Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ফণীর তাণ্ডবে ওড়িশায় মৃত ১৬

গত কাল সকাল আটটা নাগাদ পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী। তার পরে ওই ঝড়ের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয় ভুবনেশ্বর, বালেশ্বর, জাজপুর, খুরদা ও নয়াগড়ের মতো এলাকা। এখনও ১৬ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া মিলেছে। প্রশাসন জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১১ লক্ষ বাসিন্দাকে নিরাপদ এলাকায় সরানোয় ব্যাপক প্রাণহানি এড়িয়েছে।

ফণীর দাপটে ভেঙে গিয়েছে পুরীর বাসস্ট্যান্ড। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ফণীর দাপটে ভেঙে গিয়েছে পুরীর বাসস্ট্যান্ড। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

ওড়িশার ১২টি জেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডবে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানাল সে রাজ্যের সরকার। অন্ধ্রপ্রদেশের ওড়িশা সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টিতে নষ্ট
হয়েছে প্রায় ৫৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার ফসল ও সম্পত্তি। ঝড়ের তীব্রতা কমে যাওয়ায় বিশেষ ক্ষত হয়নি বঙ্গে। বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতির সময়ে প্রশাসনের পাশে থাকার জন্য বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার ওড়িশায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

গত কাল সকাল আটটা নাগাদ পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী। তার পরে ওই ঝড়ের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয় ভুবনেশ্বর, বালেশ্বর, জাজপুর, খুরদা ও নয়াগড়ের মতো এলাকা। এখনও ১৬ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া মিলেছে। প্রশাসন জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১১ লক্ষ বাসিন্দাকে নিরাপদ এলাকায় সরানোয় ব্যাপক প্রাণহানি এড়িয়েছে।

ওড়িশার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুরেশ মহাপাত্রের কথায়, ‘‘এই ঝড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে ধারণা। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনও সঠিক সংখ্যা জানতে পারিনি।’’ তিনি জানান, পুরী ও ভুবনেশ্বরে টেলিকম নেটওয়ার্ক একেবারে বির্পযস্ত। সেই নেটওয়ার্ক চালু হতে সময় লাগবে। তাঁর কথায়, ‘‘কোন কোন এলাকায় বেশি ক্ষতি হয়েছে তা এখনও বোঝার চেষ্টা করছি।’’ বিদ্যুৎসচিব হেমন্ত শর্মা জানান, ভুবনেশ্বরে ১০ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৩০ লক্ষ গ্রাহক। দ্রুত ভুবনেশ্বরের ২৫% এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানোর চেষ্টা চলছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ পড়ে বন্ধ অনেক জাতীয় ও রাজ্য সড়ক। আজ বিকেলের
মধ্যেই সড়ক থেকে সেসব সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইটে বলেন, ‘‘ওড়িশার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার ওই রাজ্যে যাব। পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে।’’

ফণীর প্রকোপে অন্ধ্রের শ্রীকাকুলাম জেলায় ১০ হাজার নারকেল গাছ পড়ে গিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার জানায়, নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫৮ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার ফসল ও সম্পত্তি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি অন্ধ্র সরকারের। তারা জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ২১৮টি সেলফোন টাওয়ারই মেরামত করা হয়েছে। ৭৩৩টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে ৬৫৯টি গ্রামে বিদ্যুৎ ফেরানো গিয়েছে।

ঝড়ের তীব্রতা কমায় বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে বলেন, ‘‘বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ পড়ে নানা এলাকায় রাস্তা বন্ধ হয়েছে। নষ্ট হয় ১২টি কাঁচা রাস্তা। ৮০০টি বাড়ি আং‌শিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিঘা, মন্দারমণি, ডায়মন্ড হারবারে মেরামতি ও অন্য কাজ শেষ। অন্য এলাকায় কাজ দ্রুতগতিতে
এগোচ্ছে। প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো গিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৪২ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ এলাকায় সরানো হয়। তাঁরা দু’এক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এক সপ্তাহ উদ্বিগ্ন ছিলাম। প্রশাসন সব ব্যবস্থা নিয়েছে। কলকাতার মেয়র রাত জেগে পরিস্থিতিতে নজর রেখেছেন। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য মানুষকে ধন্যবাদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Odisha Cyclone Fani ফণী Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE