কাশ্মীর উপত্যকার ঢাল বেয়ে নামছে ছাইরঙা সুইফ্ট ডিজায়্যার। নম্বর জেকে০১-এবি২৬৫৪। অত্যাধুনিক অস্ত্রবোঝাই ওই গাড়ির লক্ষ্য প্রথমে দিল্লি। তার পর মুম্বই হয়ে গোয়া। আজ রাতেই বানিহাল সুড়ঙ্গ পেরিয়ে জম্মুতে ঢুকতে চায় তারা। গাড়িতে রয়েছে তিন পাক জঙ্গি। তাদের শরীরে বিস্ফোরক-বেল্ট। পথ দেখিয়ে আনছে উপত্যকারই এক বাসিন্দা।
দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের কাছ থেকে আজ এই খবর যখন পঞ্জাব পুলিশ পেল, মোটামুটি সেই সময়েই নয়াদিল্লিতে ভারতীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করছেন, পাক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে তাঁরা বদ্ধপরিকর।
গত কাল পঠানকোট হামলা নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল সাউথ ব্লকে। পাকিস্তানের যৌথ তদন্তকারী দল (জেআইটি) ফিরে যাওয়ার পর পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করেছিল, ইসলামাবাদকে বদনাম করতে ওই হামলা ‘সাজিয়েছিল’ ভারতই। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘‘এটা বানানো গল্প। প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি নিয়ে গিয়েছে জেআইটি।’’ অন্য একটি অনুষ্ঠানে ভারতের বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের মূল আলোচ্য বরাবরই সন্ত্রাসবাদ। এই বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বলা
যাবে না যে, আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক স্বাভাবিক।’’ পরে পাক বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘পাক জেআইটি এবং ভারতের এনআইএ তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করেছে। সন্ত্রাস রুখতে পারস্পরিক সহযোগিতার আবহ থেকেই এই সফর। তদন্ত এগোচ্ছে।’ একটি সূত্রের দাবি, পঠানকোট তদন্তে এফবিআইয়েরও সাহায্য চেয়েছে এনআইএ। যদিও এ নিয়ে কিছু বলেনি দিল্লি।
কূটনীতিকদের মতে, দু’দেশের নেতৃত্বেরই ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাক কট্টরপন্থীরা কাশ্মীর প্রশ্নে ‘আপস করে’ আলোচনায় রাজি নন। আর ইতিহাস বলে, দু’দেশ যখনই আস্থার পথে হেঁটেছে, তখনই বাধা দিয়েছে জঙ্গি হানা। গত মাসে কতকটা নজিরবিহীন ভাবেই পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাসির খান জানজুয়া সতর্ক করেছিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে। বলেছিলেন, ২৬/১১-র কায়দায় হামলা চালাতে ভারতে ঢুকেছে একদল জঙ্গি।
আজও ফিদায়েঁ বাহিনীর ওই গাড়ির খবর পাওয়া মাত্রই শুরু হয়েছে তৎপরতা। গত এক বছরে দু’টি জঙ্গি হামলার শিকার হয়েছে পঞ্জাব। প্রথমে গুরুদাসপুর থানা। তার পর পঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটি। দু’বারই গাড়ি চড়ে এসে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ফলে নিরাপত্তা বেড়েছে প্রতিটি সড়কে। চলছে গাড়ি তল্লাশি। ধর্মীয় স্থান, সরকারি দফতর, সামরিক ঘাঁটি, রেল স্টেশনে বেড়েছে নিরাপত্তা। সতর্ক করা হয়েছে দিল্লি, গোয়া, মুম্বইকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy