প্রয়াত সিপিএম নেতা হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের শতবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রকাশ করাট এবং ত্রিপুরার রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক বিজন ধর। মঙ্গলবার আগরতলায় বাপি রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
রাজ্যে শাসক দল সিপিএম সংবাদ মাধ্যমের ‘কণ্ঠরোধের’ পরিকল্পনা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। সরব বিরোধী কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
কয়েক দিন আগে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্দ্ধিত অধিবেশনে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। তারই ভিত্তিতে রাজ্য কমিটির তরফে একটি পুস্তিকা বিলি করা হয় পার্টির সদস্যদের মধ্যে। সেই পুস্তিকার ১০ নম্বর অনুচ্ছেদের শিরোনামই হচ্ছে ‘গণমাধ্যমে পার্টির হস্তক্ষেপ’। পুস্তিকার ১৫-১৬ পৃষ্ঠায় দলীয় মুখপত্রের বিক্রি বাড়ানো ইত্যাদি নিয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে: (ক) আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিটি জেলায় সোস্যাল মিডিয়ায় হস্তক্ষেপের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। (খ) রাজ্য ও জেলা স্তরে বৈদ্যুতিন প্রচার মাধ্যমে পার্টির হস্তক্ষেপের ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
আপত্তি উঠেছে সিপিএমের এই ‘হস্তক্ষেপ’ করার মনোভাব নিয়েই। ক্ষুব্ধ রাজ্যের সাংবাদিক মহলের বিরাট অংশও। এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির মুখপাত্র মৃণালকান্তি দেবের অভিযোগ, ‘‘সংবাদ মাধ্যম ও বিচার বিভাগ, গণতন্ত্রের এই দু’টি স্তম্ভকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সিপিএম বরাবরই সচেষ্ট।’’ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের ৩৫ বছরের শাসনে বিচার বিভাগের উপর কী কী আক্রমণ করা হয়েছিল, সে বিষয়েও উল্লেখ করেন শ্রীদেব। সম্প্রতি দিল্লির জেএনইউ কাণ্ডে ছাত্রছাত্রীর ‘বাক-স্বাধীনতার’ কথা বলে সিপিএম পথে নেমেছিল। অথচ আজ রাজ্যে সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে রাজ্য কমিটির অধিবেশনে কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছে দল। এটা সিপিএমের দ্বিচারিতা বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির মুখপাত্র। বিজেপির বক্তব্য, এ ভাবে ত্রিপুরায় সংবাদমাধ্যমের ‘কণ্ঠরোধ’ করা যাবে না। প্রতিবাদে সরব হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসও।
প্রয়াত সিপিএম নেতা হরিকৃষ্ণ সিংহ সুরজিতের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘হস্তক্ষেপ বা পাওয়ার অফ ইন্টারভেনশন বাড়াতে হবে, এটাই আমরা বলেছি। হস্তক্ষেপ মানে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার টুঁটি টিপে ধরা নয়। কন্ঠরোধের কোনও প্রশ্ন নেই। আমাদের কথা আরও বেশি প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy