাতীয় সঙ্গীতের সময়ে না দাঁড়ানোয় ৬ জনকে আটক করা নিয়ে বিতর্ক হয়। কেরল রাজ্য পুলিশের ডিজি লোকনাথ বেহরা চলচ্চিত্র উৎসবের ডেলিগেটদের মুখোমুখি বসে জানিয়ে দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পালনে তাঁরা বাধ্য। আদালতের অবমাননা সম্ভব নয়। তাই দাঁড়াতেই হবে। নয়তো অভিযোগ এলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ যখন এমন ভাবে চাকরি বাঁচাতে সক্রিয়, শাসক দলের রাজ্য সম্পাদক (অতীতে তিনি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীই ছিলেন) তখন ফাঁকি দেওয়ার পথও বাতলে দিচ্ছেন!

সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বলছেন, এ ছাড়া উপায় কী! সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে তাঁরা কী চোখে দেখছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দলের পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাটের বক্তব্য, ‘‘মোদী সরকার যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায়, দেশপ্রেমের পরীক্ষা নেবেই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই পরীক্ষা দ্বিগুণ উৎসাহে নেওয়া হবে! আশা করি, শুভবুদ্ধির উদয় হয়ে সুপ্রিম কোর্ট শীঘ্রই আদেশ ফের পর্যালোচনা করবে।’’ তদ্দিন ফাঁকা হলেই না হয় চলুক দেশপ্রেমের পরীক্ষা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM National Anthem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE